এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : শুক্রবার মাঝরাতে ফিফা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে সার্বিয়াকে ২-০ ফলে হারায় ব্রাজিল। আর এই দুটি গোলই দ্বিতীয়ার্ধে করেছেন তারকা ফরোয়ার্ড রিচার্লিসন। যার মধ্যে দ্বিতীয় গোলটি একটি অনবদ্য বাইসাইকেল কিকে করেছেন রিচার্লিসন।

কিন্তু রিচার্লিসনের জীবনের শুরুটা কঠিন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। তার বাবা ছিলেন একজন রাজমিস্ত্রি, আর মা আইস ক্যান্ডি বিক্রি করতেন। এবং যেখানে বড় হয়ে উঠেছিলেন রিচার্লিসন, সেই নোভা ভেনেসিয়া এলাকাটি ড্রাগ আসক্ত ও অপরাধ জগতের অন্যতম বড় জায়গা ছিল। এবং পাঁচ ভাইয়ের সব থেকে বড় হওয়ায়, অনেক সময়ই খালি পেটে রাতে ঘুমোতেন রিচার্লিসন।

কিন্তু সততাকে সর্বদা সাথে নিয়ে থাকতেন রিচার্লিসন। বন্ধুরা যখন সহজ উপার্জনের জন্য রাস্তায় ড্রাগ বেঁচত, রিচার্লিসন নিজের পরিবারের জন্য আইসক্রিম বিক্রি করতেন, লোকের গাড়ি পরিষ্কার করতেন।

তবে ফুটবলটা রিচার্লিসনের অত্যন্ত প্রিয়, সেটি জানতেন তার বাবা। তাই চরম আর্থিক অনটনের মাঝেও, রিচার্লিসনের যখন সাত বছর বয়স, তখন তার বাবা তাকে ১০টি ফুটবল কিনে দিয়েছিলেন। এবং সেগুলি নিয়ে বস্তির অলিগলিতে বন্ধুদের সাথে খেলে বেড়াতেন রিচার্লিসন।

কিন্তু এই ফুটবল খেলতে গিয়েই প্রাণহানির মুখে পড়েন রিচার্লিসন। এক ড্রাগ ব্যবসায়ী তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে দিয়েছিল, ভেবেছিল রিচার্লিসন কোনওভাবে ড্রাগ চুরি করেছিল। কিন্তু অল্পের জন্য এবং ভাগ্যের সহায়ে সেই অপরাধী বন্দুকের ট্রিগার টেপেনি।

এবং এই ফুটবলকে আঁকড়ে ধরেই নিজেকে আরও উঁচু জায়গায় নিয়ে যান রিচার্লিসন। ব্রাজিলের দ্বিতীয় ডিভিশনের ক্লাব আমেরিকা মিনেইরোতে সুযোগ পান রিচার্লিসন। এর এক বছর পরে ব্রাজিলের অন্যতম বড় ক্লাব ফ্লুমিনেসেতে সুযোগ পান তিনি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রিচার্লিসনকে।

ব্রাজিলে দুর্দান্ত ফুটবল খেলার সুবাদে ইংল্যান্ডের ক্লাব ওয়াটফোর্ডে খেলার সুযোগ পান রিচার্লিসন। সেখান থেকে এভার্টনে বিপুল অর্থে সই করেন তিনি, এবং এভার্টনের ইতিহাসে আজও রিচার্লিসন সব থেকে দামী সাইনিং। আর চলতি মরশুমের শুরুতে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ডে টটেনহ্যাম হটস্পারে সই করেন রিচার্লিসন।

চলতি মরশুমে ব্রাজিলের হয়ে সাত ম্যাচে নয় গোল করেছেন রিচার্লিসন। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচের পর রিচার্লিসন বলেন, "আমাদের প্রফেসর টিটে বলেছেন, তুমি গোলের গন্ধ পাচ্ছ। আর ঠিক তাই হয়েছে।"