গ্যালারি : এক নজরে দেখে নিন ইউরো ২০২০ এর ১১টি রণভূম ও তার যাবতীয় তথ্য

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : এই প্রথমবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হবে গোটা ইউরোপ জুড়ে। ইউরোপের ১১টি শহরের দুর্দান্ত স্টেডিয়ামগুলিতে আয়োজিত হবে ৬০তম ইউরো। যদিও এই পরিকল্পনা কেবল এবারেই হবে, যেহেতু ২০২৪ ইউরোর আয়োজক হিসেবে রয়েছে জার্মানি।
এই পরিস্থিতিতে আসুন, দেখে নিই ইউরো ২০২০ এর সেই ১১টি দুর্দান্ত স্টেডিয়াম, যেখানে চলবে বিশ্বের সেরা দলগুলির মহারণ।
১. ওয়েল্বলি স্টেডিয়াম (লন্ডন, ইংল্যান্ড)
এবারের ইউরোর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলি আয়োজিত হবে এই ঐতিহ্যশালী স্টেডিয়ামে। গ্রুপ ডি এর তিনটি ম্যাচ ছাড়াও রাউন্ড অফ ১৬ এর একটি ম্যাচ, সেমিফাইনাল ও ফাইনালের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে লন্ডনে। ২০০৭ সালে নতুন করে তৈরি করা এই স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা ৫৪,৯৯০। এবং মাঠের আয়তনের দিক থেকে ক্যাম্প ন্যুয়ের পরেই আসে ওয়েম্বলি।
২. স্টাডিও অলিম্পিকো (রোম, ইতালি)
রোমের এই দুর্দান্ত স্টেডিয়াম সিরি আ এর দল রোমা ও লাজিওর ঘরের মাঠ। তবে আসন্ন ইউরোয় এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ এ এর তিনটি ম্যাচ ও কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ আয়োজিত হবে। এই ঐতিহ্যশালী স্টেডিয়ামে প্রচুর ইতিহাস রয়েছে। চারবার এই স্টেডিয়াম ইউরোপিয়ান কাপ (বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস লিগ) ফাইনাল আয়োজন করেছে। এছাড়া ১৯৮০ সালের ইউরো ফাইনাল ও ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনাল আয়োজন করেছে এই স্টেডিয়াম।
৩. আলিয়াঁজ এরিনা (মিউনিখ, জার্মানি)
৭০ হাজার আসনবিশিষ্ট এই অসাধারণ স্টেডিয়ামে খেলে থাকে বায়ার্ন মিউনিখ। তবে এবারের ইউরোতে গ্রুপ এফ এর তিনটি ম্যাচ সহ কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ খেলা হবে এই স্টেডিয়ামে। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে এই স্টেডিয়াম বেশ কিছু ম্যাচ আয়োজন করেছে, এছাড়া ২০১২ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালও আয়োজন করেছে মিউনিখের এই মাঠ।
৪. লা কার্তুজা (সেভিয়ে, স্পেন)
চলতি বছরের এপ্রিলে আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে এই স্টেডিয়াম, যখন বিলবাও ঘোষণা করে যে তারা কোনও ম্যাচ আয়োজন করবে না। এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ ই এর তিনটি ম্যাচ ও রাউন্ড অফ ১৬ এর একটি ম্যাচ আয়োজিত হবে। ১৯৯৯ বিশ্ব অ্যাথলেটিক চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য তৈরি করা এই স্টেডিয়ামে বেশ বড় বড় ম্যাচ আয়োজিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৩ সালের উয়েফা কাপ ফাইনাল।
৫. জোহান ক্রুয়েফ এরিনা (আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস)
নেদারল্যান্ডের এই দুর্দান্ত স্টেডিয়াম আয়াক্সের ঘরের মাঠ। কিন্তু এই মাঠে ইউরোর গ্রুপ সি এর তিনটি ম্যাচ ও রাউন্ড অফ ১৬ এর একটি ম্যাচ আয়োজিত হবে। ১৯৯৬ সালে তৈর হওয়া এই স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা ৫৪,৯৯০। এর আগে ইউরো ২০০০ এর পাঁচটি ম্যাচ এবং ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল আয়োজন করেছে এই স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামের বিশেষত্ব হল, এর ছাদ যখন খুশি খোলা বা বন্ধ করা যায়।
