কেন অশান্ত ভূস্বর্গে ক্রিকেটের অগ্রগতির দায়িত্ব নিতে চান সুরেশ রায়না? জানতে পড়ুন...

এক্সট্রা টাইম নিউজ ডেস্ক : মহেন্দ্র সিং ধোনির পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও গত ১৫ আগস্ট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন। আর এবার কোচিংয়েও নেমে পড়তে চান সুরেশ রায়না। তাও আবার সেই কাজটা নিজের জন্মভূমি জম্মু-কাশ্মীর থেকেই শুরু করতে চান এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। অশান্ত কাশ্মীরের গরীব-দুঃস্থ ছেলেদের ক্রিকেট পাঠ দিয়ে তাদের সামাজিক মর্যাদা দিতে বদ্ধপরিকর রায়না। সেইজন্য জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের চিঠিও লিখলেন তিনি।
দেশের অন্যান্য প্রান্তের তুলনায় ক্রিকেটে অনেকটাই পিছিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর। পারভেজ রসুল উঠে এসেছেন। আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার ইরফান পাঠান জম্মু-কাশ্মীর রঞ্জি দলে যুক্ত হয়েছিলেন। তবে এতে ভূস্বর্গের সামাজিক পরিকাঠামোর কোনও বদল ঘটেনি। এখনও 'একে 47'এর গুলি ও গ্রেনেডের শব্দেই কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের ঘুম ভাঙে। কোনও বিষয়ে প্রতিবাদ করতে চাইলেই শ্রীনগর থেকে লেহ পর্যন্ত স্থানীয় ছেলেরা মুখে কাপড় বেঁধে পাথর বৃষ্টি করেন। ফলে এমন পরিবেশ থেকে ক্রিকেটার হয়ে ওঠার চ্যালেঞ্জটা অত্যন্ত কঠিন। আর ঠিক এই ক্ষেত্রেই সাহায্য করতে ইচ্ছুক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জম্মু ও কাশ্মীরের ডিজিপি দিলবাগ সিংকে ইতিমধ্যেই লিখিতভাবে নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন। পিছিয়ে পড়া বাচ্চাদের ক্রিকেট খেলায় উদ্বুদ্ধ করতে চাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রায়না।
আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে, ভূস্বর্গে তরুণদের ব্যাট-বল হাতে তুলে নিতে উৎসাহ দিতে চান তিনি। চিঠিতে লিখেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রত্যন্ত গ্রাম, স্কুল, কলেজ থেকে প্রথমে প্রতিভা বাছাই করে তাদের একসঙ্গে প্রশিক্ষণ দেবেন তিনি। যাতে তারাই ভবিষ্যতে ভারতীয় ক্রিকেটের মুখ উজ্জ্বল করে। পাশাপাশি এই অভিযানকে সফল করতে পাঁচটি পয়েন্টেরও উল্লেখ করেছেন সুরেশ। সেগুলি হল:
১) জম্মু ও কাশ্মীরের স্কুল, কলেজ ও গ্রামীণ এলাকা থেকে প্রতিভার খোঁজ।
২) তাদের জন্য প্রশিক্ষণ বা মাস্টার ক্লাসের ব্যবস্থা।
৩) মানসিক চাপ নিতে শেখানোর পাঠও দেওয়া হবে তাদের।
৪) শরীরচর্চার জন্য করানো হবে বিশেষ ক্লাস।
৫) স্কিল ট্রেনিং।
'কর্মভুমি' উত্তরপ্রদেশ থেকে খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুনাম অর্জন করলেও, এবার 'জন্মভূমি'কে কিছু ফিরিয়ে দিতে চান। তাঁর দু'চোখে এখন জম্মু ও কাশ্মীরে ক্রিকেটের অগ্রগতির স্বপ্ন। তবে তাঁর এই স্বপ্ন কতটা সফল হবে সেটাই দেখার।