ফেব্রুয়ারি ৭ : কখনও রোদ , কখনও বৃষ্টি । গোটা আইএসএলে এটাই যেন লালহলুদের কাহিনী ।আজ কিন্তু গোটা ম্যাচেই রোদ ঝলমলে দেখালো মশাল বাহিনীকে । জামশেদপুর এফসিকে ২ - ১ গোলে হারিয়ে আসন্ন ডার্বির আগে কিছুটা অক্সিজেন পেল লালহলুদ।

প্রতি ম্যাচে প্রথম এগারোতে আধ ডজন পরিবর্তন করা এই মরশুমে লালহলুদের অলিখিত নিয়ম । এদিনও দলে একগুচ্ছ পরিবর্তন, তবে এই প্রথম সেই পরিবর্তন গুলি দেখে মনে হল ইতিবাচক কিছু ঘটলেও ঘটতে পারে । কারণ অবশ্যই 'কোটা'র খেলোয়াড়দের বদলে রাজু , সার্থক , সৌরভদের আগমন । ডিফেন্সে দুই যথাযথ স্টপার রাজু আর সার্থক আসতেই বদলে গেল লালহলুদ রক্ষণ । নেভিল মাঠের বাইরে যেতে বিদেশি কোটায় এই প্রথম একসাথে শুরু করার সুযোগ পেলেন মাত্তি , মাগোমা , পিলকিংটন আর ব্রাইট । আর তাতেই গোটা মাঝমাঠ নিজেদের পকেটে ভরে নিলো মশাল বাহিনী । অভিষেকেই পজিশন জ্ঞানে জাত চেনালেন আরেক বঙ্গসন্তান সৌরভ দাস । মিলন , অজয় যে জায়গায় বারবার ডোবাচ্ছিলেন দলকে , প্রথম দিন অন্তত সেই মাঝমাঠে ব্লকিং-এর কাজটি দৃঢ়তার সাথে করে দেখালেন তিনি ।

ম্যাচের মাত্র ছয় মিনিটের মাথায় নারায়ণের কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে লাল হলুদকে এগিয়ে দেন জার্মান তারকা মাত্তি স্টেনম্যান । আইএসএলে একমাত্র দল হিসেবে সেটপিস কোচ এনেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল । এতদিন ধরে বারবার প্রশ্ন উঠেছে সেটপিস কোচ টেরেন্স ম্যাকফিলিপ্সকে নিয়ে , এদিন কিন্তু গোটা মরশুমে প্রথম বার সেট পিসে সৃষ্টির ছোঁয়া দেখা গেল লালহলুদে । দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কিছুটা ম্যাচে আসার চেষ্টা করেছিল জামশেদপুর , এই সময় ভাস্কিসের একটি শট পোস্টে লেগে প্রতিহতও হয় । কিন্তু ৬৮ মিনিটে মাত্তি , পিলকিংটন যুগলবন্দীতে ইনশিওরেন্স গোলটি পেয়ে যায় লালহলুদ । পিলকিংটনের আরও একটি শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে , ব্রাইটও চেনা ঢঙে ইস্পাত নগরীর ডিফেন্স নিয়ে ছেলেখেলা শুরু করেন । লালহলুদ ঝড়ে তখন গেল গেল রব জামশেদপুর ডিফেন্সে । ভাগ্য সহায় থাকলে আরও এগিয়ে যেতে পারত এসসি ইস্টবেঙ্গল।

তবে শেষ কয়েক মিনিট অবশ্য বেশ চেপে ধরে জামশেদপুর এফসি । তারই ফলশ্রুতিতে ৮৪ মিনিটে একটি গোল ফেরত দেন হার্টলে । দীর্ঘ দিন পর ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে নেমেছিলেন বহুযুদ্ধের সৈনিক সুব্রত পাল । শেষ মুহূর্তে একটি নিশ্চিত গোল বাঁচান মিষ্টু ।

লক্ষ্য করার মতো বিষয় , আজ লালহলুদের ছয় ভারতীয়দের মধ্যে পাঁচ জনই বঙ্গ সন্তান , সঙ্গে লালহলুদের এককালের ঘরের ছেলে রাজু । লালহলুদ জার্সির মর্যাদা রাখতে গোটা ম্যাচে জান লড়িয়ে দিলেন নারায়ণরা। তাই দিনের শেষে কোটা সিস্টেমের বদলই যেন তিন পয়েন্ট এনে দিল লালহলুদকে ।