এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপের টিকিটের দৌড়ে ‘ফটো ফিনিশ’-এর জন্য প্রস্তুত ব্লু টাইগ্রেসরা

Photo- AIFF
এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপ ২০২৬-এর গ্রুপ বি-তে যোগ্যতা অর্জনের লড়াই এখন একেবারে হাড্ডাহাড্ডি। তিনটি ম্যাচ শেষে ভারত ও থাইল্যান্ড—দুই দলই সমান পয়েন্ট, সমান গোল পার্থক্য এবং সমান গোল করে রয়েছে। ফলে ৫ জুলাই মুখোমুখি লড়াইয়ে যারা জিতবে, সেই যাবে অস্ট্রেলিয়ায় মূলপর্বে।
কিন্তু ম্যাচ যদি ড্র হয়? সেক্ষেত্রে নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর ম্যাচ সরাসরি টাইব্রেকারে গড়াবে। সাধারণত গ্রুপ পর্যায়ে টাইব্রেকার দেখা যায় না, কিন্তু ভারত ও থাইল্যান্ডের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এতটাই হাড্ডাহাড্ডি যে জয়ী নির্ধারণে পেনাল্টি ছাড়া উপায় থাকবে না।
বুধবার ইরাককে ৫-০ গোলে হারিয়ে বড় জয় পায় ব্লু টাইগ্রেসরা। এরপর থাইল্যান্ডকে শীর্ষে উঠতে হলে মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে ১২ গোল করতে হতো। শেষ পর্যন্ত তারা ১১-০ গোলে জয় পেলেও, ম্যাচের শেষ কিকে ১১তম গোলটি করেও তারা ভারতের সমানেই অবস্থান করে।
ভারতের কোচ ক্রিসপিন ছেত্রী ইরাক ম্যাচের আগে জানিয়েছিলেন, গোল সংখ্যা নিয়ে না ভেবে শুধুই জয় অর্জন করাই ছিল দলের মূল লক্ষ্য। তবে ম্যাচের পর তিনি বলেন, দল আরও বড় ব্যবধানে জিততে পারত, এবং তা হলে শেষ ম্যাচের আগে বাড়তি সুবিধা পেত।
“মেয়েরা দারুণ খেলেছে এবং টানা জয় নিয়ে শেষ ম্যাচে নামা আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়েছে। তবে লিন্ডার দুটি গোল বাতিল হওয়ায় আমরা হতাশ। দুটোই পরিষ্কার অনসাইড ছিল, কোনো ফাউল ছিল না। ওর মতো তরুণীর জন্য ওই দুটি গোল বড় প্রেরণা হতে পারত। এখন আমরা শেষ ম্যাচের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছি,” বলেন ছেত্রী।
ভারতের জার্সিতে প্রথম গোল করে আলোচনায় উঠে এসেছেন ফাঞ্জৌবম নির্মলা দেবী। দুর্দান্তভাবে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটে বল জড়িয়ে দেন জালে। “দেশের হয়ে প্রথম গোল করতে পেরে আমি ভীষণ খুশি। এটা আমার জীবনের এক বিশেষ মুহূর্ত। আজ আমরা ভালো খেলেছি, আর আমাদের কাঙ্ক্ষিত ফলও পেয়েছি। এখন থাইল্যান্ড ম্যাচের জন্য আমরা পুরো প্রস্তুতি নিচ্ছি, আরও ভালো খেলার লক্ষ্য নিয়ে,” বলেন ২২ বছর বয়সী এই ফুটবলার।
দলের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার সঙ্গীতা বাসফোর (৬৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ) বলেছেন, কোয়ালিফায়ারে তরুণ ফুটবলারদের পারফরম্যান্স দলকে আরও শক্তিশালী করেছে। “আমরা ধাপে ধাপে এগিয়েছি, আর তিনটি দারুণ ম্যাচ জিতেছি। দলের মধ্যে খুব ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। আমাদের দলে বেশ কিছু নতুন ও তরুণ মুখ রয়েছে, যারা দারুণভাবে মানিয়ে নিয়েছে। এখানে কেউই নিজের জায়গাকে নিশ্চিত ভাবেন না। সবাই দলকে সাহায্য করতেই এসেছি,” জানান ২৮ বছর বয়সী মিডফিল্ডার।
টাইমর লেস্টের বিরুদ্ধে ম্যাচে নাকের হাড় ভেঙে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যান সৌম্য গুগুলোথ। শেষ ম্যাচের আগে দলীয় ছবিতে তাঁর জার্সি ধরে দাঁড়ান ব্লু টাইগ্রেসরা। “আমরা সৌম্যার জন্য খেলতে চাই, জিততে চাই,” বলেন সঙ্গীতা। “ওর এশিয়ান কাপ খেলার প্রবল ইচ্ছা, আর সেটা পূরণ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। সৌম্য আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ও যেন এখনো একাদশেই খেলছে—এমন অনুভব হয়। আমরা জিততে চাই, মূলপর্বে যেতে চাই, আর এই সাফল্য ওকেই উৎসর্গ করতে চাই।”
দলে অভিজ্ঞতম সদস্য অনজু তামাং, যিনি চোট কাটিয়ে দলে ফিরে এসেছেন এবং শেষ দুটি ম্যাচে মাঠে নেমেছেন। ২৯ বছর বয়সী মিডফিল্ডার টাইমর লেস্টের বিরুদ্ধে একটি গোল করার পাশাপাশি দুটি অ্যাসিস্টও করেন। “চোট তো খেলাধুলার অংশ। তবে হ্যাঁ, ফের দলে ফিরে ভালো লাগছে। এখন মানসিক ও শারীরিকভাবে অনেক ভালো বোধ করছি। আমি আমার সেরাটা দিচ্ছি। সবচেয়ে বড় কথা হলো—আমাদের থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে। আমি যেভাবেই পারি, দলের পাশে থাকতে চাই,” বলেন অনজু।