৬. অলিম্পিক স্টেডিয়াম (বাকু, আজারবাইজান)
এবারের ইউরোর অন্যতম বৃহত্তম স্টেডিয়াম হিসেবে বিবেচিত ৬৮,৭০০ আসন বিশিষ্ট অলিম্পিক স্টেডিয়াম। এই মাঠে গ্রুপ এ এর তিনটি ম্যাচ সহ কোয়ার্টার ফাইনালের একটি ম্যাচ আয়োজিত হবে। আজারবাইজানের দ্বিতীয় বৃহত্তম হ্রদ লেক বোইউক্সোরের পাশে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামে ২০১৯ সালের ইউরোপা লিগ ফাইনাল আয়োজিত হয়েছে।
৭. এরিনা ন্যাশনালা (বুখারেস্ট, রোমানিয়া)
গত দশকে তৈরি হওয়া এই দুর্দান্ত স্টেডিয়ামে গ্রুপ সি এর তিনটি ম্যাচ ও রাউন্ড অফ ১৬ এর একটি ম্যাচ আয়োজিত হবে। ২০১১ সালে তৈরি এই স্টেডিয়ামে রোমানিয়ার জাতীয় দল এবং স্টিউয়া বুকুরেস্টি দল খেলে। ২০১২ সালে ইউরোপা লিগ ফাইনাল আয়োজিত হয়েছিল এখানে।
৮. পুসকাস এরিনা (বুদাপেস্ট, হাঙ্গেরি)
এবারের টুর্নামেন্টের সব থেকে নতুন স্টেডিয়াম হল এই পুসকাস এরিনা। ২০১৯ সালে তৈরি হওয়া এই স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা ৬৭,৮৮৯। এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ এফ এর তিনটি ম্যাচ্ব রাউন্ড অফ ১৬ এর একটি ম্যাচ আয়োজিত হবে। এর আগে ফেরেঙ্ক পুসকাস স্টেডিয়াম থাকলেও সেটিকে ২০১৬ সালে ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে এই পুসকাস এরিনা।
৯. পার্কেন স্টেডিয়াম (কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক)
এবারের টুর্নামেন্টের সবথেকে ছোট মাঠ হিসেবে উঠে এসেছে এই পার্কেন স্টেডিয়াম। ডেনমার্কের এই স্টেডিয়ামে কেবল ৩৮ হাজার আসন রয়েছে। যদিও এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ বি এর তিনটি খেলা ও রাউন্ড অফ ১৬ এর একটি খেলা আয়োজিত হবে। এই স্টেডিয়ামের বিশেষত্ব এই যে, স্টেডিয়ামের লাগোয়া একটি মিশেলিন স্টার রেস্তোরাঁ রয়েছে। সুতরাং খেলা দেখার সাথে সাথে সুস্বাদু খাবারও পাওয়া যাবে এখানে।
১০. হ্যাম্পডেন পার্ক (গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড)
এবারের ইউরোর সব থেকে পুরোনো মাঠের সাথে আলাপ করে নিন। গ্লাসগোর এই মাঠটি ১৯০৩ সালে তৈরি হলেও ১৯৯৯ সালে এটি পুনরায় তৈরি করা হয়। ৫২ হাজার আসন বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামে গ্রুপ ডি এর তিনটি ম্যাচ ও রাউন্ড অফ ১৬ এর একটি ম্যাচ আয়োজিত হবে। এর আগে একাধিক বড় বড় ম্যাচ আয়োজিত হয়েছে এখানে। তিনটি ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনাল (১৯৬০, ১৯৭৬, ২০০২), দুটি কাপ উইনার্স কাপ ফাইনাল (১৯৬২ ও ১৯৬৬) এবং ২০০৭ উয়েফা কাপ ফাইনাল আয়োজন করেছে এই স্টেডিয়াম। এছাড়া ২০১২ অলিম্পিকের একটি ভেন্যু ছিল হ্যাম্পডেন পার্ক।
১১. ক্রেস্তোভস্কি স্টেডিয়াম (সেইন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া)
আরও এক নতুন স্টেডিয়াম হিসেবে উঠে এসেছে এটি। ২০১৮ ফিফা বিশ্বকাপের জন্য তৈরি হওয়া এই স্টেডিয়াম এবারের ইউরোর গ্রুপ বি এর তিনটি ম্যাচ, গ্রুপ ই এর তিনটি ম্যাচ ও একটি কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ আয়োজিত হবে। এই স্টেডিয়ামে ২০১৮ বিশ্বকাপের সাতটি ম্যাচ খেলা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তৃতীয় স্থান নির্ধারক ম্যাচও।