২০০ তম ম্যাচে জোড়া গোল সুনীলের , মুম্বাইকে হারিয়ে চমকে দিল বেঙ্গালুরু

ফেব্রুয়ারি ১৫: বেঙ্গালুরুর জার্সি গায়ে ২০০ তম ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন সুনীল । আর দুই শত ম্যাচ পেরিয়েও তিনি বুঝিয়ে দিলেন , সুনীল আছেন সুনীলেই ।
মনবীর, কোলাসো , পান্ডিতারা চমক দিচ্ছেন বটে , কিন্তু ভারতীয় ফুটবলে গোলের রাজা যে এখনও তিনিই সেটাই আরও একবার জানিয়ে দিলেন সুনীল । লীগের ওপরের তলায় বসে থাকা মুম্বাইকে হারিয়ে নৌশাদ মুসার ছেলেরা যেমন বাঁচিয়ে রাখলো প্লে অফের আশা তেমনই মুম্বাইয়ের হারে লীগ শীর্ষে অবস্থান পোক্ত হল এটিকে মোহনবাগানের । সমসংখ্যক (১৭টি) ম্যাচে মুম্বাই সিটি এফসির থেকে ২ পয়েন্টে এগিয়ে থাকলো হাবাসের দল । কাজেই এখন লীগ শীর্ষে থেকে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লীগে সুযোগ করে নেওয়ার ভাগ্য চলে এলো তাঁদের নিজেদের হাতে ।
এদিন ম্যাচ শুরুর মাত্র ২৫ সেকেন্ডের মাথায় সুনীলের দুরন্ত ক্রস ফিল্ড লম্বা বল ধরে উদন্ত যখন সেন্টার রাখলেন মুম্বাই সিটির বক্সে , তখনও হয়তো ঘুমই ভাঙেনি মুম্বাই ডিফেন্ডারদের । সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি ক্লেইটন । এরপর আক্রমণ প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে খেলা । বেঙ্গালুরুর সেন্ট্রাল ডিফেন্সে আজ ফ্রান গঞ্জালেসের সঙ্গে ছিলেন অনভ্যস্ত খাবরা । তাদের তালমিলের অভাবে বেশ কয়েকবার সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেননি রেনিয়ার , লে ফন্দ্রেরা । আবার উল্টোদিকে সুনীল - বার্তালুর দুরন্ত শট বাঁচান অমরিন্দরও । বাইশ মিনিটে সেট পিসে মাথা ছুঁইয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করে যান ক্লেইটন । বেঙ্গালুরুর হয়ে বেশ কয়েকটি নিশ্চিত গোল বাঁচান গুরপ্রীত সিং সান্ধু ।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে লোবেরার ছেলেরা । একসময় খেলা হয়ে দাঁড়ায় মুম্বাই আক্রমণ বনাম গুরপ্রীতের দস্তানার। ৫০ মিনিটে খাবরাকে বোকা বানিয়ে ২-১ করেন লে ফন্দ্রে । যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচ ঘুরতে পারে , তখনই ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন সুনীল । ৫৭ মিনিটে গুরপ্রীতের লম্বা বলে গোটা মুম্বাই রক্ষণকে বোকা বানিয়ে বেঙ্গালুরুর জার্সিতে নিজের ২০০ তম ম্যাচের প্রথম গোলটি করেন সুনীল । এরপর আরও চাপ বাড়ায় মুম্বাই সিটি এফসি । আবারও খাবরা - ফ্রানের বোঝাবুঝির অভাব কাজে লাগিয়ে ৭২ মিনিটে গোল করে যান ফন্দ্রে । রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে মুম্বাইয়ের মুহুর্মুহু আক্রমণে যখন দমবন্ধ অবস্থা বেঙ্গালুরু রক্ষণের তখনই ম্যাচের একদম শেষ দিকে দুরন্ত প্রতি আক্রমণে একক দক্ষতায় গোল করে যান সুনীল । ৩৬ বছর বয়সে যেভাবে গোটা ম্যাচ নিজের একশো শতাংশ দেওয়ার পরেও ৯৪ মিনিটে মাঠের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে দু দুজন ডিফেন্ডারকে দৌড় করিয়ে নিয়ে গিয়ে গোল করলেন ৩৬ বছর বয়সী সুনীল তা দেখে চ্যাম্পিয়নস লীগ সেমিফাইনালে বার্সার বিরুদ্ধে চেলসির হয়ে করা ফার্নান্দো তোরেসের বিখ্যাত গোলটিকে মনে করিয়ে দেয় । সামনের আগস্টে ৩৭শে পা দিতে চলা ছেত্রী যেন আবারও প্রমাণ করে দিলেন বয়স কেবল একটা সংখ্যা মাত্র। চ্যাম্পিয়নদের বয়স বাড়ে না ।
আইএসএলে ভারতীয় কোচরা দল পান না । কিন্তু বেঙ্গালুরুর নৌশাদ মুসাই হোন বা নর্থ-ইস্টের খালিদ জামিল । মগজাস্ত্রের জোরে বিদেশী কোচেদের ছেড়ে যাওয়া মরুভূমিতে তাঁরাই কিন্তু ফুল ফুটিয়ে দেখাচ্ছেন । আজও লোবেরার তারকা সর্বস্ব মুম্বাই সিটি এফসিকে কানমলা দিয়ে মুসা দেখিয়ে দিয়ে গেলেন এবার বোধহয় আইএসএলে ভারতীয় কোচদেরও সমান সম্মান দেওয়ার সময় এসে গেছে ।