বাবার জুতোর দোকান, ফাস্ট বোলারে ভয় পেতেন, চিনে নিন আইপিএলের নয়া কোটিপতি অভিনব সদারঙ্গনী

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : আইপিএল যতই কোটিপতি লিগ বা জাঁকজমকপূর্ণ হোক না কেন, এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট তুলে ধরে এমন সমস্ত জীবন যুদ্ধের কাহিনী, যা মানুষকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। প্রতি বছর আইপিএলে এমন কিছু প্রতিভা উঠে আসে, যারা ভবিষ্যতের সম্পদ হতে পারে।
আর এই বছরও তার অন্যথা হয়নি। আইপিএল ২০২২ নিলামের প্রথম দিনে কার্যত একটি নাম সকলের নজরে এসেছে। কর্নাটকের ডান হাতি ব্যাটার অভিনব মনোহর সদারঙ্গনী। একেবারে অনামী এই ক্রিকেটারের বেস প্রাইস ছিল মাত্র ২০ লক্ষ টাকা। কিন্তু সেই দামের ১৩ গুণ বেশি দাম দিয়ে ২.৬ কোটি টাকায় অভিনবকে তুলে নিল নয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটান্স।
প্রথমে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও দিল্লি ক্যাপিটালস বিডিং শুরু করেছিল। এরপর এক কোটি টাকার দাম উঠে আসতে গুজরাট টাইটান্স আসে লড়াইয়ে। শেষে দিল্লি সরে দাঁড়ালে কলকাতাকে হারিয়ে অভিনবকে তুলে নেয় গুজরাট।
তবে অভিনবের জীবনকাহিনীটি অসাধারণ তা বলাই যায়। ছোটবেলার কোচ ইরফান সাইত এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "ও কখনই ক্রিকেটের মধ্যে ছিল না। ও যখন আমার অ্যাকাডেমিতে আসে, বোলারদের মুখোমুখি হতে ও ভয় পেত। ওর বাবা (মনোহর সদারঙ্গনী) আর আমি খুব ভালো বন্ধু। ওদের একটি জুতোর দোকান ছিল। ওর বাবা আমায় বলেছিল আমার অ্যাকাডেমিতে ওকে ভর্তি নিতে। আমি তখন ওকে নিতে চাইছিলাম না কারণ ও ক্রিকেটে তেমন আগ্রহী ছিল না। আমি বলেছিলাম আমি চেষ্টা করছি।"
২০০৬ সালে হায়দ্রাবাদ অনুর্ধ্ব ১৪ রাজ্য দলের বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমির হয়ে খেলেছিলেন অভিনব। সেই ম্যাচে কপালে বলের আঘাত পেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। কিন্তু তার পরের দিন মাঠে ফিরে এসে দুর্দান্ত শতরান করেন অভিনব। কোচ ইরফানের মতে, সেটিই ছিল তার ক্রিকেটীয় কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট।
তবে অভিনবের আসল টার্নিং পয়েন্ট আসে ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর। কর্নাটকের সিনিয়র দলের হয়ে সৈয়দ মুস্তাক আলি টি২০তে অভিষেক করেন তিনি। আর প্রথম ম্যাচে সৌরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ৪৯ বলে ৭০ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন অভিনব। যুব দলে এর আগে দারুণ পারফর্ম করলেও মনীশ পান্ডে-মায়াঙ্ক আগরওয়াল-করুণ নায়ার সমৃদ্ধ কর্নাটক দলে সুযোগ পাননি অভিনব।
কিন্তু গত বছর সুযোগ পেয়েই কাজে লাগান তিনি। আর তার সুফল এসেছে ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ, আইপিএলের সমৃদ্ধ তালিকায় জুড়লেন নিজের নাম।