প্রথমার্ধ দেখাল আশা, দ্বিতীয়ার্ধে এ কি দশা!

ইস্টবেঙ্গল - ২ (সেম্বোই হাওকিপ, নাওরেম মহেশ সিং)
ওড়িশা এফসি - ৪ (পেদ্রো মার্টিন - ২, জেরি, নন্ধাকুমার)
এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : ধরুন আপনি কোনও বিয়েবাড়িতে গেলেন, সেখানে আপনাকে যত্ন করে বসানো হল, অনুষ্ঠানবাড়ির সাজসজ্জা যথেষ্ট দামী। আপনার মনে হতেই পারে দারুণ ব্যবস্থাপনা। কিন্তু যখন খাওয়ার ডাক পড়ল, তখন দেখলেন মেন্যুতে ভাত আর পুঁইশাকের চচ্চড়ি। তখন কেমন অবস্থা হবে আপনার? কার্যত একই অবস্থা হয়েছে শুক্রবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপস্থিত থাকা হাজারো ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের।
প্রথমার্ধে অসাধারণ ফুটবল, কার্যত মরশুমের সেরা ফুটবলটি উপহার দিল স্টিফেন কনস্টানটাইনের ইস্টবেঙ্গল। আর এর সৌজন্যে দুই গোলে এগিয়েও যায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে যেন একেবারে খোলসে ঢুকে পড়ল লাল-হলুদ ব্রিগেড। আর এর সুযোগ নিয়েই চার গোল শোধ করে দিয়ে কলকাতা জয় করে নিল ওড়িশা এফসি।
২৩ মিনিটে জর্ডান ও' ডোহার্টির দুরন্ত পাস ধরেন ভিপি সুহের, আর তাঁর পাসে ফাঁকা নেট গোল করতে কোনও ভুল করেননি সেম্বোই হাওকিপ। এরপর ৩৫ মিনিটে আবারও সুহের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এবার এই কেরালাইট ফরোয়ার্ডের অ্যাসিস্টে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন নাওরেম মহেশ সিং। পুরো প্রথমার্ধ জুড়ে যেভাবে দাপুটে ফুটবল খেলে ওড়িশা এফসিকে দমিয়ে রেখেছিল ইস্টবেঙ্গল, সমর্থকরা আশা করেছিলেন, চলতি আইএসএলের প্রথম হোম জয়টা আসছে।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে একেবারে চারটি পরিবর্তন করে চমকে দেন ওড়িশার হেড কোচ জোসেফ গাম্বাউ। এবং এই চার পরিবর্তনের মধ্যে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড পেদ্রো মার্টিন যেন পুরো ম্যাচের ভাগ্য বদলে দেন। ৪৭ ও ৪৮ মিনিটে দিয়েগো মউরিসিওর অ্যাসিস্টে গোল করেন পেদ্রো। দুটি গোলই যেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হজম করল ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স।
এরপরে ইস্টবেঙ্গল যেন প্রথমার্ধের সেই চমৎকার খেলা ভুলেই যায়। আর এর সুযোগে ওড়িশা ক্রমাগত আক্রমণ করতেই থাকে। ৬৫ মিনিটে দেনেচন্দ্র মেতেইয়ের দুরন্ত ক্রসে হেডে গোল করেন জেরি।
৭৬ মিনিটে হিমাংশু জাংড়া, এলিয়ান্দ্রো ও সার্থক গোলুইকে নামিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেন স্টিফেন কনস্টানটাইন। কিন্তু সেই পরিবর্তন হওয়ার পরপরি বাঁদিক থেকে নন্ধাকুমার গোল করে ইস্টবেঙ্গলের লজ্জা আরও বাড়িয়ে দেন।
শেষের দিকে ইস্টবেঙ্গল গোল শোধ করার মরিয়া চেষ্টা করলেও কোনও লাভ করতে পারেনি। এভাবে ঘরের মাটিতে দুই গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে থেকেও চার গোল হজম করে হারা, সেটি নিঃসন্দেহে শিখিয়ে দিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল এফসি। আর রসগোল্লা ডার্বিতে স্টিফেন কনস্টানটাইনকে রসগোল্লা খাইয়ে দিলেন জোসেফ গাম্বাউ, তা বলাই যায়।