গৃহযুদ্ধ তুঙ্গে। বিওএ নির্বাচনে সম্মুখসমরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই ভাই। বিস্তারিত পড়ুন...

নিজস্ব প্রতিনিধি : কলকাতা ময়দানে আবার একটা 'বড় ডার্বি'। একজন ইস্টবেঙ্গলের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য। অন্যজন আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের এক্সিকিউটিভ কমিটিতে আছেন। কিন্তু এর বাইরেও তাঁদের আরও বড় পরিচয় আছে। ওনারা হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই ভাই। অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাদের গৃহ বিবাদের আঁচ অবশ্য ময়দানে অনেক বছর আগেই লেগেছিল। তবে এবার যেন সেটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ের। কারণ, আগামী ৬ ডিসেম্বর পিয়ারলেস হোটেলে আসন্ন বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোশিয়েসনের নির্বাচনে দুই ভাই সভাপতি'র আসনের জন্য একেবারে সম্মুখসমরে।
ঠিক চার বছর আগে একজন সভাপতি পদে নির্বাচনে লড়েছিলেন। আরেকজন লড়েছিলেন সচিব পদে। তবে এবার একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়বেন। সেবার বিওএ'র নির্বাচনে দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের মুখ হয়েছিলেন অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্যানেল থেকে সচিব পদে দাঁড়িয়েছিলেন চন্দন রায়চৌধুরি। যাঁকে হারিয়ে বিওএ'র সচিব হয়েছিলেন স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবার সচিব পদে নয়। দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সভাপতি পদে লড়াইয়ে নামছেন স্বপন। নতুন ইলেকশন অবজারভার হিসেবে নিয়োগ হয়েছেন পল্টু রায় চৌধুরী।
দুই ভাইয়ের সম্মুখসমরের জন্য এই লড়াই আলাদা মাত্রা পেলেও, এই নির্বাচনের আরও কয়েকটি স্তর আছে। স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্যানেলে সচিব পদের প্রার্থী জহর দাস। অন্যদিকে অজিতবাবুর প্যানেল থেকে সচিব পদের জন্য লড়বেন বিশ্বরূপ দে। লোধা কমিটির কোপে সিএবি থেকে আগেই বিতাড়িত হয়েছিলেন। পরবর্তী সময় আইএফএ'তে ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে সেখানে হালে পানি না পেয়ে এখন বিওএ'তে গিয়ে অজিতের হাত ধরেছেন।
সহ সভাপতি পদে লড়াইয়ে নামছেন ৯জন প্রতিনিধি। যুগ্ম সচিব পদে লড়াইয়ে নামছেন ৭জন।
নির্বাচনের আগে দাদা অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙ্গুল তুলে সভাপতি পদপ্রার্থী স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই হিসেবে ময়দান করি না। সেই ১৯৭৮ সাল থেকে মাঠ করছি। আপনারা দুই ভাইয়ের লড়াই হিসেবে ব্যাপারটা দেখতেই পারেন, তবে আমি ওনার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কিছু নীতি নিয়ে লড়াই করছি। আর সেটা জারি থাকবে। অজিতবাবু ময়দানের কিছু প্রভাবশালী লোকজনকে নিয়ে এই নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেন। তবে সেটা কোনওমতেই সফল হতে দেব না।"
তবে স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনের আগে তাঁর দাদার বিরুদ্ধে গরমাগরম বক্তব্য করলেও, অজিতবাবু কিন্তু কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি নয়। তাঁর ক্যাম্প থেকে বলা হয়েছে যে নির্বাচন মিটে যাওয়ার পর সবকিছু খোলসা করে দেওয়া হবে। রবিবার পিয়ারলেস হোটেলে সকাল থেকে শুরু হবে নির্বাচনী প্রক্রিয়া। চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তারপরেই বোঝা যাবে যে বিওএ'র সভাপতির চেয়ারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোন ভাই বসেন।