এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ টেস্ট পরিকল্পনাকে এক ধাক্কায় নাড়িয়ে দিতে পারে এমন এক বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত বিরাট কোহলির। তিনি বিসিসিআইকে জানিয়েছেন তাঁর টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের কথা। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর সূত্র অনুযায়ী, ৩৬ বছর বয়সী এই ব্যাটিং কিংবদন্তি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সিদ্ধান্ত জানালেও, বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা তাঁকে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। এই খবর সামনে এল ঠিক তখনই, যখন কয়েকদিন আগেই রোহিত শর্মাও টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। ফলে, ভারতীয় ক্রিকেটের এক যুগের অবসান ঘটতে চলেছে।

এই সিদ্ধান্তটি এমন সময়ে এল, যখন ভারতের সামনে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ইংল্যান্ড সফর—যেখানে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে শুরু হবে নতুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্র। আর ঠিক সেই মুহূর্তে কোহলির অবসরের সিদ্ধান্ত ভক্তদের হতবাক করে দিয়েছে।

তথ্যানুসারে, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই কোহলি বোর্ডকে তাঁর সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সদ্য সমাপ্ত বোর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে পাঁচ টেস্টে মাত্র ১৮৬ রান করার পর হতাশা থেকেই এই সিদ্ধান্ত বলে ধারণা। পার্থে প্রথম টেস্টে শতরান করলেও বাকি চার ম্যাচে তাঁর রান সংখ্যা মাত্র ৮৬। এক সময়ের দুর্বলতা—বাইরের বলের ফাঁদে পড়া—আবারও দেখা গিয়েছে তাঁর খেলায়।

রোহিতের অবসর নেওয়ার পর কোহলির বিদায় ভারতীয় টেস্ট দলের মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞতার ঘাটতি তৈরি করবে। বিসিসিআই সেই কারণেই তাঁকে অন্তত ইংল্যান্ড সফর পর্যন্ত খেলার অনুরোধ জানিয়েছে। তবে কোহলি এই অনুরোধ গ্রহণ করবেন কি না, তা এখনও অনিশ্চিত।

একজন উচ্চপদস্থ বোর্ড কর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অবস্থায় জানিয়েছেন, "মানসিকভাবে ও ইতিমধ্যেই সরে গিয়েছে। তবু আমরা অনুরোধ করেছি, আর একবার চেষ্টা করুক।"

এদিকে শুভমান গিলকে ভবিষ্যতের টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ভাবা হচ্ছে। যশস্বী জয়সওয়াল, কেএল রাহুল, ঋষভ পন্তের মতো প্রতিভাবান ক্রিকেটাররা দলে থাকলেও, বিরাট কোহলির অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বগুণ এবং চাপের মুহূর্তে পারফর্ম করার ক্ষমতা অনুপস্থিত থাকলে তা হবে বিশাল ক্ষতি।

১২৩টি টেস্টে ৯২৩০ রান এবং ৩০টি শতরান করে কোহলি ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অ্যাডিলেড ২০১৪ থেকে লর্ডস ২০১৮—বিদেশের মাটিতে তাঁর দাপট ভারতীয় দলের মানসিকতা পাল্টে দিয়েছিল। তাঁর নেতৃত্বেই গড়ে ওঠে ভারতের শক্তিশালী পেস আক্রমণ, যা সেনা (SENA) দেশগুলোতে ভারতকে লড়াই করার শক্তি দেয়।

তবে কোহলির এই বিদায়ের সম্ভাবনা সত্যি হলে, ভারতের টেস্ট দল এক রূপান্তরের কঠিন পথে পা রাখবে। রোহিত ও কোহলি ছাড়া ইংল্যান্ড সফরে নামা দল দেখতে যেমন নতুন রূপ পাবে, তেমনি তা অভিজ্ঞতাহীন ও কিছুটা দুর্বল বলেই মনে হবে।