কীভাবে নিজের অর্থ ব্যয় করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে?

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : বিশ্ব ফুটবলের বর্তমান তারকা-মহাতারকাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে শুধু খেলার মাঠেই তিনি তারকা নন, আয়ের দিক দিয়েও ক্রীড়া জগতের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হলেন এমবাপ্পে। ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের মে মাস থেকে ২০২২ সালের মে মাস পর্যন্ত পিএসজির এই ফুটবলারের আয় ছিল ৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার। যদিও ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী এই সময়কালে আয়-রোজগারের তালিকায় ফুটবলারদের মধ্যে তিনি পঞ্চম স্থানে ছিলেন। শীর্ষে ছিলেন তাঁরই ক্লাব সতীর্থ লিওনেল মেসি, যিনি মোট আয় করেছিলেন ১৩ কোটি ডলার।
তবে এই মরশুমের শুরুতে এমবাপ্পের দলবদলের ডামাডোলে সব হিসাব পালটে যায়। স্প্যানিশ জায়েন্ট রিয়াল মাদ্রিদে প্রায় যোগ দেওয়া থেকে বিশাল পরিমাণ অর্থের বিনিময় পিএসজিতেই থেকে যাওয়া, এমবাপ্পের আয় এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।
পিএসজির সাথে এমবাপ্পের নতুন চুক্তি অনুযায়ী কিলিয়ান প্রতি মাসেই এমবাপ্পে পাবেন ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এছাড়াও রয়েছে ১ কোটি ২৩ লাখ ডলারের সাইনিং বোনাস এবং আরও অনেক সুযোগ সুবিধা। কিন্তু এত অর্থ কীভাবে ব্যবহার করেন এমবাপ্পে? চলুন দেখেনি-
বিলাসবহুল বাড়ি এবং গাড়ি
এমবাপ্পে তার আয়ের অনেকটাই খরচ করেন নিজের শখের বাড়ি এবং গাড়ির পিছনে। চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্যারিসে এমবাপ্পে যে ফ্ল্যাটে থাকেন তার মূল্য ১ কোটি ৪ লাখ ডলার। ৬ হাজার ৪৪৪ বর্গফুটের তার এই ফ্ল্যাটটি যেখানে অবস্থিত সেটি ফ্রান্সের সবচেয়ে দামি আবাসিক এলাকা হিসাবে পরিচিত। তার এই ফ্ল্যাটে রয়েছে ১২ টি বেড রুম, একটি বাস্কেটবল কোর্ট, একটি বিশাল লাইব্রেরি, বড় জিম। এছাড়াও ছাদে রয়েছে সুইমিংপুল এবং জাকুজি। জাকুজি থেকে আইফেল টাওয়ার দেখার বিশেষ ব্যবস্থাও রয়েছে।
তবে শুধু বাড়ি নয় এমবাপ্পের রয়েছে দামি গাড়ি কেনারও শখ। তার সংগ্রহে রয়েছে ভক্সোয়াগন তোয়ারেগ, মার্সিডিজ বেঞ্জ ভি ক্লাস, রেঞ্জ রোভার এছাড়াও বিএমডাব্লু এবং অডির বিভিন্ন মডেলের গাড়ি রয়েছে। তার সবচেয়ে দামি গাড়িটির নাম ফেরারি ৪৮৮পিস্তা, যার দাম ৫ লাখ ৬৫ হাজার ডলার। যদিও খেলার মাঠের অন্যতম দ্রুততম ফুটবলার দ্রুত গাড়ি নিয়ে রাস্তায় চালান না। তার গাড়ির জন্য রয়েছে চালক।
দামী স্নিকার
দামী জুতো কেনা ফুটবলারদের অন্যতম প্রধান শখ। এমবাপ্পেও দামী স্নিকার্স কেনা পছন্দ করেন। ২০১৮ সালে তিনি লস অ্যাঞ্জেলসের একটি স্নিকার দোকান দিয়ে দুটি স্নিকার কিনেছিলেন, যার দাম ১ হাজার ২২৬ মার্কিন ডলার।
দেশ-বিদেশে ভ্রমণ
সুযোগ পেলেই ঘুরতে চলে যান কিলিয়ান। সম্প্রতি বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর পিএসজির হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেছেন এমবাপ্পে আর তার পরেই প্রিয় বন্ধু হাকিমিকে নিয়ে সোজা চলে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে ছুটি কাটাতে।
স্বেচ্ছাসেবী এমবাপ্পে
কোটি-কোটি টাকার মালিক এমবাপ্পে শুধু যে নিজের শখ-আহ্লাদে খরচ করেন, তা নয়! প্রতিভাবান এমবাপ্পে একজন বড় মনের মানুষও। এমবাপ্পে মানুষের কল্যাণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করে থাকেন। যা অনেকেই জানেন না।
২০১৮ সালে ফিফা বিশ্বকাপ জয়ের বোনাস থেকে পাওয়া অর্থ তিনি দুস্থ এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে ব্যয় করেন। প্রসঙ্গত ২০১৮ বিশ্বকাপে এমবাপ্পের বোনাসের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
এছাড়াও, ২০১৯ সালে আর্জেন্টিনার ফুটবলার এমিলিয়ানো সালা মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তাঁকে উদ্ধারের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থা উদ্যোগ নেয়, তাদের ৩২ হাজার ডলার দান করেছিলেন এমবাপ্পে। ২০২১ সালে গৃহহীনদের নিয়ে কাজ করা এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আব্বে পিয়েরে ফাউন্ডেশনে এমবাপ্পে বড় অর্থ দান করেছিলেন। যত অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করা হয়নি।
২০২০ সালে এমবাপ্পে নিজের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্বোধন করেন। 'কে এম' নামের এই সংস্থা প্যারিসের ৯৮ জন দরিদ্র শিশুর স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছেন। এই বিষয় এমবাপ্পে বলেন, "আমরা এই ৯৮ জন শিশুর সব দায়িত্ব নিয়েছি। তারা নিজেদের কর্মজীবনে প্রবেশের আগে পর্যন্ত আমরা তাদের সব ধরনের সাহায্য করে যাব।"
সব মিলিয়ে ২৪ বছর বয়সী এই ফরাসি তারকা ফুটবলার, ফুটবল ম্যাচে নিজের দলকে জেতানোর পাশাপাশি জিতে নিয়েছেন মানুষের হৃদয়।