চেলসির ইউরোপ সেরার সাফল্যের পিছনে বড় ভূমিকা এক ভারতীয় যোগা ট্রেনারের

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : একটি পেশাদার ফুটবল দলের সাফল্যের পিছনে শুধু খেলোয়াড় ও কোচরাই দায়ী থাকেন না। সাপোর্ট স্টাফ এবং পর্দার পিছনে কাজ করতে থাকা কর্মচারীরাও এই সাফল্যের অংশ হিসেবে থাকেন। শনিবার চেলসির উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়।
আর ইউরোপ সেরা হওয়ার পিছনে চেলসিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন এক ভারতীয়। যার নাম বিনয় মেনন। খেলোয়াড়দের শারীরিক ফিটনেস ছাড়াও মানসিক ফিটনেস অত্যন্ত জরুরি হয়ে থাকে, আর এখানেই কাজ করে থাকেন বিনয়। ২০০৮ সাল থেকে চেলসির ওয়েলনেস কনসালটেন্ট এবং মাইন্ড স্ট্র্যাটেজিস্ট হিসেবে কাজ করে এসেছেন কোচির বিনয়।
কিন্তু একজন ভারতীয় যোগগুরু কিভাবে চেলসির মত হেভিওয়েট ক্লাবে দায়িত্ব পেলেন? এর পিছনে দায়ী স্বয়ং ক্লাবের কর্নধার রোমান আব্রামোভিচ। আসলে দুবাইয়ের এক প্রাক্তন ক্লায়েন্ট তাকে অনুরোধ করেন ইংল্যান্ডের বাসিন্দা এক রাশিয়ানের স্ত্রী ও মেয়ের মানসিক চিন্তা দূর করার। আর সেখানে পৌঁছে সেই রাশিয়ান পরিবার মেননের ইতিহাস সম্বন্ধে জেনে নেওয়ার পর হঠাতই তাকে একটি ফুটবল ম্যাচ দেখার আমন্ত্রণ জানায়।
আর সেই আমন্ত্রণ পেয়ে মেনন চলে যান লন্ডনের স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে, যেখানে তাকে ভিআইপি লাউঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়, আর সেখানে কর্নধারদের বক্সে তাকে বসানো হয়। এরপর যখন সেই রাশিয়ান নিজের পরিচয় বলেন, হতবাক হয়ে যান বিনয়। সেই রাশিয়ান ব্যক্তি হলেন রোমান আব্রামোভিচ।
শুরুতে খেলোয়াড়দের সাথে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হলেও প্রথমে বিনয়কে ড্রেসিংরুমে মানিয়ে নিতে সাহায্য করেন দিদিয়ের দ্রোগবা। বিনয়ের কাছে একটি সেশন নেওয়ার পরে মুগ্ধ হয়ে যান দ্রোগবা। আর তারপর একে একে সকল খেলোয়াড়রা আসেন বিনয়ের কাছে। এমনকি, রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়ার আগে ইডেন হ্যাজার্ডও তার কাছে সেশন সারতেন।
কিন্তু বিনয় মেনন ঠিক করেনটা কি? পুরোপুরি এটি যোগব্যায়াম নয়। এটি হল আধ্যাত্ম বিদ্যা, যা যোগবিদ্যার শেষ ভাগ। এটি একটি প্রোগ্র্যামের ভাগ যা সচেতনতা, সুস্থতা, মনোযোগ ও লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে। আর এই সেশন মাত্র ৪৫ মিনিটেই সারা যায়।
মেননের এই সেশন নিয়ে বেলজিয়ান সুপারস্টার ইডেন হ্যাজার্ড বলেছিলেন, "আপনি এক ঘন্টার সেশন করেন আর তারপর মনে হবে, হুঁশ। যেন সমস্ত চাপ সরে যায়। আর এক ঘন্টা ধরে, আপনি নিশ্চিন্তে থাকে, নিশ্চিন্তে।"
আর এর জেরে স্পষ্ট, চেলসির ড্রেসিংরুমে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বিনয়। আজ টিমো ওয়ের্নের, কাই হাভের্তস, এনগোলো কান্তের মত সুপারস্টার খেলোয়াড়দের মনকে শান্ত ও ধীরস্থির রাখার গুরুদায়িত্ব রয়েছে বিনয়ের। যার ফল দেখা গিয়েছে শনিবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে।