শুভ জন্মদিন! মুম্বইয়ের দাঙ্গায় নিজের জীবন বাজি রেখে অসহায় পরিবারকে বাঁচান সুনীল গাভাস্কার

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : আজ বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানের তালিকার অন্যতম বড় নাম সুনীল গাভাস্কারের জন্মদিন। হেলমেট ছাড়া তিনি যেভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুরন্ত ফাস্ট বোলারদের সামলাতেন, ভারতের তথাকথিত নড়বড়ে ব্যাটিং লাইন আপে শুরু থেকেই স্তম্ভ হিসেবে খাঁড়া হয়ে থেকেছিলেন - একেবারে অনন্য কীর্তি স্থাপন করে গিয়েছেন গাভাস্কার।
কিন্তু হেলমেট ছাড়া ১০ হাজার রানের এই অসাধারণ নজিরই কেবল লিটল মাস্টারের সাহসিকতার নিদর্শন নয়, মাঠের বাইরেও তিনি একজন বলিষ্ট চরিত্র হিসেবে সামনে এসেছেন, যিনি কোনও কিছুকেই ভয় পান না। আর এরকমই একটি ঘটনা ঘটেছিল মুম্বইয়ের দাঙ্গার সময়ে।
১৯৯৩ সালে মুম্বইয়ে বিস্ফোরণের পর শহরজুড়ে যে দাঙ্গা-বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তা আজও সকলের স্মৃতিতে টাটকা। সেই সময়ে কে সেলিব্রিটি, কে সাধারণ মানুষ - তা বোঝা মুশকিল ছিল। আর এমন পরিস্থিতিতে নিজের জীবনকে বাজি রেখে এক পরিবারের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন সুনীল গাভাস্কার। সেই স্মৃতিকথা স্মরণে এনেছিলেন পুত্র রোহন গাভাস্কার।
২০১৬ সালের একটি অনুষ্ঠানে এই স্মৃতিকথা স্মরণ করে রোহন বলেছিলেন, "ওনার গুণের মধ্যে একটি হল সাহসিকতা। আমায় বলতে হয় ১৯৯৩ এর ঘটনা যখন বিস্ফোরণগুলি হয়েছিল, যা আমার উপর বড় প্রভাব রেখেছিল। বিস্ফোরণের কয়েক দিন পর আমরা বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলাম, তখন আমরা দেখি এক বিক্ষোভকারী গোষ্ঠীকে, আর তারা এক পরিবারকে আটকে রেখেছিল।"
"আমরা জানতাম যে ঐ গোষ্ঠীর কোনও ভালো মতলব ছিল না পরিবারটির উপর আর বাবা সেটি দেখে, নীচে দৌড়ে গিয়ে সেই গোষ্ঠীর মুখোমুখি হয়। বাবা সেই গোষ্ঠীর লোকেদের বলে, 'তোমরা পরিবারটির সাথে যা করতে চাও, তার আগে আমার সাথে সেটি করতে হবে।' আর সেই কথা শুনে সেই গোষ্ঠী ঐ পরিবারকে ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। এতে বিশেষ সাহসিকতার দরকার আপনার জীবনকে ঝুঁকি রেখে এই ধরণের গোষ্ঠীর মুখোমুখি হওয়া।"
শেষে রোহন বলেন, "আমার মনে হয়, ওনার কেরিয়ারে হেলমেট ছাড়া যে ধরণের বোলারদের মুখোমুখি হয়েছেন, তার জন্য বিশেষ সাহসিকতার দরকার। লোকে একে সাহসিকতা বলে, কেউ কেউ একে পাগলামো বলবে। কিন্তু আমার মনে হয় এর জন্য একটি বিশেষ সাহসিকতা দরকার।"
মাঠে যিনি মার্শাল-হোল্ডিংদের বাউন্সার হেলমেট ছাড়া স্বচ্ছন্দে খেলতে পারেন, তিনি প্রয়োজনে বন্দুকের সামনেও দাঁড়িয়ে পড়তে পারেন, আর এমন ব্যক্তিত্বের নামই হল সুনীল মনোহর গাভাস্কার। কাউকে পরোয়া না করে, কোনও কিছুর চিন্তা না করে, দেশের জন্যই এগিয়ে এসেছেন ভারতবর্ষের সর্বকালের সেরা এই ওপেনার।