সমাজের প্রবল অবজ্ঞা ও আর্থিক অক্ষমতাকে হারিয়ে অলিম্পিকে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করলেন ভবানী দেবী

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : ভারতীয় ক্রীড়ামহলে ফেন্সিং আজও বড়ই অজানা। কিন্তু এই ঐতিহাসিক খেলাটিকে অলিম্পিকের মত বড় জায়গায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখলেন তামিলনাড়ুর মেয়ে ভবানী দেবী। টোকিও অলিম্পিকে ফেন্সিং ইভেন্টে প্রথম ম্যাচ জিতেও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে ছিটকে যান ভবানী। কিন্তু তার লড়াই প্রশংসিত সর্বত্র।
তবে ভবানী দেবীর এই লড়াই সহজ ছিল না। তার পিতা চেন্নাইয়ের এক মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন। আর তার জেরে পুরোহিতের মেয়ে ক্রীড়ায়, বিশেষত এমন অজানা খেলায় মনোনিবেশ করার জেরে সমাজের মানুষরা নানা কটুক্তি শুনিয়েছিল ভবানী ও তার পরিবারকে। কিন্তু মেয়ের প্রতি প্রবল আস্থা ছিল বাবা-মায়ের।
বাঁশের লাঠি দিয়ে খেলা শুরু করতেন ভবানী। ভোর সাড়ে পাঁচটায় রোজ স্টেডিয়ামে গিয়ে অনুশীলন করতেন তিনি, তারপর সেখান থেকে স্কুল গিয়ে আবার স্টেডিয়ামে যেতেন ভবানী। বছরের পর বছর এই একই রুটিনে অনুশীলন করে যেতেন তিনি। দশম শ্রেণী পাশ করার পর চেন্নাই থেকে থালাসেরি চলে যান তরুণী ভবানী।
কিন্তু আর্থিক দিক থেকে একটি চাপ ছিলই। ভবানীর পরিবার আর্থিকভাবে তেমন স্বচ্ছ্বল ছিল না। আর এই অবস্থায় ২০১৫ সালে ভবানীর সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছিল গো স্পোর্টস ফাউন্ডেশন। আর তাদের অধীনে একটি অ্যাথলিট মেন্টরশিপ প্রোগ্র্যামে অনুশীলন করেন ভবানী।
আর তারপর বাকিটা ইতিহাস। ইতালীয় কোচ নিকোলা জানোত্তির কাছে গত পাঁচ বছর ধরে অনুশীলন করছেন ভবানী। দুটি সেশন মিলিয়ে মোট পাঁচ ঘন্টার অনুশীলন আর ফিজিওথেরাপির সেশন চালিয়ে চলেছেন তিনি। যদিও অলিম্পিকে ব্যর্থই হলেন ভবানী, তবে আশা রাখেন, ভারতকে গর্বিত করার ক্ষমতা রয়েছে তার।