ফেব্রুয়ারি ৩ : অভিযোগ উঠেছিল আগেই , এবার নেমে এলো শাস্তির খাঁড়াও । রেফারিদের নিয়ে 'অপমানজনক' কথা বলার অভিযোগে ৪ ম্যাচ সাসপেন্ড হলেন লালহলুদ কোচ রবি ফাউলার। সঙ্গে জরিমানা হল ৫ লক্ষ টাকা ।

কখনও ন্যায্য পেনাল্টি থেকে বঞ্চিত করা , কখনও বা খেয়াল-খুশি মতো কার্ড দেখানো ; গোটা আইএসএলেই বারবার ভুল রেফারিং-এর খেসারত দিতে হয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে । একে তো দলের হতশ্রী পারফরম্যান্স অন্যদিকে হাস্যকর রেফারিং , সব মিলিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই লালহলুদ ডাগ আউট যেন বারুদের স্তূপ । তাতে আগুনের ফুলকি হিসেবে যোগ হয় মুম্বাই এফসি ম্যাচ । স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই ম্যাচের পর রেফারিদের তুলধোনা করে বসেন ব্রিটিশ কোচ । এরপরই রিপোর্ট যায় ফেডারেশনের কাছে ।

শুধু লালহলুদ বলে নয় , যত দিন যাচ্ছে এবারের আইএসএলে একাধিক ক্লাব শিকার হচ্ছে ভয়াবহ রেফারিং-এর । কিন্তু মুখে কুলুপ আইএসএল কর্তৃপক্ষের। উল্টে অত্যন্ত নিপুণ ভাবে এডিট করে ম্যাচের হাইলাইট থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে যাবতীয় বিতর্কিত অংশ । আসলে ধনকুবেরদের লীগে যা কিছু খারাপ বিজ্ঞাপন হতে পারে বা লীগের বাহ্যিক জাঁকজমকের আড়ালের দৈন্যতাকে প্রকাশিত করে দিতে পারে তার সবই খুব নিপুণ ভাবে চাপা দিয়ে দেওয়া হয় মসৃণ কার্পেটের তলায় ।

একথা কারুর জানতে বাকি নেই যে যাবতীয় ক্ষমতা বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে ফেডারেশন কেবলমাত্র ঠুঁটো জগন্নাথ ছাড়া কিছুই নয় এই মুহূর্তে । তাই রেফারিং নিয়ে ভুঁড়ি ভুঁড়ি অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও কোনও হেলদোল তাদের নেই ।

অন্যদিকে ফাউলার রেফারিং নিয়ে যতটা চিন্তিত ততটা যদি দল নিয়ে হতেন তাহলে হয়তো ইস্টবেঙ্গল জনতাকে এই দিন দেখতেই হত না । আত্মসমালোচনার বদলে তিনি অজুহাত খাড়া করে যাবতীয় দোষ অন্যের ঘাড়ে ঠেলতে সিদ্ধহস্ত। তার সহকারী , সমালোচনার জবাবে আজ যেভাবে ক্লাবের প্রশাসনিক টানাপোড়েন নিয়ে মন্তব্য করে বসলেন , তা অন্য কোনো লীগের অন্য কোনও বড় দলের সম্পর্কে করলে এক্ষুনিই তাঁকে স্যুটকেস গোছানো শুরু করে দিতে হত ।
সব মিলিয়ে গত বছরের কোয়েস অধ্যায়ের থেকেও যেন বেশী বিধ্বস্ত লালহলুদ তাঁবু। শতবর্ষ পার করার বছরে দুঃস্বপ্ন যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না ইস্টবেঙ্গল জনতার। সমর্থকরা গোটা মরশুম মুখ বুজে পাশে দাঁড়িয়েছেন দলের , কিন্তু এবার তাঁদেরও ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙছে । মশাল জনতার ভেতর ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকা ক্ষোভ দপ করে জ্বলে উঠলে কিন্তু দাবানল সময় লাগবে না !