ভালোবাসা একেই কয়! মোহনবাগানে রাঙানো ফুলের দোকানে জানুন ভোলা ময়রার আবেগের কথা

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : মোহনবাগানকে নিয়ে ভালোবাসা সকল সমর্থকদের মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু এমন কিছু পাগল ও আত্মহারা সমর্থকও রয়েছেন, যারা নিজেদের জীবন-উপার্জন উতসর্গ করে দেন মোহনবাগানের উদ্দেশ্যে। এরকমই এক পাগল ভক্তের দেখা মিলল মানিকতলায়।
কলকাতার মানিকতলার সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাঙ্কের ঠিক পাশে দেখা মিলবে এক ফুলের দোকানের। ভোলা ময়রা সেই ফুলের দোকান তৈরি করেন। কিন্তু কি এমন বিশেষত্ত্ব রয়েছে এই দোকানে? আসলে, এই দোকান সাজানো হয়েছে মোহনবাগানের লোগো ও সবুজ-মেরুণ রঙে। আর এমনই পাগলামোর সাক্ষাৎ পেতে এক্সট্রা টাইম বাংলা হাজির হল ভোলা ময়রার ফুলের দোকানে।
নিজের মোহনবাগান প্রেম নিয়ে ভোলা ময়রা বলেন, "আমার যখন আট মাস বয়স, তখন থেকেই মোহনবাগানের খেলা দেখতে যেতাম। এরপর দাদার হাত ধরে বহুবার গিয়েছি, খেলোয়াড়দের চিনতাম না, শুধু সবুজ-মেরুণ রঙটাই আমায় টানত। দাদা আমায় বলত, এটা বাবলু ভট্টাচার্য, এটা বিদেশ, এটা মানস - আমি সেই সময় থেকে মোহনবাগানের খেলা দেখতে যাচ্ছি। সেই যে শুরু করেছি, এখনও পর্যন্ত মোহনবাগানের খেলা দেখতে যাচ্ছি। যদিও করোনার জন্য গত তিন বছর মাঠে যেতে পারিনি।"
"যেখানে মোহনবাগানের খেলা হত, সেখানেই গিয়েছি। লুধিয়ানা গিয়েছি, কেরালা গিয়েছি, ফেড কাপের সময়ে পাঞ্জাবে গিয়েছি। যেখানে খেলা থাকে সেখানেই গিয়েছি। আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মোহনবাগান, আমার রক্তে মোহনবাগান। যেখানেই যাব, পালতোলা নৌকোকে সাথে করে নিয়েই যাব।"
তবে মোহনবাগানের সমর্থক হয়েও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে সম্মানের জায়গাতেই রাখেন ভোলা ময়রা। তিনি বলেছেন, "আমি কোনওদিন ইস্টবেঙ্গলকে সেই হিসেবে দেখিনি। ভারতের, বাংলার একটি বড় ক্লাব ইস্টবেঙ্গল। ১০০ বছর ধরে রয়েছে, এটা ইয়ার্কি নয়! ১০০ বছর ধরে একটা ক্লাব রয়েছে, তাদেরও একটা সম্মান রয়েছে।"
সমর্থকরা বর্তমানে এটিকে ও মোহনবাগানের এই সংযুক্তিকরণ নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। তবে নিজেকে সেই ভিড়ে রাখছেন না ভোলা ময়রা। বরং তিনি খুশি এই সংযুক্তিকরণে। এই নিয়ে ভোলা বলেছেন, "আমি খুব খুশি এটিকের সাথে মার্জ হওয়ার জন্য। আমি সঞ্জীব গোয়েঙ্কাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, তিনি আমাদের মায়ের সম্মানটা উপরে নিয়ে যাচ্ছেন। কোনওরকমভাবে কার্পণ্য করছেন না, রয় কৃষ্ণা থেকে শুরু করে যাকে দরকার, তাকেই আনছেন তিনি।"
"টুটু বসু যোগ্য লোকের হাতে ক্লাবটা তুলে দিয়েছেন। টাকা ছাড়া কোনও টিম হয় না। আমি এই এটিকে নামটিকে নিয়েছি 'অল টাইম কিং' হিসেবে। আমি এই সংযুক্তিকরণকে সমর্থন করি।"
দোকানের মত, ভোলা ময়রার বাড়িও সবুজ-মেরুণে রাঙা। স্ত্রী কণিকা ময়রা, দুই ছেলে শুভদীপ ও সুদীপ ময়রার সাথে থাকেন ভোলা। বাবার মতই দুই ছেলেও সবুজ-মেরুণ ভক্ত। বাড়িতে অমর একাদশের ছবি লাগানো, লোগোর কাটআউট সাজানো, এমনকি ঠাকুরঘরও মোহনবাগানের আদলে সাজানো - সব মিলিয়ে বোঝা যায়, ঠিক কতটা মোহনবাগান প্রেমী ভোলা ময়রা।