ইংরেজীর থেকেও জরুরী ফুটবলের ভাষা , দেখিয়ে দিলেন আইএসএলের চাণক্য

ফেব্রুয়ারি ১৯: জলের মতো ইংরেজি বলতে পারেন না হয়তো । কিন্তু ফুটবলের ভাষাটা বোঝেন । খেলোয়াড় হিসেবে খেলতেন রক্ষণে , কিভাবে সাজাতে হয় বড় ম্যাচের রক্ষণ দেখিয়ে দিয়ে গেলেন সেটাও ।
লীগের দুই অর্ধেই চির প্রতিদ্বন্দ্বী লালহলুদকে হারিয়ে বাগানের হেড স্যার হাবাস আরও একবার প্রমান করে দিলেন , ভারতীয় ফুটবলে তিনিই এখন চাণক্য। এমনিতেই নড়বড়ে এবারের ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ , তিন জনের রক্ষণকে ভাঙতে যেটা করতে হয় সেটাই করলেন বাগানের স্প্যানিশ কোচ । কৃষ্ণ তো ছিলেনই , তার সাথে জুড়ে দিলেন মার্সেলিনো , উইলিয়াম , মনবীর ত্রয়ীকে । দ্রুত গতির প্রতি আক্রমণ ও লম্বা বলে বারবার খাবি খেলো এসসি ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ ।
ফুটবলে বলে , ভালো কোচের দল সবসময় দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলে । আরও একবার সেটা প্রমান হয়ে গেল আজকের খেলায় । ডিফেন্সের ভুল বোঝাবুঝিতে আত্মঘাতী গোল হজম করলেও দ্বিতীয় অর্ধে বাগান নামলো নতুন উদ্যমে । যে মার্সেলিনো আচরণের সমস্যা , খারাপ ফর্ম ইত্যাদির জন্য আগের দলে সুযোগ পাচ্ছিলেন না তিনি আজ লেনি কে সঙ্গে নিয়ে মাঝ মাঠ থেকে মুছে দিলেন মাগোমা , সৌরভদের । ফল ভালো হোক বা খারাপ হাবাস খেলোয়াড়দের উচ্ছসিত প্রশংসাও করেন না , আবার তাদের সম্পর্কে কুকথাও বলেন না । তার ম্যান ম্যানেজমেন্টের গুনেই যেন চরিত্রবদল মার্সেলিনোর । বাগান হেডস্যারের নির্দেশে সারা ম্যাচে কড়া ট্যাকেল করে গেলেন বাগান খেলোয়াড়রা । পিলকিংটনের গায়ে আঠার মতো লেগে থাকলেন সন্দেশ । ব্রাইটের গায়ে প্রীতম । এসসি ইস্টবেঙ্গলে নেই কোনো স্ট্রাইকার , কাজেই যা হওয়ার তাই হল । যেন একেবারে ময়দানী কায়দায় ফানেলের মতো যাবতীয় লালহলুদ আক্রমণ শোষণ করে নিল এটিকে মোহনবাগান। ম্যাচের শেষ মিনিট পর্যন্ত কিভাবে মনঃসংযোগ ধরে রাখতে হয় , দেখিয়ে দিয়ে গেলেন সেটাও ।
কাজ করেন , কথা কম বলেন । বোঝেন দলের শক্তি - দুর্বলতা । অঙ্কও করেন মনোযোগ দিয়ে । অতিরিক্ত ডিফেন্স করার নীতি থেকে সময় মতো বেরিয়ে শেষ কয়েক ম্যাচে আক্রমণকে অস্ত্র করেই টানা ম্যাচ জয় । দ্বিতীয় মুম্বাইয়ের থেকে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে । সবমিলিয়ে মাঠে কৃষ্ণ-উইলিয়ামরা ফুল ফোঁটালেও বাগানের আসল মালি , আইএসএলের চাণক্য - আন্তোনিও লোপেজ হাবাস।