হাবাসকে টেক্কা দিলেন কিবু ভিকুনা...

গোপাল রায়: দুটো ক্লাবই ভারত সেরা। একটা আই লিগে। অপরটি আইএসএলে। এরপরেও একটি ক্লাব থাকবে। অন্যটির ভবিষ্যৎ আইএসএল ক্লাবের সঙ্গে মার্জার। যা হবে চলতি বছরের ১ জুনে।
মার্জার হলে ফুটবলারের সংখ্যা যে কমবে, এই ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। অনেকেই চাকরি হারাবেন। এখন দুটো ক্লাব মিলিয়ে যা ফুটবলার আছে, তার অর্ধেক হয়ে যাবে। এই ক্ষেত্রে অবশ্য এটিকের বেশিরভাগ ফুটবলারই টিকে যাবে ও মোহনবাগানের বেশিরভাগ ফুটবলার ছাঁটাই হয়ে যাবে। যদি বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না হয়। সত্যি দুঃখজনক ঘটনা। দুঃখজনক হলেও, এটাই রূঢ় বাস্তব।
যেমন হাবাসের চাকরি পাকা হলেও, কিবুর কিন্তু এখনও নয়। ঠিক তেমনই রয় কৃষ্ণা, এডু গার্সিয়া, ডেভিড উইলিয়ামসদের চাকরি পাকা হলেও, হাবাসের দলে কিন্তু চাকরি পাকা নয় গঞ্জালেস, মোরান্তে, পাপা বাবাকারদের। এদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হবে বোর্ড মিটিংয়ে।
এরপরেও যদি আপনি ভোট নেন, ভারতীয় ফুটবলের মক্কাকে গৌরবান্বিত করা দুই কোচের মধ্যে কাকে বেশি পছন্দ আপনার? কিবু না হাবাস? দ্বি-মত থাকলেও, বেশিরভাগই ভোট পড়বে কিবুর দিকে। তার কারণ একটাই, অনেক বেশি মন টেনেছে কিবুর ফুটবল। সেই তুলনায় হাবাস অনেক বড় মাপের কোচ হলেও, তাঁর ফুটবলে সেই চোখের আরাম নেই। ডিফেন্স শক্তপোক্ত করে প্রতি-আক্রমন নির্ভর ফুটবল খেলা। সেখানে কিবুর ফুটবল যেন সবুজ ঘাসে আল্পনা দিতে দিতে প্রতিপক্ষ গোলমুখে এগিয়ে চলা।
শুধু তাই তাই নয়, হাবাসের কোচিং স্টাইলে বল পজেশনের সঙ্গে যদি কিবুর কোচিং স্টাইলের বল পজেশনের গড় তুলনা করা যায়, তাহলে দেখা যাবে এটিকে কোচের থেকে বল পজেশনে অনেক এগিয়ে মোহনবাগান কোচ। যদিও দুজনেরই কার্যকরীতা এক। দুজনেই জিততে জানেন। না হলে হাবাস কীভাবে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হলেন, আর কিবু চার ম্যাচ বাকি থাকতে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হলেন!
আপনি হয়তো বলতেই পারেন কিবু ভিকুনা যে সব দলের বিরুদ্ধে খেলেছে, সেই সব দল হাবাসের দলের তুলনায় অপেক্ষাকৃত অনেকটাই দুর্বল। কোথায় ইস্টবেঙ্গল, গোকুলাম, চার্চিল, রিয়াল কাশ্মীর। আর কোথায় এফসি গোয়া, বেঙ্গালুরু, চেন্নাইয়ন এফসি, কেরালা ব্লাস্টার্স।
হয়তো সত্যি। অর্থে, ধারে-ভারে আই লিগের তুলনায় এবারে অনেক বেশি শক্তিশালী আইএসএলের দলগুলো।
কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে কিবু ভিকুনা কাদের নিয়ে খেলেছেন। আর হাবাস খেলেছেন কাদের নিয়ে। কিবু খেলেছেন শেখ সাহিল, নাওরেম, শুভ ঘোষদের মতো জুনিয়রদের নিয়ে। সেখানে হাবাস খেলেছেন প্রবীর দাস, প্রীতম কোটাল, সুসাইরাজদের মতো অভিজ্ঞ সিনিয়রদের নিয়ে।
যদিও এই তুলনা হয়তো অর্থহীন। তারা দু-ধরণের কোচ। দু-ধরণের তাদের খেলার স্টাইল। দু-ধরণের তাদের দল। দু-ধরণের খেলার ফরম্যাট। তাও বলব, হাবাসের মতো বড় মাপের কোচ কিন্তু শুধুই ট্রফি জিতেছেন। আর কিবু ভিকুনা, ট্রফি ও মন -- দুটোই জিতেছেন।
আর এখানেই হাবাসের এটিকে টেক্কা দিয়েছেন মোহনবাগানের কিবু ভিকুনা।
পরের মরসুমে হয়ত হাবাসের কোচিংয়ে নাও থাকতে পারেন কিবু। সেক্ষেত্রে অন্য কোন আইএসএল দলকে কোচিং করাতেই পারেন কিবু। তখন আমনে সামনে লড়াইয়ে বোঝা যাবে কে বড় কোচ!