মা হলেন পৃথিবীর সব থেকে বড় যোদ্ধা - হীরা মন্ডলের সাফল্যের কান্ডারি মা আজ গর্বিত

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : একজন সন্তানের বড় হয়ে ওঠার পিছনের মায়ের ভূমিকা সব থেকে বেশি থাকে, এটা তো সর্বজনবিদিত। কিন্তু কিছু এমন মাও রয়েছেন, যাদের লড়াইয়ের তেজে তাদের সন্তানরা আজ জগতসভায় সেরা। সেরকমই একটি উদাহরণ তৈরি করলেন হীরা মন্ডল।
চলতি আইএসএলে এসসি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে সব থেকে ধারাবাহিক ফুটবলার হলেন হীরা মন্ডল। আর বাঙালি এই উইংব্যাক গত চেন্নাইন ম্যাচে নিজের সেরা পারফর্মেন্স দিয়েছেন, জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরষ্কার। কিন্তু এই ম্যাচ সেরা পুরষ্কার কাকে উৎসর্গ করলেন হীরা?
ম্যাচের পর নিজের মা বাসন্তী মন্ডলকে কৃতিত্ব দিয়েছেন হীরা। এমনকি, হীরা তার হাতের ট্যাটু দেখান, যেখানে তার মায়ের ছবি আঁকা, আর তাতে লেখা, লাভ ইউ মা। তবে হীরার বেড়ে ওঠার কাহিনীতে কতটা লড়াই রয়েছে, আর কতটা সাহস দেখিয়েছেন তার মা, তা সত্যিই কুর্নিশযোগ্য।
বৈদ্যবাটিতে ছোট্ট একটি বাড়িতে হীরা ও তার ভাইকে একা হাতে বড় করেছেন বাসন্তী মন্ডল। বাবাকে ছোটবেলাতেই হারান দুই ছেলে, আর তারপর তার মাই যেন সর্বেসর্বা হয়ে ওঠেন। আর আজ হীরা যখন ভারতের সর্বোচ্চ ফুটবল লিগে যখন দাপিয়ে খেলছে, তখন চোখের জল যেন বাঁধা মানছে না বাসন্তীর।
এক্সট্রা টাইম বাংলা সোজা চলে গিয়েছিল হীরার বাড়িতে, যেখানে তার মা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার ছেলের সাফল্যের জন্য। চোখের জলকে সঙ্গে নিয়ে বাসন্তী দেবী বলেন, "ম্যান অফ দ্য ম্যাচটা যখন হল, আমি কেঁদে ফেলেছিলাম। আমি সত্যি খুব কেঁদেছি। আমি ঈশ্বরের কাছে ডেকেছি, যেন ছেলেটা আরও ভালো খেলে, আরও ম্যাচ আছে সামনে।"
"আমার সেই ছোট্ট হীরা আজ সবার মুখে মুখে। সবাই বলছে আমার ছেলেটা কত্ত ভালো খেলছে। আরও ভালো খেলুক হীরা, এটাই আমি চাই," আবেগঘন গলায় হীরার মায়ের এই আর্জি।
হীরার হাতে নিজের ট্যাটু দেখে একটু বকাঝকাই করেছিলেন বাসন্তী দেবী। তবে মায়ের প্রতি ভালোবাসাতেই এই ট্যাটু, এমনটাই জানিয়েছিলেন হীরা। আর ছেলের সেই শখ পূরণে যেন খুশিই হয়েছিলেন মা।
হীরার জন্য আজ গলা তুলে সমর্থন জানাচ্ছে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা, ভারতের ফুটবল মহল আজ হীরার খেলায় মুগ্ধ। তবে সব থেকে গর্বিত বোধ করছেন বৈদ্যবাটির সেই ছোট্ট বাড়ির বাসন্তী দেবী, যিনি একা লড়াই করে হীরাকে এই জায়গায় এনেছেন।