বার্সিলোনার দায়িত্ব নিয়েই কড়া অনুশাসনে এই ১০টি নিয়ম কার্যকর করলেন নয়া কোচ জাভি

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : রোনাল্ড কোয়েম্যানের বিদায়ের পর এফসি বার্সিলোনার নতুন হেড কোচ হিসেবে যোগ দিলেন কিংবদন্তি মিডফিল্ডার জাভি হার্নান্ডেজ। কিন্তু বর্তমানে ধুঁকতে থাকা এফসি বার্সিলোনার ফর্ম ফিরিয়ে আনতে হলে শুধু খেলায় পরিবর্তন আনলে হবে না, অনুশাসনও কড়া হতে হবে।
কাতারি ক্লাব আল সাদ থেকে ক্যাম্প ন্যুতে নিজের ঘরে ফিরে এসে জাভি চাইছেন, সেই সোনালী যুগের এফসি বার্সিলোনাকে ফিরিয়ে আনতে। আর সেই কারণে খেলোয়াড়দের কড়া অনুশাসনে রাখতে চাইছেন কিংবদন্তি মিডফিল্ডার।
স্প্যানিশ পত্রিকা এএস এর রিপোর্ট অনুযায়ী, জাভি ১০টি কড়া নিয়ম ধার্য করেছেন যা ক্লাবের প্রতিটি সদস্যকে মেনে চলতে হবে।
১. অনুশীলনের ৯০ মিনিট আগে মাঠে প্রবেশ করতে হবে। সাধারণত বার্সিলোনার অনুশীলন পর্ব সকাল ১১টায় শুরু হয়। আর সেই কারণে প্রতিটি খেলোয়াড়কে সাড়ে নয়টায় চলে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। যাতে খেলোয়াড়রা দ্রুত প্রাতরাশ সেরে কোচেদের সাথে কথা বলতে পারে।
২. অনুশীলন শুরুর দুই ঘন্টা আগে সাপোর্ট স্টাফদের আসতে হবে। খেলোয়াড়দের আসার আগে অনুশীলনের যাবতীয় প্রস্তুতি সারতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাভি।
৩. ক্লাবের অনুশীলন মাঠেই যেন খেলোয়াড়রা আহার করে। জাভি চাইছেন যাতে মূল দলের সকল খেলোয়াড়রা ক্লাবের সিউটাট এস্পোর্টিভা ডাইনিং রুমে আহার করে। এছাড়া খেলোয়াড়রা নির্বাচন করতে পারবেন না তারা কি খাবেন, এর দায়িত্বে থাকবেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা।
৪. খারাপ ব্যবহারের জন্য খেলোয়াড়দের জরিমানা করার ধারা আবারও ফেরালেন জাভি। ২০১৭ সালে লুই এনরিকের প্রস্থানের পর জরিমানার বিষয়টি উঠে যায়। মূলত খেলোয়াড়দের পেশাদারিত্ব বাড়াতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০০৮ সালে ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ডের বদলে পেপ গুয়ারদিওলা কোচ হিসেবে আসার পর এই জরিমানার নিয়ম শুরু করেছে, যার স্বাক্ষী ছিলেন জাভি।
৫. একই ভুল বারবার করলে জরিমানা দ্বিগুণ হবে। ধরা যাক কোনও খেলোয়াড় দেরি করে অনুশীলনে এলেন, তাকে প্রথমে ১০০ ইউরো জরিমানা দিতে হবে। এরপর একই ভুল করলে তা দ্বিগুণ হয়ে ২০০, তারপরে ৪০০, তারপরে ৮০০ - এমনই চলতে থাকবে।
৬. কোনও খেলা থাকলে, এফসি বার্সিলোনার খেলোয়াড়দের ৪৮ ঘন্টা আগে বাড়ি ফিরতে হবে। এর ফলে প্রতিটি খেলোয়াড়ই তরতাজা হয়ে ম্যাচে নামতে পারবে।
৭. অনুশীলনে নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন জাভি। অনুশীলনে কেউ যদি ঢিলেমি করে, তবে তাদের বেঞ্চে বসানো হবে, নইলে দল থেকে বের করতে দেওয়া হবে। ম্যাচের মত অনুশীলনেও খেলোয়াড়দের থেকে একই উদ্যম চাইছেন জাভি।
৮. মাঠের বাইরে খেলোয়াড়দের কাজগুলিকে নজরে রাখা হবে। মরশুমের মাঝখানে অনুমতি ছাড়া খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত ভ্রমণে সায় দেবেন না জাভি। যদি মাঠের বাইরের কাজে খেলোয়াড়ের পারফর্মেন্সে প্রভাব পড়ে, তাহলে তা ক্লাবের কোচিং স্টাফ দ্বারা পর্যালোচনা হবে।
৯. ঝুঁকিপূর্ণ কোনও কাজ করতে পারবেন না খেলোয়াড়রা। যেমন বাইক চড়া বা সমুদ্রে সারফিং করা, ইত্যাদি। এই নিয়মগুলি ভাঙলে চুক্তিভঙ্গের মত বড় শাস্তি পেতে হতে পারে খেলোয়াড়দের।
১০. প্রতিটি খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের চরিত্র ভালো করতে হবে। সমর্থকদের সাথে ভদ্র ও সভ্য ব্যবহার করতে হবে দলের প্রতিটি সদস্যদের।
ফলে এই কড়া নিয়মবিধির মধ্যে চলতে হবে এফসি বার্সিলোনা টিমকে। এখন এটিই দেখার, পুরোনো সেই গৌরব আবারও ফিরে আসে কিনা।