'দাদার কীর্তি'। করোনার পর আমফান বিধ্বস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন সৌরভ। বিস্তারিত পড়ুন...

নিজস্ব প্রতিনিধি: একেই বলে 'দাদার কীর্তি'। করোনা যুদ্ধে আগেই শামিল হয়েছিলেন। এবার আমফান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক তথা বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। একটি মোবাইল সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আমফান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন মহারাজ ও তাঁর 'সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন'। চাল,ডাল,তেল সহ জরুরী সামগ্রী প্যাকেটে করে দশ হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন ভারতের অন্যতম সেরা অধিনায়ক। জরুরী সামগ্রীর সঙ্গে অবশ্যই দেওয়া হল মাস্ক। কারণ, করোনা আতঙ্ক এখনও বর্তমান। ত্রাণের এই সামগ্রী পৌঁছে যাবে সুন্দরবন ও পশ্চিম মেদিনীপুরের আমফান বিদ্ধস্ত অঞ্চলে। সৌরভের এই সমাজসেবামূলক কাজের ট্যাগ লাইন বেশ চমৎকার, 'বাংলা আবার দাঁড়াবে আগের মত'।
কয়েক মাস আগে করোনা যুদ্ধে শামিল হয়ে ৫০ লক্ষ টাকার চাল অনুদান করেছিলেন মহারাজ। লকডাউনের জেরে সমস্যায় পড়া গরিব ও দুঃস্থ মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। কাজকর্ম বন্ধ থাকায় দু'বেলা ভাত জোগাড় করতে হিমশিম খাওয়া মানুষদের মুখে ভাত তুলে দিয়েছিলেন বাঙালির প্রিয় দাদা। করোনা আতঙ্কের মধ্যেই অনুদানের চাল পৌঁছে দিতে সৌরভ চলে গিয়েছিলেন বেলুরমঠ ও ইস্কন মন্দির। রাজ্যের বিভিন্ন এনজিও এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অনুদানের সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিলেন প্রান্তিক মানুষদের কাছে। মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি সৌরভ বারবার আবেদন করেছিলেন লকডাউন মেনে বাড়িতে থাকার জন্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় বারংবার বার্তা দিয়েছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক। লকডাউনে পুলিশের প্রশংসা করার পাশাপাশি সরকারের করোনা রিলিফ ফান্ডে অনুদান দেওয়ার জন্য মানুষের কাছে ট্যুইট করে আবেদন করেছিলেন সৌরভ।
মহারাজ বলছিলেন, "এই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে দুঃস্থ মানুষদের হাতে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া সবচেয়ে জরুরি। সেটাই করছি। এর আগে একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কাজ করলাম। এবার একটি মোবাইল সংস্থা এগিয়ে এল। আসলে আমরা ভাগ্যবান যে ভালভাবে জীবনযাপন করতে পারছি। কিন্তু সুন্দরবন-মেদিনীপুরের মানুষদের অবস্থা চোখে দেখা যায় না। তাই আমার আবেদন ওই মানুষগুলোর পাশে সমাজের সবাই এগিয়ে আসুন।"
করোনার পর এবার আমফানের দাপটে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য ক্ষেত্রেও একইভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন সৌরভ। দিন কয়েক আগে এক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ফান্ড রেইজ প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন মহারাজ। বুধবার বেহালায় নিজের অফিস থেকে আরেক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা জন্য ত্রাণ পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন। মূলত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ফাউন্ডেশনের সঙ্গে বেসরকারি সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়। ফ্ল্যাগ অফ করেন সৌরভ স্বয়ং। দীর্ঘদিন বাড়িতে থাকার পর দিন কয়েক ধরেই বাড়ি সংলগ্ন অফিসে কাজের জন্য যাচ্ছেন সৌরভ। তবে সেখানেও মুখে মাস্ক পড়ে সব সময় দেখা যাচ্ছে মহারাজকে। ক্রিকেটীয় সমস্ত কাজকর্ম করে চলেছেন নিঃশব্দে।
এই বিষয়ে শাওমি'র পূর্বাঞ্চলের রিজিওনাল ম্যানেজার অমিতাভ বিশ্বাস বলেন, "আমফানের জন্য রাজ্যের একাধিক জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সৌরভ গাঙ্গুলি ফাউন্ডেশন আমাদের পাশে থাকার জন্য আমরা মানসিকভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছি। উনি যেভাবে ত্রাণের কাজে এগিয়ে এসেছেন, তাতে ওনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।"