হারের হ্যাটট্রিক করে রেফারি ও ফুটবলারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন রবি ফাউলার। বিস্তারিত পড়ুন...

নিজস্ব প্রতিনিধি : একে টানা তিনটি ম্যাচে গোল না পাওয়া এবং হারের হ্যাটট্রিক। এরমধ্যে আবার যোগ হল নিম্নমানের রেফারিং। তাঁর দলের ফুটবলাররা ম্যাচে প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ। তবে রেফারিং তো ভাল হতে হবে। এসসি ইস্টবেঙ্গলের হেডস্যার রবি ফাউলার'কে যেন ম্যাচের শেষে থামানোই যাচ্ছিল না। ভার্চুয়াল সাংবাদিক সম্মেলনে এসে একপ্রকার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফেললেন লিভারপুল লেজেন্ড। ফাউলারের মতে রেফারি সন্তোষ কুমারের দুটো সিদ্ধান্ত ম্যাচের দিক ঘুরিয়ে দিল। একইসঙ্গে তাঁর আরও দাবি আইএসএলের মঞ্চেও 'ভার' প্রযুক্তি ব্যবহার করা হোক।
বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়া জ্যাক মাঘোমা'কে রুখতে গিয়ে ফাউল করেন নর্থ ইস্টের আশুতোষ মেহতা। বডি কন্টাক্টের বিষয় বুঝে পরে তিনি হাত তুলে দেন। যদিও রেফারি পেনাল্টি দেননি। এরপর বক্সে হ্যান্ডবল করে জেরার্ড নাসের ছেলেরা। সেটা নিয়েও লাল-হলুদ রিজার্ভ বেঞ্চে ক্ষোভ বেড়েছে। আর তাই রেফারি সন্তোষ কুমার'কে কাঠগড়ায় দাঁড় করলেন ফাউলার। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ফাউলার বলেছেন, "মানছি সবাই মানুষ, কিন্তু এমন ন্যায্য পেনাল্টি বাতিল হলে কিছুই করার থাকে না। আইএসএলে পেশাদারিত্ব নিয়ে অনেক কথা হয়। কিন্তু এটা কি পেশাদারি মনোভাব রেফারিংয়ের নমুনা! আমার আর কিছুই বলার নেই। আপনারই বিচার করুন। শুধু বলব ওনার দুটি সিদ্ধান্ত খেলার গতিপথ বদলে দিল।"
শুধু তাই নয়। রেফারিদের উপর চাপ কমাতে ও ম্যাচের ফলাফল ঠিক রাখতে আইএসএলেও 'ভার' প্রযুক্তির আমদানি চাইছেন ফাউলার। এই বিষয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, "আমার মতে আইএসএলে 'ভার' প্রযুক্তি যোগ করা হোক। কারণ, 'ভার' থাকলে রেফারিরা ভুলচুক করলেও সেটা শুধরে নেওয়া যাবে। এবং ম্যাচের ফলাফলের উপর বাজে প্রভাব পড়বে না। যদিও আমি 'ভার' প্রযুক্তির বড় সমর্থক নই। কারণ, এতে ম্যাচ স্লো হয়ে যায়। তবে একটা দলের ম্যানেজার হিসেবে এমন বাজে রেফারিংও তো মেনে নেওয়া যায় না।"
যদিও রেফারিংয়ের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় মুখ খুললেও, দলের এমন হতশ্রী পারফরম্যান্স কিছুতেই মানতে পারছেন না এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ রবি ফাউলার। বেশ হতাশ তিনি। তাঁর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখলেই সেটা বোঝা যায়। আগের চেয়ে দলের পারফরম্যান্সে যে উন্নতি হয়েছে, তাও মানছেন না তিনি। শনিবার তিলক ময়দান স্টেডিয়ামে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে ০-২ হারের পর তিনি বলেন, "আমরা যেখানে প্রথম দুটো ম্যাচে হেরে বসে আছি, সেখানে আরও ভাল খেলা দরকার ছিল। সে দিক থেকে দেখতে গেলে মোটেই ভাল খেলিনি আমরা। তিনটি ম্যাচের মধ্যে এই ম্যাচে দল সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স করেছে। কারণ, এটিকে মোহনবাগান ও এফসি গোয়া থেকে নর্থ ইস্ট তুলনামূলক কম শক্তিশালী দল। তাই আমাদের জেতা উচিত ছিল। খুব বাজে গোল খেয়েছি। মাঝে মাঝে (ডিফেন্সে) স্কুলের ছেলেদের মত ফুটবলও খেলেছে আমাদের ছেলেরা।"
এই তিন ম্যাচের পারফরম্যান্সের পরে ফাউলার ক্রমশ বুঝতে পারছেন, কোন কোন জায়গাগুলো নিয়ে তাঁকে এখন অনেক কাজ করতে হবে এবং সংশোধন আনতে হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এখন আমাদের কী কী করতে হবে, তা বুঝতে পারছি। ফাইনাল থার্ডে আরও সক্রিয় হতে হবে আমাদের। আশা করি কয়েক দিনের মধ্যে এই জায়গাটাও ঠিক হয়ে যাবে।"
একদিকে লিগ টেবিলের তলানিতে চলে যাওয়া। অন্যদিকে রেফারিং নিয়ে প্রকাশ্যে বিস্ফোরণ। রবি ফাউলার ও তাঁর লাল-হলুদ বাহিনীর সময় মোটেও ভাল যাচ্ছে না। অতীতে আই লিগে কোচিং করানোর সময় রেফারিং নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে সমালোচনা করে নির্বাসিত হয়েছিলেন সঞ্জয় সেন। রবি ফাউলারের ক্ষেত্রেও কি সেটা হবে? এফএসডিএল কি এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে? সেটা অবশ্য অপেক্ষার ব্যাপার।