এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গাঃ উদ্বাস্তু শিবির থেকে কাতার বিশ্বকাপ! জানুন ফ্রেঞ্চ তারকার অজানা লড়াই

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ সম্প্রতি ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেসচ্যাম্প আসন্ন কাতার বিশ্বকাপের জন্য ২৫ জন সদস্যের প্রধান দল ঘোষণা করেছেন। এবং ফ্রেঞ্চ দলে করিম বেঞ্জিমা, কিলিয়ান এম্বাপ্পে, জিরোউড, ভারানের মত তারকা ফুটবলারদের সাথে সুযোগ পেয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের উঠতি প্রতিভা এডুয়ার্ডো কামাভিঙ্গা।
২০ বছর বয়সী কামাভিঙ্গা ইতিমধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ৪০টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। ফ্রান্সের অনুর্ধ্ব ২১ দলে খেলেছেন ২১ টি ম্যাচ এবং ফ্রান্সের প্রধান দলে সুযোগ পেয়ছেন ৪টি ম্যাচে। তবে শেষ দুই বছরে বিশ্ব ফুটবলের নজর কাড়া এডুয়ার্ডোর অতীত জানলে আবেগ প্রবণ হয়ে পরবেন আপনিও।
২০০২ সালে কঙ্গোর যুদ্ধের সময় নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে কামাভিঙ্গার বাবা-মা পালিয়ে আশ্রয় নেন অ্যাঙ্গোলার উদ্বাস্তু শিবিরে। এই উদ্বাস্তু শিবিরেই জন্ম এডুয়ার্ডোর। কামাভিঙ্গার যখন দুই বছর বয়স, তখন তিনি তাঁর মা-বাবা এবং অন্যান্য ভাইবোনদের সাথে চলে আসেন ফ্রান্সের ফোউগেরেস অঞ্চলে। এরপর এখানেই বড় হয়ে ওঠা বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফুটবল প্রতিভার।
তবে বল পায়ে কামাভিঙ্গা এখন মাঠে জাদু দেখালেও তিনি তাঁর খেলাধুলার কর্মজীবন শুরু করেন জুডো খেলা দিয়ে। এডুয়ার্ডোর মা চেষ্টা করেছিলেন তাঁর ছেলে যেন জুডো খেলোয়াড়ই হন। তবে কামাভিঙ্গা একসময়ের পর ফুটবলকেই নিজের ধ্যান-জ্ঞান সব করে নেন।
যদিও কামাভিঙ্গার, ফুটবলার হয়ে ওঠার পিছনেও রয়েছে আরও এক বেদনাদারক ঘটনা। ২০১৩ সালে কামাভিঙ্গার বাড়ি সম্পূর্ণ আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর তাঁর বাবা-মা তাদের সমস্ত সম্পত্তি হারিয়ে বসেন। এবং বেঁচে থাকার জন্য তাদের আবারও নতুন করে শুরু করতে হয়।
খবর অনুযায়ী, এই ঘটনাই কামাভিঙ্গাকে একজন পেশাদার ফুটবলার হয়ে উঠতে বাধ্য করে। তিনি ফুটবল খেলা শুরু করেন যাতে তিনি তাঁর পরিবারকে দারিদ্রতা থেকে বাঁচাতে পারেন।
শেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে, স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে পরিবর্ত খেলোয়াড় হিসাবে নেমে বেশ কিছু ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন কামাভিঙ্গা। মাদ্রিদের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। শূন্য থেকে উঠে এসে বিশ্ব ফুটবলে জায়গা করে নেওয়া কামাভিঙ্গা ভবিষ্যতে তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবেন তা আশা করাই যায়। আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপে ফ্রান্স কোচ দেসচ্যাম্প, কামাভিঙ্গাকে কিভাবে ব্যবহার করবেন তা দেখতেই মুখিয়ে রয়েছেন ফুটবল ভক্তরা।