চলে গেলেন সুরজিৎ সেনগুপ্ত, হাসপাতাল থেকে শ্মশান যেন এক ট্র্যাজেডি গল্পের ক্লাইম্যাক্স

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : বৃহস্পতিবার দুপুর দুটোয় খবরটা আসার পরই কলকাতা তথা ভারতীয় ফুটবল মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছিল। ফের অনাথ হয়ে গেল কলকাতা ময়দান। চলে গেলেন দেশের অন্যতম সেরা উইঙ্গার তথা প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত।
কিন্তু তাঁর মৃত্যু সমস্ত রাজনৈতিক বা খেলার দিকের সমস্ত মানুষকে এক করে দিয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর যেমন হাসপাতালে এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা সুজন চক্রবর্তী তেমনি এসেছিলেন রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এসেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত বিশ্বাসও। সবাই এই মর্মান্তিক সংবাদে দুঃখপ্রকাশ করেন। এরপর ঠিক সন্ধ্যে ৬ টায় তার মরদেহ বের হয় রাজপথে। গন্তব্য তাঁর সবচেয়ে প্রিয় জায়গা,'ময়দান'।
প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে, সেখানে লাল হলুদ একাডেমির ছেলেরা পতাকা নিয়ে সম্মান জানায় তাঁকে, সেখানে শ্রদ্ধা জানান সমরেশ চৌধুরী,গৌতম সরকার, ভাস্কর গাঙ্গুলির মত প্রাক্তনরা। এছাড়া এসেছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মহমেডান ক্লাব থেকেও দুই শীর্ষকর্তা, কামরুদ্দিন ও দানিশ ইকবাল আসেন শ্রদ্ধা জানাতে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় মোহনবাগান ক্লাবে। উপস্থিত ছিলেন দেবাশীষ দত্ত, বিদেশ বোস, সত্যজিৎ চ্যাটার্জি প্রমুখরা। সেখান থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গল্ফগ্রীনে তাঁর আপন বাসভবনে, সেখানে ঘন্টা খানিক রাখার পর তাঁর দেহ নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়।
এ যেন সেই সত্তর দশকের ছবি,সেই সময় যেমন প্রতিপক্ষের সমস্ত বাঁধা কাটিয়ে সাইড লাইন থেকে দৌড়ে যেতেন সুরজিৎ গোল করার জন্য, কোনও কিছুকেই পরোয়া করতেন না, তেমনি আজও পেছনে নিজের পরিবার,সতীর্থ,আত্মীয়,সমর্থক তথা প্রাণপ্রিয় ময়দানকে ছেড়ে দিয়ে চললেন পরলোকের উদ্দেশ্যে। এই আভিজাত্যে যেন পিছনে পড়ে থাকা মিডিয়ার ফ্ল্যাশের ঝলকানি, হাজার মানুষের কান্নার রোলও ফিকে পড়ে যায়।