বেঙ্গালুরুর কাছে হার , আশা শেষ লাল হলুদের

ফেব্রুয়ারি ২ : আরও একটা ম্যাচ , আরও একটা হার। বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লজ্জার হার এসসি ইস্টবেঙ্গলের।
৫ মিনিটের মাথায় মাত্তি ব্রাইট যুগলবন্দীতে নড়ে গিয়েছিল বেঙ্গালুরু ডিফেন্স , কিন্তু হরমনপ্রীত যে সিটারটি বাইরে মারলেন তাতে লাল হলুদের পুরোনো দিন হলে তিনি আর কোনোদিন জার্সি পেতেন কীনা সন্দেহ । এরপর হঠাৎই ১২ মিনিটের মাথায় গুরপ্রীতের লম্বা বলে পরাজিত হয়ে যায় গোটা ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স । নেভিলকে স্কুল ছাত্রের পর্যায়ে নামিয়ে এনে হেড দিয়ে বল নামিয়ে দেন সুনীল ছেত্রী , দুরন্ত শটে লালহলুদ জালে বল জড়িয়ে দেন ক্লেইটন । গোটা প্রথমার্ধে দুই মিডফিল্ডার লুয়াং আর অজয় ছেত্রীকে খুঁজতে হল দূরবীন দিয়ে। মাত্তির আক্রমণ যত ভালো , রক্ষণাত্মক দিক ততটাই নড়বড়ে । কাজেই যা হওয়ার তাই হল । যে জায়গায় একসময় মেহতাব , ষষ্ঠী দুলেরা খেলতেন সেই জায়গায় লালহলুদ মিড ফিল্ডারদের গুণে ব্যাঙ্গালুরুর মিডফিল্ডারা তখন যেন এক একজন ম্যাকালেলে। বারবার সেকেন্ড বল পেলেন সুনীলরা । প্রথমার্ধের একদম শেষে লালহলুদেরই প্রাক্তনী রাহুল ভেকে যখন লাল হলুদ বক্সে বল ফেললেন তখন ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডাররা যেন সান্ধ্য ভ্রমণে ব্যস্ত । পরাগের জোরালো শট পোস্টে লেগে দেবজিৎ এর গায়ে ধাক্কা খেয়ে ঢুকে যায় গোলে।
দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু পরিবর্তন করেন বটে লালহলুদ কোচ ফাউলার, কিন্তু তাতে আদেও কতটা যুক্তি আর কতটা আশা সেটা বোঝা মুশকিল । আমাদী হলওয়ে তো কলকাতা লীগে খেলার যোগ্য কীনা সন্দেহ । অন্যদিকে নৌশাদ মুসা দীর্ঘদিন আছেন ভারতীয় ফুটবলে । মাত্র দুজন বিদেশী নিয়ে শুরু করেও দেখিয়ে দিয়ে গেলেন মগজাস্ত্রের জোর । সুরেশ গোটা ম্যাচে আঠার মতো লেগে রইলেন ব্রাইটের সাথে । ব্রাইট দু একবার ছিটকে বেরোলেন বটে কিন্তু সাথে পেলেন না কাউকেই । ৮৫ মিনিটে সুনীলের শট ক্রস পিসে না লাগলে আরও বাড়তে পারতো ব্যবধান ।
আজকের হারের পর কার্যত শেষ লাল হলুদের শেষ চারের আশা। নতুন ম্যানেজমেন্ট , নতুন কোচ , দল গঠনে পাওয়া গেছে কম সময়। এসব নানা কারণে দলের জঘন্য পারফরম্যান্স মুখ বুজে সহ্য করে গেছেন লাল হলুদ সমর্থকরা। কিন্তু এবার লাল হলুদ কোচকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে । স্বদেশী খেলোয়াড়দের ওপর দোষ চাপিয়ে পার পাওয়া যাবে না । আমাদী , পিলকিংটন বা নেভিল , গোটা টুর্নামেন্টে যা খেলা দেখালেন তাতে তিনি কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। প্রতি ম্যাচে প্রথম এগারোতে একগাদা পরিবর্তন , সেকেন্ড ট্রান্সফার উইন্ডোতেও ডিফেন্স মেরামত না হওয়া এসবের দায় নিতেই হবে । রফিক , ইরশাদ ভালো খেলেও কী করে ব্রাত্য হয়ে গেলেন সেটাও তিনিই জানেন । আর ম্যাচ রিডিং নিয়ে যত কম বলা যায় ততই ভালো। আজও আমাদীকে পুরো সময় খেলিয়ে তুলে নিলেন স্টেনম্যানকে। সব মিলিয়ে আরও একটা মরশুমে মন ভাঙল মশাল ব্রিগেডের।