মোহনবাগান থেকে এটিকে কি সরবে? কি বললেন কুণাল ঘোষ,একান্ত সাক্ষাৎকার

এক্সট্রা টাইম বাংলা ওয়েব ডেস্ক : ২০২২ এ সবুজ মেরুন তাঁবুতে কমিটি নির্বাচন ভোটপ্রক্রিয়া এবং তার পরবর্তী অধ্যায় হয়ত সবুজ মেরুন ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা হয়ে থাকবে। কি হয়নি এই ভোটপর্বের সময়? ক্লাবে মারামারি,রক্তপাত,দীর্ঘদিনের মোহনবাগান ক্লাবের একনিষ্ঠ পূজারী একদা ক্লাবের অর্থসচিবের সচিব পদে আসীন হওয়া,বিরোধীশূন্য কমিটি থেকে কুণাল ঘোষের সহ সভাপতির পদপ্রাপ্তি, সবই হয়েছে। এবার আশা যাক শেষ বিষয় নিয়ে, কুণাল ঘোষ, যার সহ সভাপতি হওয়ার খবর আসতে সারা মোহন জনতা উত্তাল হয়ে উঠেছে, হচ্ছে প্রচুর সমালোচনা,তাঁর সহ সভাপতি পদে আসীন হওয়ার পর ক্লাবের রাজনীতিকরণ নিয়েও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
আজ তাই এক্সট্রা টাইম বাংলা পৌঁছে গেছিল কুণাল ঘোষের দরবারে,সেখানে সমর্থকদের মান অভিমানের বিষয়, সহ সভাপতি হওয়ার অনুভূতি সব নিয়ে কথা হয়। তিনি প্রথমেই বলেন যে এই সবুজ মেরুন তাবুর প্রতি প্রেম তাঁর পরিবারগত, স্মৃতিচারণ করতে করতে বলেন,"ছোটবেলায় দাদুর হাত ধরে আসতাম, এই মোহনবাগান লনেই সপ্তাহের তিন চারদিন খেলা ছিল বাধা।" তিনি যোগ করেন,"মোহনবাগান ক্লাবের সহ সভাপতির পদ অবশ্যই একটা গর্বের বিষয়, আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি।" যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে তিনি সত্যিকারের মোহনবাগানি কি না এমন প্রশ্ন সমর্থকদের মধ্যে উঠছে তখন তিনি নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে ছক্কা হাঁকালেন,"২০১২ সালে যখন মোহনবাগান মাঠ থেকে উঠে যাওয়ার জন্য শাস্তি স্বরূপ অবনমনের আওতায় তখন কিন্তু আমি,মানস ভট্টাচার্য,বিদেশ বোস মিলে প্রায় দুলাখ লোকের সই নিয়ে দিল্লিতে যাই, ক্লাবের টাকায় নয় নিজেদের টাকায়, তারপর কি হয়েছে সেটা সবাই জানে এছাড়া ২০১৮ সালে আমি মনোনয়ন দি কিন্তু কিছু অসুবিধার কারণে তা বাতিল হয়।এখন যারা অভিযোগ করেছেন তারা তখন মনে হয় ঘুমিয়ে ছিলেন।" ক্লাবের রাজনীতিকরণ নিয়ে যা বিতর্ক হচ্ছে সেই জবাবে তিনি বলেন,"ক্লাবের জায়গায় সবাই এক, তাদের পরিচয় সবুজ মেরুন, বিগত দিনেও অনেক রাজনীতিবিদ আছেন যারা মোহনবাগান সমর্থক তো ছিলেনই, সক্রিয়ভাবে কাজও করেছেন।সাম্প্রতিক অতীতে যখন দুই প্রধানের আইএসএল খেলা নিয়ে জট তৈরি হয়েছিল তখন দুই ক্লাবের কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠান বিজেপি নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গী, তখন তো আমি,অরূপ রায়,মলয় ঘটক,বাবুন ব্যানার্জি যারা তৃণমূলী বলে পরিচিত তখন তো প্রশ্ন তুলতে যাইনি কারণ তখন ভালো হলে ক্লাবের ভালো হবে।" এখানেও কিন্তু বিরোধীদের খোঁচা মারতে ছাড়েননি তিনি,বলেন,"অনেক আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকার কিন্তু কিচ্ছু করেননি, তারা দুই প্রধানের আবেগ নিয়ে খেললেন মাত্র।" তিনি যোগ করেন,"আমি সেদিন ক্লাবে গেলাম তো আমার পাশে বসে ছিলেন সোমেশ্বর বাগুই, উনি তো কংগ্রেসের, ওপাশে বসে সোহিনী মিত্র যার স্বামী কল্যাণ চৌবে বিজেপি করে,তো আমি কি বলব যে তারা মোহনবাগান নয়?"
এটিকে প্রসঙ্গ উঠলে তিনি বলেন,"অতীতেও মোহনবাগান ক্লাবের সাথে স্পন্সরদের নাম কিন্তু জড়িয়ে ছিল,এবার এটিকে যেহেতু একটি ক্লাব তাই সেটা মোহনবাগান সমর্থক ও আমার ব্যক্তিগতভাবেও একটু খারাপ লাগছে। কিন্তু আপনাকে দেখতে হবে যে যারা টাকা দিচ্ছে তার কথা শুনতে হবে। কিন্তু সঞ্জীব গোয়েনকা নিজে একজন মোহনবাগানি, যেটা ইস্টবেঙ্গল কিন্তু বলতে পারবে না যে শ্রী সিমেন্টের সাথে তাদের তেমন সম্পর্ক আছে বলে যেটা মোহনবাগানের আছে। তাই আমরা আশাবাদী, কমিটি নিশ্চয়ই অনুরোধ করবে যে অন্য কোনোভাবে যদি কিছু করা যায় এবং সঞ্জীব গোয়েনকা নিশ্চই কিছু ভেবে দেখবেন।" সবশেষে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় যে সহ সভাপতি পদে আসীন হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আশীর্বাদ চাইতে যাওয়াটা কি শুধুই সৌজন্যতা? তিনি বলেন,"মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোহনবাগান সহ বাকি ময়দানের ক্লাবদের যেভাবে সাহায্য করেছেন,বাংলার ফুটবলের জন্য পরিকাঠামোর জন্য যা টাকা বরাদ্দ করেছেন তা তো অতীতে কোনো মুখ্যমন্ত্রী করেননি।আমাদের বর্তমান সচিব দেবাশীষ দত্তের ইচ্ছে ছিল যে নির্বাচনের পর তার কাছে প্রণাম করতে যাওয়ার,সেই অনুযায়ী সময় চাওয়া হয় তাঁর কাছে এবং তিনি তা দেন, তো এটা একেবারেই সৌজন্য।"