ভিশন ২০৪৭ : সামনে এল আগামী ২৫ বছরে ভারতীয় ফুটবলের রোডম্যাপ

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : অবশেষে সামনে এল সেই বহু প্রতীক্ষিত ভারতীয় ফুটবলের রোডম্যাপ। শনিবার সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের তরফ থেকে আগামী ২৫ বছরের রোডম্যাপ প্রকাশ করা হয়। ২০৪৭ সাল পর্যন্ত ভারতীয় ফুটবলকে কোন দিশায় নিয়ে যাওয়া যায়, সেই নিয়ে একটি রোডম্যাপ সামনে আসে।
ভিশন ২০৪৭ সামনে আনেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে ও সচিব শাজি প্রভাকরণ। সাংবাদিকদের সামনে এসে কল্যাণ চৌবে জানান, "গত ১২৫ দিনে আমরা একাধিক জায়গায় গিয়েছি, যেখানে ভারতীয় ফুটবলের পূর্বতন কর্তারা যাননি। আমরা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলি সহ ঝাড়খন্ড ও গুজরাটে গিয়েছি।"
এদিকে ভিশন ২০৪৭ এর কারণ নিয়ে শাজি প্রভাকরণ বলেছেন, "কারণ এটি ভারতের স্বাধীনতার ১০০তম বর্ষ এবং আমরা ফুটবলকে শীর্ষে নিয়ে যেতে চাই।"
মূলত দুটি লক্ষ্য নিয়ে ভারতীয় ফুটবলের এই লক্ষ্য তৈরি হয়েছে। প্রথমটি হল স্বল্পমেয়াদী, যা ২০২৬ অবধি রয়েছে। এবং দীর্ঘমেয়াদী, যা ২০৪৭ অবধি চলবে।
এই রোডম্যাপে মোট ১১টি মূল বিষয় নিয়ে কাজ করা হবে। এই ১১টি বিষয় হল,
আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে পুরুষ ও মহিলা ফুটবলে অন্তত একজন আইকনিক ফুটবলার তৈরি করতে হবে। এই ফুটবলারকে আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি থাকতে হবে।
২০২৬ সালের মধ্যে ভারতের পুরুষ ও মহিলা দলকে এশিয়ার শীর্ষ ১০ এ থাকতে হবে। ২০৩৬ সালের মধ্যে ভারতীয় দলকে সেরা সাতে থাকতে হবে। এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে এশিয়া মহাদেশের শীর্ষ চারে থাকতে হবে। এবং অনুর্ধ্ব ১৭ পুরুষ ও মহিলা ফিফা বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতে হবে ভারতীয় দলকে।
এদিকে লিগের পরিকাঠামো নিয়ে রোডম্যাপে বলা হয়েছে, মোট পাঁচটি স্তরে ভারতের লিগ চলবে। ২০২৬ সালের মধ্যে ১৪টি দলকে নিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় ডিভিশনের লিগ আয়োজিত হবে। এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে প্রথম ডিভিশনে ২০টি দল এবং দ্বিতীয় ডিভিশনে ১৮টি দলের লিগ খেলা হবে।
এছাড়া জাতীয় ফুটবল গেমস, বিশ্ববিদ্যালয় লিগ, প্রাতিষ্ঠানিক লিগ যেমন আয়োজিত করার পরিকল্পনা রয়েছে এই রোডম্যাপে, পাশাপাশি রোভার্স কাপ, আইএফএ শিল্ডের মত ঐতিহ্যশালী টুর্নামেন্টগুলিও বড় করে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়া যে বিষয়গুলি উল্লেখযোগ্য, সেগুলি হল -
মহিলা ফুটবল নিয়ে আলাদা একটি বিভাগ তৈরি হবে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনে। মহিলা ফুটবলারদের জন্য নির্দিষ্ট বেতনমূল্য রাখা হবে। পাশাপাশি মহিলা ফুটবল কর্মকর্তাদের জন্য ইনসেন্টিভের ব্যবস্থা করা হবে। এবং মহিলা ক্লাব পরিকাঠামোয় উন্নতি আসবে।
আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে কলকাতার এআইএফএফ সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের কাজ শেষ হয় যাবে। এছাড়া ২০২৬ সালের মধ্যে ইউরোপিয়ান ফুটবলের মত ভারতে মেগা ফুটবল পার্ক তৈরি করা হবে, যা ২০২৭ সালে সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি দেশে ১৩টি ফিফা পর্যায়ের স্টেডিয়াম ও ১২টি স্মার্ট স্টেডিয়াম তৈরি করা হবে।
আগামী ২০২৬ সালের মধ্যে প্রতিটি শীর্ষস্থানীয় ক্লাবগুলির যুব দল ও আবাসিক শিবির থাকতে হবে। এদিকে ২০৪৭ সালের মধ্যে ২০ হাজার ক্লাব তৈরির পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ৭০০টি উন্নয়নমূলক ক্লাব তৈরি করতে হবে। এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে মহিলাদের আলাদা ক্লাব রাখা হবে।
২০২৬ সালের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট গ্রাসরুট পরিকল্পনা চালু করতে হবে। ২০২৬ এর মধ্যে ১০ লক্ষ নথিভুক্ত খেলোয়াড় সই করাতে হবে। পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকদের ফুটবল বিষয়ে জ্ঞান অনেকটা বাড়াতে হবে।
২০২৬ সালের মধ্যে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের রাজস্ব ৫০০ শতাংশ বাড়াতে হবে। এবং ২০২৬ সাল অবধি তিনটি টেলিভিশন সম্পত্তি আনার পরিকল্পনা রয়েছে।