উদয় শাহরানের নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ পাওয়ার সন্ধিক্ষণে ভারত

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক: অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জেতার থেকে মাত্র এক ধাপ পিছিয়ে ভারত। একটানা ৫বার অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠল ভারত। সেই দলের অধিনায়ক উদয় শাহরনের ভূয়সী প্রশংসা করলেন পাঞ্জাব রঞ্জি দলের অধিনায়ক মন্দীপ সিং।
মন্দীপ জানিয়েছেন, "নেতৃত্বে দক্ষতা দেখিয়ে নজর কেড়েছে উদয়। অল্প বয়সে রঞ্জিতে সিনিয়র দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে খেলছেন তিনি। তাই তিনি জায়গা করে নিতে পেরেছেন অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে। কখনোই তিনি নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। তার মধ্যে এক স্ফুলিঙ্গ আছে।"
আরও পড়ুন- ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বাকি তিন টেস্ট ম্যাচে থাকছেন বিরাট? জানুন বিস্তারিত
তার নেতৃত্বের প্রতিভা দেখা গেছে গত মঙ্গলবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। ২৪৫ রান করতে গিয়ে আট রানে ২ উইকেট চলে যায় ভারতের। এরপর ৩২ রানে চার উইকেটে ২২ গজে থাকাকালীন দলের তরুণ ক্রিকেটার শচীন ধসের সঙ্গে পরামর্শ করতে থাকেন উদয়। এইখানেই বোঝা যায় তার অধিনায়কত্বের পরিচয়। দুজনেই মিলে ১৭১ রানের জুটি গড়েন। এই ম্যাচে জয়ী হয় ভারত।
তার বাবা এবং কোচ সঞ্জীব শাহরন জানিয়েছেন, তার ছেলের এই ইনিংসটি দেখে একটি অন্য ইনিংসে কথা মনে পড়ে যায় যেখানে উদয় একা লড়ে ম্যাচ জেতায়, যেখানে বাকি সবাই হাল ছেড়ে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন- টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলবে রোহিতরা
তিনি এও জানিয়েছেন, "হার মানবার পাত্র নয় উদয়, ওর মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস আছে যে, যেকোনো পরিস্থিতি থেকে ম্যাচ বের করে আনতে পারে ও। কয়েক বছর আগে আমার অ্যাকাডেমিতে একটি ম্যাচে পঞ্চাশ রানে পড়ে যায় ছয় উইকেট। সেখানে জিততে দরকার ছিল আরো ১০০ রান। সেই ম্যাচ খেলে জিতিয়ে দেয় উদয়।”
দলের সবথেকে আলোচ্য ক্রিকেটার এই মুহূর্তে মুশির খান হলেও এখনো পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান করেছেন কিন্তু উদয়। তিনি কিন্তু নিঃশব্দে করে চলেছেন তার দায়িত্ব পালন। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে তিনি ৬৪ রান করেন, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে উদয় ৭৫ রান করলেও সেঞ্চুরি করেছেন মুশির। অন্যদিকে,নেপালের বিপক্ষে উদয়ের চেয়ে শচীন ধসের সেঞ্চুরি বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে ৩৮৯ রান করে, উদয় টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন।
সঞ্জীব জানিয়েছেন, “নিজের রান করা আলাদা ব্যাপার। তবে দলের অধিনায়ক এবং সঙ্গী হিসেবে পাশে থেকে দলকে সাহায্য করা কঠিন ব্যাপার। ও এটা জানে যে এটা ব্যক্তিগত কোনও খেলা না। ম্যাচ এবং টুর্নামেন্ট জিততে জোটবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।”
ম্যাচ পরবর্তী সাক্ষাৎকারে উদয় জানিয়েছেন, “ আমি সবসময় নিজেকে বিশ্বাস করি। খেলার গভীরে আমাকে যেতে হয়েছে। এই সময় দাঁড়িয়ে জুটির ওপর জোর দিয়েছি আমি। ম্যাচ জেতার জন্য সেটারই দরকার ছিল। এবং তাই হয়েছে। বাবা আমাকে একটা কথা সবসময় বলেন, বড় শট মারলে শেষের দিকে মারতে, শুরুতে নয়।”
সঞ্জীব শাহরন নিজেও ছিলেন ক্রিকেটার। তবে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি, ছেলের মধ্যে দিয়েই সেই স্বপ্ন পূরণ করছেন তিনি। তবে উদয় বিশ্বকাপ জিতে বাবার সেই স্বপ্ন পূরণ করুক, শুভেচ্ছা রইল তার জন্য।