লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর ভারতীয় দলকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন সুনীল গাভাস্কার: "রবীন্দ্র জাদেজা আরও কিছু করতে পারতেন"

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ লর্ডসে তৃতীয় টেস্টের পঞ্চম দিনের প্রথম সেশনে ভারত দ্রুত চারটি উইকেট হারানোর পর থেকেই শুভমন গিলদের বড় ব্যবধানে হারার সম্ভাবনা প্রবল হয়ে ওঠে। দিনের শুরুতে ভারতের জয় পেতে দরকার ছিল মাত্র ১৩৫ রান, হাতে ছিল ৬ উইকেট। তবে প্রথম সেশনেই সেই লক্ষ্য পাহাড়প্রমাণ হয়ে ওঠে।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে একক লড়াইয়ে এগিয়ে আসেন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁর সঙ্গে টেলএন্ডার ব্যাটাররা সর্বোচ্চ চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ১৭০ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। ৭৪.৫ ওভার টিকেছিল ভারতের ইনিংস। ইংল্যান্ডের হয়ে বেন স্টোকস ও জোফরা আর্চার তিনটি করে উইকেট নেন, স্টোকস ২৪ ওভার, আর্চার ১৬ ওভার বল করেন। ব্রাইডন কার্স নেন দুটি উইকেট।
ভারতের ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য ব্যাটারদের পার্টনারশিপ গড়তে না পারাকেই দায়ী করলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কার। সনি স্পোর্টসের অনুষ্ঠানে গাভাস্কার বলেন,"৬০-৭০ রানের পার্টনারশিপ হলেও পার্থক্য তৈরি হত। কিন্তু ভারত সেটা পায়নি। বলা যেতে পারে, জাদেজা আরও কিছু ঝুঁকি নিতে পারতেন, বিশেষ করে জো রুট আর শোয়েব বশীরের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে হয়ত তাঁকে মাটিতে বল রাখার চেষ্টা করা উচিত ছিল, কিন্তু তাঁকে পুরো নম্বর দিতে হবে (তার লড়াইয়ের জন্য)।"
এদিন ম্যাচের রং বদলে যায় যখন প্রথম ঘণ্টাতেই স্টোকস আর আর্চার মিলে ঋষভ পন্থ, কেএল রাহুল-সহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন। এরপর লাঞ্চের ঠিক আগেই ক্রিস ওকস তুলে নেন নীতিশ কুমার রেড্ডির উইকেট।
আকাশ মেঘলা থাকায় ঋষভ পন্থ শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলেন। আর্চারের অফ স্টাম্প লক্ষ্য করা ডেলিভারি একহাতে মিড অন দিয়ে চার হাঁকান তিনি। তবে দ্রুতই আর্চার ফেরত দেন জবাব। এক ডেলিভারিতে বল সোজা হয়ে পন্থের ব্যাটের বাইরের প্রান্ত এড়িয়ে অফ স্টাম্প উড়িয়ে দেয়। মাত্র ৯ রানেই ফিরতে হয় পন্থকে।
তারপর স্টোকস ফের ম্যাজিক দেখান। একটি ডেলিভারি বিপজ্জনকভাবে ভেতরে ঢুকে এসে রাহুলের প্যাডে লাগে। আম্পায়ার প্রথমে নট আউট দিলেও, স্টোকসের রিভিউয়ে দেখা যায় বল সোজা স্টাম্পে লাগছিল। রাহুল আউট হওয়ায় ইংল্যান্ড শিবিরে উল্লাস ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর আর্চার আবার নজর কাড়েন দুরন্ত ফিল্ডিংয়ে। নিজের ফলো-থ্রুতে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে একহাতে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন, যার শিকার হন ওয়াশিংটন সুন্দর। সুন্দর চার বল খেলে শূন্য রানে ফিরে যান।
৮২/৭ থেকে জাদেজা এবং রেড্ডি ধৈর্য ধরে খেলতে থাকেন। বল নরম হয়ে যাওয়ায় দুজনেই কিছুটা স্বস্তি পান। জাদেজা একবার ব্রাইডন কার্সের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়েন দুই রান নেওয়ার সময়।
অবশেষে রেড্ডি ৮০ বলে ভারতের প্রথম বাউন্ডারি মারেন, কভার দিয়ে দুর্দান্ত ড্রাইভ। যদিও এরপরই এক শর্ট বলে ওকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রেড্ডি। উইকেটকিপার জেমি স্মিথ সহজ ক্যাচ ধরেন। লাঞ্চের ঠিক আগে এই উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জয়ের জন্য মাত্র দুটি উইকেটের লক্ষ্যে পৌঁছে দেন ওকস।
শেষ পর্যন্ত ভারত লড়লেও জয়ের দরজা খুলে যায়নি। তাই ম্যাচ শেষে প্রশ্ন উঠছে—আরও কি করা যেত? গাভাস্কারের মতে, জাদেজা আরেকটু হিসেব করে খেললে হয়তো ছবিটা অন্যরকম হত।