মোহনবাগান-এটিকে'র চুক্তিপত্রে কী আছে? কী রয়েছে এক্সিট ক্লজে? জানতে পড়ুন...

নিজস্ব প্রতিনিধি : মোহনবাগানের সঙ্গে এটিকে'র চুক্তিপত্রের খসড়া ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল। ফেসবুক থেকে শুরু করে সমর্থকদের একাধিক হোয়াটসআ্যপ গ্রুপে এই চুক্তিপত্রের ১৮'টি পাতা ব্যাপক ঝড় তুলেছে। মিনিস্ট্রি অফ কোম্পানি এফেয়ার্সের সাইটেই এই চুক্তিপত্র জ্বলজ্বল করছে। তাই এই চুক্তিপত্র যে একেবারে সঠিক এই বিষয়ে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই। কারণ, দুই পক্ষের ডিরেক্টরদের 'ডিজিটাল সিগনেচার' ছাড়াও তাদের 'প্যান কার্ড' নম্বর তুলে ধরা হয়েছে। এদিকে শোনা যাচ্ছে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে বোর্ড মিটিং আয়োজিত হবে।
চুক্তির খসড়া কেমন হল সেই দিকে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক….
১) ফুটবল রাইটস : এই সংযুক্তিকরণে মোহনবাগান ২০% শেয়ার পেলেও, কোনও আর্থিক সাহায্য করতে হচ্ছে না। ফুটবল রাইটসের যাবতীয় সিদ্ধান্ত বোর্ডের প্রত্যেক ডিরেক্টরের ভোটের ভিত্তিতেই হবে। তবে বোর্ডের সদস্যরা অনুমতি না দিলে অন্য কারও নামে শেয়ার ট্রান্সফার করা যাবে না। তাই মোহনবাগানের তরফ থেকে বোর্ড ডিরেক্টর হিসেবে সৃঞ্জয় বোস ও দেবাশিস দত্ত থাকলেও, তাঁরা ইচ্ছে করলেই তাঁদের পছন্দমত অন্য কাউকে শেয়ার ছেড়ে দিতে পারবেন না। সর্বোচ্চ মোট দশজন ডিরেক্টর বোর্ডে থাকতে পারবেন। তাদের মধ্যে 'কলকাতা গেমস আ্যন্ড স্পোর্টস প্রাইভেট লিমিটেড'এর তরফ থেকে
আটজন ও সবুজ-মেরুনের তরফ থেকে থাকবেন দুই কর্তা। ফলে দল গঠনের ক্ষেত্রেও এটিকে'র প্রাধান্যই বেশি থাকবে।
২) মোহনবাগানের লোগো নিয়ে আলোচনা : মোহনবাগানের চিরাচরিত লোগো আর কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ক্লাবের লোগো'র ব্র্যান্ডিং নতুন কোম্পানি 'কলকাতা গেমস আ্যন্ড স্পোর্টস প্রাইভেট লিমিটেড'এর হাতে থাকবে।
৩) আন্তর্জাতিক মানের একাডেমি : এই খসড়া'র মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের একাডেমি তৈরি করা নিয়ে বারবার উল্লেখ করা হয়েছে। শুরু থেকেই তৃণমূল স্তর থেকে ফুটবলের উন্নতি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে এটিকে। পাশাপাশি দুর্গাপুরে গত অনেক বছর ধরে মোহনবাগানের একাডেমি চলছে। তবে এই সংযুক্তিকরণের পর দুই পক্ষই আন্তর্জাতিক মানের একাডেমি তৈরি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। এই একাডেমির জন্য বিদেশ থেকেও কোচ, ফিজিক্যাল ট্রেনার নিয়ে আসার চিন্তাভাবনা চলছে।
৪) এক্সিট ক্লজ : আপাতত এই সংযুক্তিকরণ দীর্ঘমেয়াদী হতে চলেছে। তবে এই এক্সিট ক্লজে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যদি কোনও পক্ষ বেরিয়ে যেতে চায়, একপক্ষ অন্যপক্ষের শেয়ার কিনে নিতে পারে। অথবা নিজের শেয়ার বেচে দিতে পারে। যদি মোহনবাগান এই চুক্তি থেকে ভবিষ্যতে বেরিয়ে যেতে চায়, তাহলে মোহনবাগান'কে ১২৫% দাম দিতে হবে। কারণ, তাদের মাত্র ২০% শেয়ার রয়েছে। কিন্তু অন্যদিকে এটিকে এই চুক্তি থেকে সরে এলে তারা মাত্র ৭৫% দাম দিতে হবে। কারণ, তাদের দখলে রয়েছে ৮০% শেয়ার। পাশাপাশি কোনও পক্ষ যদি চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলেই কিন্তু এই সংযুক্তিকরণ ভেঙে যাবে। এবং দুই মাসের মধ্যে এই জোট ভেঙে দুই পক্ষ আবার পুরোনো অবস্থানে ফিরে যেতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে মোহনবাগান ও এটিকে দুটো সংস্থা নিজেদের মত স্বাধীনভাবে ফুটবল নিয়ে কাজকর্ম করতে পারে।