দর্শকদের স্টেডিয়ামের নোংরা জল খেতে বাধ্য করা হয়। রাজ্যের প্রশাসনকে একহাত নিলেন মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের মিডিয়া ম্যানেজার

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ রাজ্য সরকার থেকে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন কিংবা আই এফ এ, সবাইকে প্রায় ধুয়ে দিলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মিডিয়া ম্যানেজার রতন চক্রবর্তী! বললেন ক্রিকেটকে সুয়োরানী করতে গিয়ে রাজ্য ক্রীড়া দপ্তর স্টেডিয়ামের নোংরা জল খেতে বাধ্য করে ফুটবল সমর্থকদের। রতন চক্রবর্তীর সম্প্রতি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে একটি লেখায় পাওয়া গেছে কীভাবে চলে রাজ্য প্রশাসনের ক্রীড়া দপ্তর ও এদেশের ফুটবল নিয়ামক সংস্থারা।
ফুটবল ম্যাচগুলি হয় শহরের এক কোণায়, যুবভারতীতে, যেখানে বাস-ট্রেন-মেট্রো পাওয়া একটি সমস্যার কারণ, খেলাও শুরু হয় সন্ধ্যা ৭ঃ৩০ টায়। এবং ফুটবল খেলা দেখেন সাধারণ মানুষ। তাই প্রিয় দলের খেলা দেখে বাড়ি ফেরা একটি বড় সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে। অন্যদিকে ক্রিকেট হল এলিট ক্লাসের মানুষদের জন্য। ইডেন গার্ডেনের মতো শহরের হৃদপিণ্ডে থাকা ইডেন গার্ডেনে হয় খেলা। যদিও তথাকথিত এলিট ক্লাসের মানুষরা নিজেদের গাড়িতেই আসেন, তাদের গাড়ির জন্য থাকে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। শুধু যাতায়াত নয়। আরও একটি সমস্যার কথা তিনি তুলে ধরেছেন।
https://www.facebook.com/share/p/ZEx5oLXguMzUNZiX/?mibextid=xfxF2i
তিনি জানিয়েছেন একদিকে আইপিএলের ম্যাচে খাবার , পানীয়জল এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ঢালাও ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু ফুটবল ম্যাচ থাকলে সুপার জায়ান্ট কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করেও জলের ব্যবস্থা করতে পারেনা। রাজ্য প্রশাসনের গাফিলতিতে স্টেডিয়ামের নোংরা জল খেয়ে এই প্রবল গরমে তৃষ্ণা মেটাতে হয় ফুটবল সমর্থকদের। যেটা প্রশাসন কর্তারাই খেতে অস্বীকার করেন, তাই খেতে বাধ্য করা হয় দর্শকদের। এমনকি ভারতের ও বিশ্বের অন্যান্য স্টেডিয়ামের সঙ্গে তুলনা করে রতন লেখেন, পৃথিবীর কোথাও এই অব্যবস্থা নেই। দর্শকরা অন্তত টাকা দিয়ে জল আর খাবার কিনে খাবার সুযোগ পায়। এছাড়া খাবারের স্টল, ব্যাগ-হেলমেট রাখার ব্যবস্থা করতে পারা যায়না প্রশাসনের ক্রিকেট ও ফুটবলের মধ্যে দ্বিচারিতার জন্য। ক্রিকেট যেন সুয়োরানি আর ফুটবল দুয়োরানি। অতিরিক্ত বাস-মেট্রোর জন্যেও বারবার জানাতে হয় অনুরোধ। তাও যা মেলে, সেটা খুবই কম। কিন্তু আই পি এল চললে রাজ্যে সরকার অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে কাজ করে, সেটাও জানিয়েছেন মোহনবাগান সুপার জায়েন্টের মিডিয়া ম্যানেজার।
আইএসএলের মরশুম প্রায় শেষ, বাকি আর একটা ম্যাচ। ৪ মে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হবে আইএসএলের মেগা ফাইনাল। যেখানে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট মুখোমুখি হবে মুম্বই সিটি এফসির। পরপর তিন ম্যাচে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের ম্যাচে ৬২ হাজারেরও বেশি সমর্থকের আগমন ঘটছে মাঠে। এই উন্মাদনা, উপচে পড়া ভিড় দেখেও রাজ্য প্রশাসন ফুটবলের প্রতি উদাসীন, এমনটাই মত সুপার জায়ান্ট মিডিয়া ম্যানেজারের। আর সেই কারণেই নিজের ফেসবুক পেজে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন ব্যক্তি-সংস্থা নির্বিশেষে। ছাড়েননি বাংলার ফুটবল নিয়ামক সংস্থাকেও।
আরও পড়ুন: মোহনবাগানে জেমি ম্যাকলারেন? বড় অঙ্কের প্রস্তাব দিল সবুজ-মেরুণ ম্যানেজমেন্ট
আইএসএল-সুপার কাপ-আইলিগে বাংলার দলগুলির সাফল্যের পিছনে আইএফএ-এর ভূমিকা নেই এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। আই এফ এ শিল্ড উঠে গেছে আর কলকাতা লিগ আজ শূন্য এর পাশাপাশি সম্প্রতি এক পাঁচতারা হোটেলে এআইএফএফ-এর এক অনুষ্ঠানে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি কল্যাণ চৌবের সাথে আইএফএএর কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নিয়েও মন্তব্য করেছেন তিনি। আই এফ এ কর্তাদের তিনি গদ্দার আর মীরজাফরদের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, বাংলার ফুটবলকে শেষ করে দিয়ে এরা এখন কল্যান চৌবের সঙ্গে "দাঁত কেলিয়ে" ছবি তুলতে ব্যস্ত। শুধু তাই নয়, এ আই এফ এফ-এর বুধবারের ১৯৭৪-এর সোনার ছেলেদের সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানকেও তিনি "পাঁচতারা হোটেলের বোকা বোকা অনুষ্ঠান" বলেও উল্লেখ করেন।