রশিদের ম্যাজিক হল ট্র্যাজিক, রিঙ্কুর জাদুতেই ম্যাচ জয় কলকাতার

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : ওস্তাদের মার শেষ রাতে, এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু নিজের শেষ ওভারে রশিদ খানের মার, আর ম্যাচের শেষ ওভারে রিঙ্কু সিংয়ের মার - মনে থাকবে আপামর ক্রিকেটপ্রেমীদের। নিজের শেষ ওভারে এমন ওলটপালট করে দিলেন রশিদ, আর শেষ ওভারে যশ দয়ালের শেষ পাঁচ বলে পাঁচটি ছক্কা মেরে ম্যাচ জেতান রিঙ্কু।
হার্দিক পান্ডিয়ার অনুপস্থিতিতে গুজরাট টাইটান্সের নেতৃত্বের ভার পড়ে রশিদের উপর। আর হ্যাটট্রিক করে প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্সকে এক ওভারেই উড়িয়ে দেন রশিদ, কিন্তু শেষ ওভারে রিঙ্কু সিংয়ের অনবদ্য ব্যাটিং ম্যাচ জিতিয়ে দেয় কলকাতাকে।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ঋদ্ধিমান সাহাকে ১৭ রানে আউট করেন সুনীল নারাইন। এরপর গুজরাটের হাল ধরেন শুভমন গিল (৩৯) ও সাই সুদর্শন (৫৩)। দুজনে মিলে ৬৭ রানের জুটি গড়েন।
কিন্তু তারপর নারাইন ও সুয়াশ শর্মা কলকাতাকে ফিরিয়ে আনেন। দ্রুত আউট হন গিল ও অভিনব মনোহর (১৪)। তবে তারপর শুরু হয় বিজয় শঙ্কর নামক এক তান্ডবের।
সুদর্শনের সাথে জুটি বেঁধে একের পর এক নাইট বোলারদের উড়িয়ে দিচ্ছিলেন বিজয়। চারটি চার পাঁচটি ছক্কার সাহায্যে মাত্র ২৪ বলে ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ইনিংস ধরার কাজ যখন সুদর্শন সারছিলেন, তখন বিজয় আক্রমণের রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন। শেষ অবধি গুজরাট টাইটান্স ২০ ওভারে ২০৪/৪ তোলে।
দুই স্পিনার সুনীল নারাইন (৩-৩৩) ও সুয়াশ শর্মা (১-৩৫) ছাড়া কেউই সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি। উমেশ যাদব প্রাথমিক স্পেলে দুর্দান্ত বোলিং করেন। কিন্তু প্রচুর রান দিয়ে বসেন লকি ফার্গুসন (চার ওভারে ৪০), শার্দুল ঠাকুর (তিন ওভারে ৪০) ও বরুণ চক্রবর্তী (দুই ওভারে ২৭)।
২০৫ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে প্রথমেই দুই ওপেনার রহমনুল্লাহ গুরবাজ (১৫) ও নারায়ণ জগদীশন (৬) বিদায় নেন। এরপর ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নামা ভেঙ্কটেশ আইয়ার আক্রমণের রাস্তা বেছে নেন। অধিনায়ক নীতিশ রানার সাথে শতরানের পার্টনারশিপ গড়েন ভেঙ্কটেশ।
যেখানে রানা খেলাটি ধরছিলেন, অপর প্রান্ত থেকে ভেঙ্কটেশ প্রহার করছিলেন। কিন্তু তারপর আলজারি জোসেফ এই দুজনকে আউট করেন। এক দিকে ২৯ বলে ৪৫ করেন রানা, অন্যদিকে আটটি চার ও পাঁচটি ছয়ের সাহায্যে ৪০ বলে ৮৩ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলেন আইয়ার।
যখন মনে হচ্ছিল, কলকাতা হয়ত ম্যাচ জেতার জায়গাতে এসে গিয়েছে, এমন সময়ে নিজের ম্যাজিক দেখিয়ে দেন রশিদ খান। বিশ্বের সেরা টি২০ স্পিনার ১৭তম ওভারে আসেন নিজের অন্তিম ওভার সারতে। আর শেষ ওভারেই হ্যাটট্রিক করেন গুজরাট অধিনায়ক। আউট করেন আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন ও শার্দুল ঠাকুরের মত তিন বিপজ্জনক ব্যাটারকে।
কিন্তু এই হ্যাটট্রিকের ধাক্কা সামলে উঠে নায়কের আসন থেকে রশিদকে সরিয়ে দিলেন রিঙ্কু। শেষ ওভারে ২৯ রান বাকি ছিল, হাতে মাত্র তিন উইকেট। যশ দয়ালের প্রথম বলে এক রান নিয়ে রিঙ্কুকে স্ট্রাইক দেন উমেশ যাদব। এরপর পরপর পাঁচ বলে পাঁচটি ছয় মেরে কলকাতাকে ম্যাচ জেতালেন রিঙ্কু সিং। শেষ অবধি মাত্র ২১ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন রিঙ্কু।