শুভ জন্মদিন দিয়েগো! এই ১০টি মুহুর্তই বোঝায় কেন মারাদোনা ফুটবলের এক অনন্য ব্যক্তিত্ব

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : ফুটবলের রাজত্বের মুকুট তো যুগের পর যুগ পাল্টাতে থাকে, কিন্তু রাজপুত্র একজনই থেকে গিয়েছেন। ফুটবলের রাজপুত্র একজনই - দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা। আজ বিশ্ব ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলারের জন্মদিনে আসুন আমরা তাকে স্মরণ করি।
দিয়েগো মারাদোনার ফুটবল কেরিয়ার ও তার পরে নানা অসাধারণ মুহুর্তে ভরা - সব কিছু নিয়ে লিখতে গেলে মহাভারত হয়ে যাবে। তবে এর মধ্যে থেকে বাছাই করা ১০টি বিশেষ মুহুর্তের কথা তুলে ধরব, যা থেকেই বোঝায় - মারাদোনার মত কেউ হতে পারবেন না।
১. ফিফার অনুষ্ঠানের মাঝপথেই বেরিয়ে যান
ফিফার রাজনীতি নিয়ে বরাবরই সরব ছিলেন মারাদোনা। বরাবরই বিশ্ব ফুটবল নিয়ামক সংস্থার অপছন্দের চোখে ছিলেন মারাদোনা। কিন্তু যখন ফিফা শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার প্রদান করে, তা দর্শকদের ভোটে জিতে নেন দিয়েগো মারাদোনা। কিন্তু সেই মঞ্চেই ফিফা আরও একটি পুরষ্কার নিয়ে আসে, যা কোনও অজ্ঞাত একটি কমিটি উপহার দেন পেলেকে। সেই সময়েই অনুষ্ঠান ছেড়ে নিজের বাড়ি চলে যান মারাদোনা।
২. ম্যাচের পর প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের সাথে মারপিট
দুই বছর বার্সিলোনায় চুটিয়ে ফুটবল খেলেছেন মারাদোনা। তবে সেই সময়ের উল্লেখযোগ্য মুহুর্ত আসে ১৯৮৪ সালের কোপা ডেল রেতে। অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের সাথে ম্যাচের পর প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের ক্যারাটে কিক মারতে যান মারাদোনা।
৩. প্রতিপক্ষই যখন সিংহাসন প্রদান করলেন মারাদোনাকে
আর্জেন্টিনায় জিমনেসিয়াকে এক সময় কোচিং করিয়েছিলেন মারাদোনা। আর সেই সময় নিউওয়েল ওল্ড বয়েজের বিরুদ্ধে ম্যাচে এক অবাক কান্ড ঘটেছিল। প্রতিপক্ষের ম্যানেজার হওয়া সত্ত্বেও মারাদোনাকে বিশেষ সিংহাসনের ব্যবস্থা করে দিয়েছিল নিউওয়েল কর্তৃপক্ষ।
৪. দর্শকদের কটুক্তিতে ক্যামেরার সামনে গালিগালাজ
১৯৯০ বিশ্বকাপের ফাইনালে যখন আর্জেন্টিনার জাতীয় সঙ্গীত বেজেছিল, তখন জার্মান সমর্থিত দর্শকদের তরফ থেকে কটুক্তি উড়ে এসেছিল, মূলত সেই টুর্নামেন্টে আর্জেন্টিনার খারাপ ফুটবলের জন্য। কিন্তু সেই সময় যোগ্য জবাব দেন মারাদোনা, ক্যামেরার সামনে 'হিগো জে পুটা' বলেন জার্মানদের উদ্দেশ্যে।
৫. বাবা হওয়ার পর এ কেমন উক্তি
এই নিয়ে কেবল একটি উক্তিই যথেষ্ট। নিজের সন্তানদের নিয়ে মারাদোনা একবার বলেছিলেন, "আমার বৈধ সন্তান হল ডালমা ও জিয়ান্নিয়া। বাকিরা অর্থ ও বোকামোর ফলাফল।"
৬. সাংবাদিকের পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন
২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার কোচ থাকাকালীন, এক সাংবাদিকের পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন মারাদোনা। আর তার উপর, সেই সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে গালিগালাজও করেন দিয়েগো।
৭. টমাস মুলারকে 'বলবয়' ভেবে সাংবাদিক বৈঠক থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ
২০১০ বিশ্বকাপেই আর এক মুহুর্ত। জার্মানির বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত হন আর্জেন্টিনার কোচ দিয়েগো মারাদোনা, আর জার্মানির তরফ থেকে এসেছিলেন টমাস মুলার, যিনি সেই বিশ্বকাপে একজন উঠতি তারকা ছিলেন। সেই সময় মুলারকে বলবয় ভেবে তাকে সাংবাদিক বৈঠক ছাড়ার হুমকি দেন মারাদোনা।
৮. ফটোগ্রাফারের গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেন
২০০০ সালে, এক ফটোগ্রাফার মারাদোনার ছবি তুলতে তাকে তাড়া করে বসেন। এর জবাবে, মারাদোনা সেই ফটোগ্রাফারের গাড়ির কাঁচে ঘুসি মেরে ভেঙে দেন।
৯. সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বন্দুক চালান মারাদোনা
১৯৯৪ সালে, যখন মারাদোনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অনেকটাই আগ্রহী হয়েছিলেন সাংবাদিকরা, তখন পালটা জবাব দেন মারাদোনা। মোরেনোয় তার বাড়ির সামনে সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে, মারাদোনা একটি রাইফেল নিয়ে হাজির হন, কিছু গুলিও চালান। আর এর জেরে কিছু সাংবাদিক হালকা আহত হন।
১০. ঈশ্বরের হাত
১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতাব্দীর সেরা গোলের ঠিক আগেই বিতর্কিত গোল করে দেন মারাদোনা। নিজের হাত দিয়ে গোল করেন মারাদোনা, যা ইংরেজ গোলকিপার পিটার শিলটন বুঝতে পারলেও রেফারি অজ্ঞাত ছিলেন। পরে সেই কুখ্যাত গোলটিই হ্যান্ড অফ গড হিসেবে বিবেচিত হয়ে যায়। বলা ভালো, মারাদোনা যেন ফকল্যান্ড যুদ্ধের বদলা নিয়ে নেন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে।