কেন মহম্মদ শামিকে স্ত্রী ও কন্যার জন্য ৪ লক্ষ টাকা ভরণপোষণ দিতে বলা হল? বিচারপতির ব্যাখ্যা জানুন

Photo-Facebook/Shami
এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ শামিকে তাঁর স্ত্রী ও কন্যার ভরণপোষণ বাবদ প্রতি মাসে ৪ লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। চলমান আইনি লড়াইয়ের প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ এসেছে, যা পূর্বের ঠিক করা ১.৩০ লক্ষ টাকার তুলনায় অনেক বেশি। ২০২৩ সালে জেলা সেশনস কোর্টের রায়ে ওই পুরনো পরিমাণ নির্ধারিত হয়েছিল।
এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শামির ভক্তরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। অনেকেই মন্তব্য করেন যে, শামিকে এত বেশি ভরণপোষণ দিতে বাধ্য করা উচিত হয়নি। তবে বিচারপতি তাঁর রায়ে ব্যাখ্যা করে বলেন, শামির আয়, কন্যার ভবিষ্যৎ এবং স্ত্রী হাসিন জাহানের বৈবাহিক জীবনে যেই জীবনযাপন ছিল, তা মাথায় রেখেই এই অঙ্ক নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিচারপতি বেঞ্চ জানায়— “স্বামী পক্ষের আয়, আর্থিক বিবরণ ও উপার্জন থেকে স্পষ্ট যে তিনি উচ্চ পরিমাণ ভরণপোষণ দিতে সক্ষম। স্ত্রী যিনি এখনও অবিবাহিত এবং কন্যাসন্তান নিয়ে একা থাকছেন, তিনি সেইরকম ভরণপোষণের অধিকারী যা তিনি বিবাহকালীন সময়ে উপভোগ করতেন এবং যা তাঁর ও তাঁর সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে পারে।”
বিচারপতি আরও বলেন— “অতিরিক্ত পরিমাণ অর্থ দেওয়ার প্রশ্ন যেমন আসে না, তেমনই খুব কম অর্থ নির্ধারণ করাও গ্রহণযোগ্য নয়।”
এই রায়ের পর হাসিন জাহান আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গত সাত বছরে আমার প্রায় সবকিছু হারিয়ে ফেলেছি নিজের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে। আগে মেয়েকে ভালো স্কুলে ভর্তি করতে পারিনি। এখন অন্তত সেই সুযোগ পাব। আমি কৃতজ্ঞ।”
উল্লেখ্য, হাসিন জাহান মাসে মোট ১০ লক্ষ টাকা ভরণপোষণ দাবি করেছিলেন— যার মধ্যে ৭ লক্ষ টাকা নিজের জন্য এবং অতিরিক্ত ৩ লক্ষ টাকা মেয়ের জন্য।
২০১৮ সালের মার্চ মাসে জাহান শামি এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে যাদবপুর থানায় এফআইআর দায়ের করেন। অভিযোগ ছিল, দাম্পত্য জীবনে ‘চরম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন’-এর, যা দায়ের করা হয়েছিল গৃহসহিংসতা প্রতিরোধ আইনের (PWDV Act, 2005) ১২ নম্বর ধারা অনুযায়ী। পাশাপাশি, কন্যাসন্তানের প্রতি ‘অবিচার ও অবহেলার’ অভিযোগও তোলেন তিনি।
শুধু তাই নয়, তিনি শামির বিরুদ্ধে পণপ্রথা সংক্রান্ত নির্যাতন ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের মতো গুরুতর অভিযোগও এনেছিলেন। তিনি দাবি করেন, শামি তাঁর পরিবারের আর্থিক দায়িত্ব নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন।