মাঠে শস্য কাটা থেকে কমনওয়েলথে পদক জয় - ভারোত্তলক হরজিন্দরের অসাধারণ কাহিনী

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : সোমবার মহিলাদের ৭১ কেজি ভারোত্তলন বিভাগে ব্রোঞ্জ পদক জেতেন ভারতের হরজিন্দর কৌর। মোট ২১২ কেজি তুলে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন ২৫ বছরের এই ভারোত্তলক, ইংল্যান্ডের সারাহ ডেভিস ও কানাডার অ্যালেক্সিস অ্যাশওয়ার্থকে ভালো লড়াই দেন তিনি।
কিন্তু কমনওয়েলথের এই লড়াইয়ের পিছনে রয়েছে জীবনের মস্ত বড় সংগ্রাম। পাঞ্জাবের নাভার কাছে মেহাস গ্রামে এক কামরার বাড়িতে পরিবারকে নিয়ে থাকেন হরজিন্দর। ছয়টি মোষ ও চুক্তিতে থাকা জমি নিয়ে রয়েছেন তারা। টোকার মস্ত ভারী চাকা ঘুরিয়ে শস্য কাটার কাজ করতেন হরজিন্দর। হয়ত সেই শক্তিই এই ভারোত্তলনে কাজে এসেছে।
কিন্তু ভারোত্তলন প্রথম প্রেম নয় হরজিন্দরের জন্য। বরং কবাডিই ছিল হরজিন্দরের প্রথম পছন্দ। মা কুলদীপ কৌর ও বাবা সাহিব সিংয়ের সর্বকনিষ্টা হরজিন্দরকে প্রতিদিন পাঁচ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে যেতে হত নাভার সরকারি বিদ্যালয়ে। স্কুল ও কলেজের কবাডি দলের নিয়মিত সদস্যা ছিলেন হরজিন্দর।
কিন্তু তাকে স্পট করেন পরমজিৎ শর্মা, যিনি ১৯৯০ সালের কমনওয়েলথ গেমসে ৬৯ কেজি ভারোত্তলনের চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। এবং পরমজিতের হাত ধরেই উঠে আসা হরজিন্দরের। বাবা ও বড় ভাই প্রীতপাল সিং হরজিন্দরের খেলার জন্য প্রায়ই বন্ধু ও আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার নিতেন। ২০১৭ সালে রাজ্য ভারোত্তলন চ্যাম্পিয়ন হন হরজিন্দর। এবং ধীরে ধীরে তিনি ও তার বড় ভাই সমস্ত দেনা মিটিয়ে দেন।
এরপর সর্বভারতীয় আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন, সিনিয়র ন্যাশনালস চ্যাম্পিয়ন, খেলো ইন্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয় গেমসে রুপো - এসবই ছিল হরজিন্দরের সাফল্যের প্রথম ধাপ। আর এই কমনওয়েলথ গেমস হরজিন্দরের জীবনের অন্যতম টার্নিং পয়েন্ট।