বুন্দেশলিগার '৫০+১' নীতি অবলম্বনে এক তরুণের স্বপ্নে ভর করে ভারতে গড়ে উঠছে এক ফুটবল ক্লাব

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : বুন্দেশলিগার ৫০+১ নীতি অত্যন্ত সুপরিচিত ও জনপ্রিয় ফুটবল মহলে। এই নীতির মাধ্যমে বুন্দেশলিগার প্রতিটি ক্লাবের ক্ষেত্রে নির্বাচন সহ সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সমর্থকদের প্রাধান্য থাকবে। আর এর জেরেই প্রস্তাবিত ইউরোপিয়ান সুপার লিগে অংশ নেয়নি জার্মানির কোনও ক্লাব। যদিও এই নীতি একাধিক ফুটবল দেশ, যেমন স্পেন, ইংল্যান্ড ও ইতালিতে গ্রাহ্য করা হয়নি, যেখানে কর্পোরেটই শেষ কথা।
আর সেই কর্পোরেটের কড়াঘাত ভারতীয় ফুটবলে আসছে। মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল নামেই সমর্থকদের ক্লাব হলেও শেষ কথা বলেন কর্মকর্তা ও গুটিকয়েক পোষা সদস্যরা। আর আইএসএলের দৌলতে কর্পোরেটের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে একাধিক ক্লাব, যার গ্রাসে পড়েছে মোহনবাগান, আর ঝামেলায় পড়ছে ইস্টবেঙ্গলও।
কিন্তু বুন্দেশলিগার এই নীতিকে অবলম্বন করেই ভারতে গড়ে উঠেছে একটি ক্লাব, আর সেটি এনেছেন ২১ বছরের এক তরুণ ফুটবলপ্রেমী। শুনতে অবাক লাগলেও এটি সত্যি। এই ক্লাবটির নাম টেকট্রো স্বদেশ ইউনাইটেড এফসি। হিমাচল প্রদেশের এই ক্লাব ইতিমধ্যেই আইলিগ দ্বিতীয় ডিভিশনের যোগ্যতা অর্জন করেছে। আর সমর্থকদের ক্লাবে যোগদানের জন্য রেজিস্ট্রেশন চালু করেছে, যেমনটা কোনও ক্লাবে সদস্যপদ চালু করা হয়।
২১ বছরের তরুণ ফুটবলপ্রেমী নীরজ খোলিয়া একসময় একটি ইউটিউব চ্যানেল চালাতেন, যার নাম ছিল টেকট্রো। সেই চ্যানেলে ভারতীয় সিনিয়র দল সহ যুব দলগুলির খেলা লাইভ স্ট্রিমিং করত। যখন বড় বড় ক্রীড়া চ্যানেলগুলি ভারতীয় ফুটবলের সম্প্রচারে না করত, তখন টেকট্রোই এই বিষয়ে এগিয়ে আসত। বলা বাহুল্য, আর্জেন্টিনার যুব দলকে ভারত যে ম্যাচে হারিয়েছিল, সেই ম্যাচের একমাত্র সম্প্রচারকারক ছিল এই টেকট্রো। কিন্তু ইউটিউবে কপিরাইটের কারণে সেই চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায়।
কিন্তু সেই কঠিন সময়েও দমেননি খোলিয়া। লখনউ সুপার ডিভিশনে তরুণতম ফুটবলার হিসেবে খেলার পর তিনি এই ইউটিউব চ্যানেল খোলেন। আর যখন এই চ্যানেল বন্ধ হয়ে যায়, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নেন ফুটবল টিম গড়ার। স্থানীয় প্রতিভাবান ফুটবলার সহ নিজের সহ খেলোয়াড়দের দলে নিয়েছিলেন খোলিয়া। পেশাদারিত্ব নয়, বরং ফুটবল প্রেমের জেরে তারা খেলতেন। আর বিভিন্ন টুর্নামেন্ট জিতে পুরষ্কার মূল্য দিয়ে নিজেদের উন্নতিতে কাজে লাগাতেন।
আর এই উদ্যোগের কথা শুনে এগিয়ে আসেন মিনার্ভার কর্মকর্তা রঞ্জিত বাজাজ। সেই সময়ে আইলিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া মিনার্ভা পাঞ্জাবের মূল দল ও রিজার্ভ দলের বিরুদ্ধে দারুণ খেলে টেকট্রো স্বদেশ ইউনাইটেড। আর তা দেখে রঞ্জিত বাজাজ এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়ান।
আজ টেকট্রো স্বদেশ ইউনাইটেড এফসির চোখে স্বপ্ন রয়েছে, ভারতীয় ফুটবলের শীর্ষে নিজেদের দেখার। শুধু পেশাদারিত্ব নয়, বরং প্যাশন ও আবেগের জোরেও ফুটবলটা খেলা যায়, সেটি দেখিয়ে দিয়েছেন নীরজ খোলিয়া ও তার স্বপ্নপূরণের সারথী, টেকট্রো স্বদেশ ইউনাইটেড।