বীরু চ্যাটার্জি'র প্রয়াণে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন সত্যজিত। বিস্তারিত পড়ুন…

নিজস্ব প্রতিনিধি: করোনা পরিস্থিতির মধ্যে কলকাতা ময়দান আরও এক কর্মকর্তাকে হারাল। শারীরিক অসুস্থতার জন্য রবিবার সকালে পরলোক গমন করেন মোহনবাগানের সহ-সভাপতি বীরেন্দ্র নাথ চ্যাটার্জি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। ময়দানে অবশ্য তিনি বীরু চ্যাটার্জি নামেই পরিচিত ছিলেন। সত্যজিত চ্যাটার্জি'র 'ঘরের ছেলে' হয়ে ওঠার নেপথ্যে সদ্য প্রয়াত বীরু চ্যাটার্জি'র অনেক অবদান আছে। তাই কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন সত্যজিত। বললেন, "এই মুহূর্তে বেশি কথা বলতে পারব না। আমি অভিভাবক'কে হারালাম।"
সাল ১৯৮৫ , সেবারই আগরতলায় বসেছিল জুনিয়র ন্যাশনাল ফুটবলের আসর। বাংলার কোচ শঙ্কর সরকার। জর্জ টেলিগ্রাফের ট্রায়ালে কোচ পিয়ের আলি বাতিল করে দিলেও, শঙ্করবাবুর চেষ্টায় ছেলেটা আবার সুযোগ পায়। মাঝমাঠে তার দুরন্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে ফাইনালে আসাম'কে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হল বাংলা। সে বছরই সুপার সকার সিরিজ খেলতে বোখুম দল ভারতে এসেছিল। ছেলেটিও ভারতীয় শিবিরে ডাক পেল। অমল দত্ত কোচ। জীবনে প্রথমবার সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রশান্ত ব্যানার্জি, কৃশানু দে, বিকাশ পাঁজি, সুদীপ চ্যাটার্জিদের মত তারকাদের সঙ্গে গ্র্যান্ড হোটেলের মত ফাইভ স্টার হোটেলে থাকার সুযোগ পেলেন সত্যজিত চ্যাটার্জি। ভাল খেলার সুবাদে ওই বছরেই সিনিয়র ন্যাশনালে ডাক পেলেন। পাশাপাশি সন্তোষ ট্রফিতে খেলতে যাওয়ার আগেই ইস্টবেঙ্গলের সাথেও কথাবার্তা পাকা হয়ে গিয়েছে। পকেটে ঢুকে গিয়েছে আ্যডভান্স। আর সেটা জানার পরেই ঘটনায় যাবতীয় টুইস্ট। বীরু চ্যাটার্জি প্রায় একার ক্ষমতায় সত্যজিত'কে মোহনবাগানে নিয়ে চলে এলেন। ইস্টবেঙ্গলকে অগ্রিম ফিরিয়ে দিয়ে ১৯৮৬ সালে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে চাপালেন সত্যজিত। আজীবনের জন্য। সৌজন্যে সেই বীরু চ্যাটার্জি।
দাদা-ভাই শৈল চ্যাটার্জি ও বীরু চ্যাটার্জি একটা সময় দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন। আটের দশকের শুরুর দিকে দলবদলের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতেন এই কর্তা। ফলে ফুটবলারদের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের গল্প সবার মুখে মুখে ঘুরত। তৎকালীন যুগে দল গড়ার ক্ষেত্রে বাড়ি থেকেও টাকা দিয়েছেন বীরু চ্যাটার্জি। শুধু তাঁর জন্যই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল থেকে প্রশান্ত ব্যানার্জি, অলোক মুখার্জি, অমিত ভদ্র, কৃশানু দে, বিকাশ পাঁজি, সুদীপ চ্যাটার্জি, শিশির ঘোষের মত একঝাঁক ফুটবলাররা সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন। স্বভাবতই এমন কর্মকর্তার প্রয়াণে ময়দান জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।