ইংল্যান্ডের নীচুস্তরের লিগ খেলা থেকে আর্জেন্টিনার ভরসা - এমি মার্টিনেজ একটা লড়াইয়ের নাম

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : চলতি বিশ্বকাপে দুর্ধর্ষ ছন্দে রয়েছে আর্জেন্টিনা। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারলেও তারপর থেকে জয় ছাড়া আর কিছুই ভাবেনি আর্জেন্টিনা। আক্রমণের ভরসা যদি হন লিওনেল মেসি, তাহলে রক্ষণের বড় ভরসা হয়ে উঠেছেন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
এমন অসংখ্য খেলোয়াড়ের উদাহরণ রয়েছে, যারা দেরিতে নিজেদের সেরা জায়গায় আসে। আর এদেরই একজন এই এমি মার্টিনেজ। ২৯ বছর বয়সে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে অভিষেক করেন তিনি। তবে যে লড়াইটা শুরু থেকে করে এসেছেন, তা সত্যিই দেখার মত।
আর্জেন্টিনার ক্লাব ইন্ডিপেনডিয়েন্টেতে যখন খেলছিলেন এমি, তখন তার ডাকনাম দেওয়া হয়েছিল 'ডিবু'। কারণ এমিকে আর্জেন্টিনার এক সোপ অপেরা 'মি ফ্যামিলিয়া এস উন ডিবুজো' এর একটি চরিত্রের মত লাগত। বলা বাহুল্য, এই সোপ অপেরা আর্জেন্টিনার প্রথম লাইভ অ্যাকশন অ্যানিমেটেড শো।
কিন্তু এমির ফুটবলের শীর্ষপর্যায়ে ওঠার কাজটি সহজ ছিল না। মাত্র ১৭ বছর বয়সে আর্জেন্টিনা ছেড়ে ইংল্যান্ডে আসেন এমি, সই করেন আর্সেনালের হয়ে। কিন্তু লোনে তাকে নীচুস্তরের লিগের ক্লাবগুলিতে পাঠানো হয়। এক দশক আগে লিওনেল মেসি যখন এক মরশুমে ৯৩ গোলের ইতিহাস তৈরি করেছিলেন, এমি তখন ইংল্যান্ডের নিম্নস্তরের লিগে অক্সফোর্ড ইউনাইটেডে খেলতেন।
কিন্তু ধীরে ধীরে নিজের প্রতিভা ও অসাধারণ চরিত্রের মাধ্যমে সবার নজরে আসেন এমি। আর একেবারে বড় সুযোগ আসে ২০২০ সালে। সেই সময়ে আর্সেনালের গোলকিপার বের্ন্ড লেনো চোট পেয়ে গোটা মরশুম থেকে ছিটকে যান। আর গানার্সদের হয়ে তিনকাঠি সামলানোর দায়িত্ব পান এমি।
তবে আর্সেনালে বেশিদিন থাকা হল না এমির। ক্লাবের সাথে সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় সই করেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আর এক ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাতে। সেখানেও ক্রমাগত ভালো পারফর্ম করেন এমি।
এদিকে আর্জেন্টিনায় গোলকিপিং নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সের্জিও রোমেরো অবসর নিয়েছিলেন, উইলি কাবালেরোর উপর আস্থা হারিয়েছেন কোচ লিওনেল স্কালোনি। এই পরিস্থিতিতে এমির দুরন্ত পারফর্মেন্স নজর কাড়ে স্কালোনির। আর ২০২১ সালেই আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক করেন এমি।
আর এমির আগমণেই যেন ট্রফিভাগ্য ফিরে আসে আর্জেন্টিনার। গত বছর কোপা আমেরিকা জয়ে বড় ভূমিকা ছিল এমির দুই হাতের। কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে তিনটি পেনাল্টি সেভ করেছিলেন তিনি। আর চলতি বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধেও নায়ক হয়ে উঠেছিলেন এমি।
শুধু গোলকিপিং নয়, নিজের আগ্রাসী চরিত্র ও প্রতিপক্ষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতাও এমিকে একজন ফ্যান ফেভারিট করে তুলেছে। এখন দেখার, দুরন্ত ফ্রান্সের বিরুদ্ধেও কি নায়ক হয়ে উঠবেন এমি!