তারকাসমৃদ্ধ দল হলেও ফুটবলারদের কাছ থেকে দায়বদ্ধতা আশা করছেন জুয়ান ফেরান্ডো

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : ভারতীয় ফুটবলে বর্তমানে যদি সব থেকে শক্তিশালী ক্লাবগুলির কথা বলা হয়, তাহলে শুরুর দিকে আসবে এটিকে মোহনবাগানের নাম। একেই দেশের সেরা ভারতীয় খেলোয়াড়দের ভিড়, অন্যদিকে নামী সমস্ত বিদেশীরাও রয়েছেন সবুজ-মেরুণ ব্রিগেডে।
তবে এই বছর দল কিছুটা ভেঙেছে, চলে গিয়েছেন রয় কৃষ্ণা-ডেভিড উইলিয়ামস-প্রবীর দাসরা। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে দল তৈরিতে মন দিয়েছে এটিকে মোহনবাগান। দলে আনা হয়েছে দুর্দান্ত কিছু তারকা দেশী ও বিদেশী খেলোয়াড়দের। এবং নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে আশাবাদী হেড কোচ জুয়ান ফেরান্ডো।
এটিকে মোহনবাগানের সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া অনলাইন সাক্ষাৎকারে নতুন খেলোয়াড়দের নিয়ে ফেরান্ডো বলেছেন, "আমাদের দলে নতুন যারা সই করেছে, তাদের নাম সবাই জানেন। আশিস, আশিক, হামতে, ব্রেন্ডান, পোগবা— এরা দলে যোগ দেওয়ায় আমি খুশি। এরা প্রত্যেকেই ভাল খেলোয়াড়। আশা করি, ওরা আমাদের স্টাইলের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে। যারা ছেড়ে চলে গিয়েছে, তাদের উপযুক্ত বিকল্প তৈরি করে নিতে হবে। তবে যারা এই ক্লাবকে সফল হতে সাহায্য করেছে, তাদের অবদান ভুললে চলবে না। এখনও দল গঠনের কাজ সম্পুর্ণ হয়নি। আরও কয়েকটা জায়গা খালি রয়েছে। তবে আমি খুশি, যারা দলে রয়েছে, তাদের যথেষ্ট লড়াকু মানসিকতা রয়েছে।"
এদিকে জুয়ান ফেরান্ডো এই বছর একাধিক টুর্নামেন্ট থাকায় আরও শক্তিশালী দল গড়ার দিকেই মন দিতে চান। তিনি বলেছেন, "এই মরশুম সম্পুর্ণ অন্য রকমের। সেপ্টেম্বরে এএফসি কাপে আমাদের সামনে একটা বড় সুযোগ আসছে। ডুরান্ড কাপ রয়েছে, আইএসএল, সুপার কাপও রয়েছে। সব মিলিয়ে এ বার আরও বেশি সুযোগ থাকছে আমাদের সামনে। এখন আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, অনুশীলন।"
এদিকে ফেরান্ডো মনে করেন, প্রচুর সময় দিয়ে নয়, অল্প সময়ে কার্যকরী অনুশীলন করা জরুরি। এবং আসন্ন মরশুমে দলের প্রতি আস্থা রেখেছেন স্প্যানিশ কোচ। তিনি বলেছেন, "আমাদের দলে ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে। কিন্তু তা প্রমাণ করতে হবে। এএফসি কাপের সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ খুবই কঠিন হবে। কারণ, এটা সেমিফাইনাল, গ্রুপ পর্বের আগে প্লে অফ নয়। আইএসএলেও জামশেদপুর, হায়দরাবাদ এফসি-র মতো শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলেছি আমরা। তবে এই চ্যালেঞ্জের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। রোজ ৬-৭ ঘণ্টা অনুশীলন করলেই যে ভাল প্রস্তুতি হয়, তা নয়। দু’ঘণ্টার কার্যকরী অনুশীলনেও ভাল প্রস্তুতি সারা যায়। যদিও ব্যাপারটা সহজ নয়। খেলোয়াড়দের সেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে দলের জন্য। দল হিসেবে খেলতে হবে প্রত্যেককে। এখানে ব্যক্তিগত প্রতিভার চেয়ে দল হিসেবে খেলাটা অনেক বেশি জরুরি।"
শেষে সমর্থকদের পাশে থাকার আর্জি জানিয়েছেন মেরিনার্সদের হেডস্যার। তিনি বলেছেন, "ফুটবল শুধু টেকনিক, কৌশল, দক্ষতা, প্রতিভা নিয়ে নয়। এর মধ্যে আবেগেরও গুরুত্ব আছে যথেষ্ট। কলকাতার সমর্থকেরা যে ভাবে ফুটবলকে ভালবাসে, ফুটবল নিয়ে তাদের আবেগ যে রকম, তা অসাধারণ। মনে আছে, বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধে প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর যখন ফের তা শুরু হয়, তখনও সমর্থকেরা সবাই গ্যালারিতে ছিলেন! স্পেনে এ রকম হলে সবাই বাড়ি ফিরে যেত। কিন্তু কলকাতার ফুটবল-আবেগ এ রকমই। আশা করি, আসন্ন মরশুমেও সমর্থকেরা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। তাঁরা আমাদের পাশে থাকলে আমরাও সফল হব।"