এক নজরে দেখে নিন পরিমল দের জীবনের অর্জন

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ চলে গেলেন পরিমল দে। ময়দানে যিনি জংলা নামে পরিচিত ছিলেন। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স একাশি বছর। রেখে গেলেন একমাত্র পুত্র প্রতীক ও পুত্র বধু রিমি কে। উনিশশো একচল্লিশ সালের চৌঠা মে তাঁর জন্ম খড়দহের কুলীন পাড়ায়।
পরিমল দে কলকাতা ফুটবল লিগে প্রতিভাবান ফুটবলার হিসেবে প্রথম খেলার সুযোগ পান বালি প্রতিভা ক্লাবে। প্রথম বছরেই তিনি ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জালে বল পাঠিয়ে নজর কাড়েন। এক বছর বালি প্রতিভা ক্লাবে খেলে তিনি তেষট্টি সালে যোগ দেন উয়াড়ি ক্লাবে। উয়াড়ি ক্লাবের জার্সি গায়ে তিনি সে বছর গোল করেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান এবং মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিরুদ্ধে। ফলস্বরূপ চৌষট্টির মরসুমে তাঁর ডাক পড়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সি গায়ে খেলার জন্য। চৌষট্টি থেকে সত্তর সাল পর্যন্ত পরিমল দে ছিলেন লাল হলুদের অন্যতম প্রধান ফুটবলার। এরপর দু বছর মোহনবাগান জার্সি গায়ে খেলার পর তিয়াত্তরের মরসুমে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সি গায়ে খেলার পর ফুটবল থেকে অবসর নেন তিনি।
আষট্টি সালে তিনি ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের অধিনায়ক। ছেষট্টি সালে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সি গায়ে টানা নয়টি ম্যাচে গোল করার কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। এর আগে ছেচল্লিশ সালে স্বামী নায়ার লাল হলুদ জার্সি গায়ে টানা এগারো টি ম্যাচে গোল করেছিলেন। উনিশশো সত্তর সালে আই এফ এ শিল্ড ফাইনালে মাত্র দু মিনিট আগে লাল হলুদ জার্সি গায়ে মাঠে নেমে ইরানের পাস ক্লাবের বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলটি করে নায়ক হয়েছিলেন পরিমল দে। সেই ম্যাচটি এখনও লাল হলুদ সমর্থকদের হৃদয়ে। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সি গায়ে তিনি বিভিন্ন টুর্নামেন্টে গোল করেছেন চুরাশি টি। এরমধ্যে কলকাতা লিগে রয়েছে ছেচল্লিশ টি গোল। লাল হলুদ জার্সি গায়ে তিনি করেছেন দুটি হ্যাটট্রিক। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে খেলার পাশাপাশি বাংলা তথা ভারতীয় দলের জার্সি গায়েও খেলেছেন তিনি। আষট্টি সালে তাঁর অধিনায়কত্বে ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন বরদলুই,নাগজি এবং চাকুলা গোল্ড কাপে। ছেষট্টি সালে মারডেকা টুর্নামেন্টে কোরিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের জার্সি গায়ে গোল করার কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর। ছেষট্টি এবং সত্তর সালে শিল্ড ফাইনালে তাঁর করা গোলে খেতাব জয় করেছিল ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদের এই যোদ্ধা কে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব ২০১৪ সালে জীবন কৃতি সন্মানে সন্মানিত করেছেন ।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকের ছায়া কলকাতা ময়দানের পাশাপাশি ক্রীড়া মহলে। পরিমল দে কে শ্রদ্ধা জানাতে ইস্টবেঙ্গল পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে। তাঁর দেহে পচন ধরে যাওয়ার কারণে তাঁকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ক্যাওড়াতলা মহা শ্মশানে। শেষ যাত্রায় তাঁর মরদেহে লাল হলুদ পতাকা এবং ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তারা। যেখানে শেষ সম্মান জানাতে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, আইএফএর তরফে ছিলেন স্বরূপ বিশ্বাস, সৌরভ পাল।