সম্পত্তি বিক্রি করে দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে নিউজিল্যান্ড এসেছিলেন লর্ডসে শতরানকারী ডিভন কনওয়ে

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : বুধবার লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিজের টেস্ট অভিষেক করেছিলেন কিউই ওপেনার ডিভন কনওয়ে। এবং সৌরভ গাঙ্গুলির পর বিদেশী হিসেবে লর্ডসে টেস্ট অভিষেকে শতরান করার নজির গড়লেন কনওয়ে। অসাধারণ ব্যাটিং করেন ব্রড-অ্যান্ডারসনদের বিরুদ্ধে। এবং এই ইনিংসের জেরে নিউজিল্যান্ডকে প্রথম দিনে সুবিধাজনক জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন ২৯ বছরের এই ক্রিকেটার।
তবে, দক্ষিণ আফ্রিকা জাত এই ক্রিকেটারের আজকের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে অনেক বড় আত্মত্যাগ। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে চলে আসেন কনওয়ে। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত নিলেন বাঁ হাতি এই ব্যাটসম্যান?
সেই সময় দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া ক্রিকেটে গউটেং দলের হয়ে খেলতেন কনওয়ে। কিন্তু সেখানে ধারাবাহিকতার অভাব ও সুযোগ না পাওয়ার কারণে কোলপ্যাক চুক্তিতে সই করেন কনওয়ে, যার জেরে তিনি অন্য দেশে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পাবেন। আর এর জেরেই নিউজিল্যান্ড চলে আসেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকায় বেশ অভিজাত পরিবারেই বড় হয়েছিলেন কনওয়ে। বাড়ি-গাড়ি - বেশ সম্ভ্রান্ত উপায়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় দিন কাটিয়েছিলেন কনওয়ে। কিন্তু ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে চলে আসার আগে কেবল নিজের কিটব্যাগ ছাড়া বাকি নিজের সম্পত্তি বিক্রি করে এসেছিলেন। এর কারণ হিসেবে কনওয়ে বলেছিলেন, "আমি নিজের সম্পত্তি, গাড়ি, সবকিছু বেচে দিয়েছিলাম কারণ আমি সেই অধ্যায়কে বন্ধ করে নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিলাম।"
এবং নিউজিল্যান্ডে এসে যেন ভাগ্যই খুলে গেল কনওয়ে। ২০১৯/২০ মরশুমে নিউজিল্যান্ডের সকল ঘরোয়া টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ রানস্কোরার হয়েছিলেন কনওয়ে। প্রথম শ্রেণী (প্লাঙ্কেট শিল্ড), লিস্ট এ (ফর্ড ট্রফি) ও টি২০ প্রতিযোগিতায় (সুপার স্ম্যাশ) দাপিয়ে ব্যাটিং করেছিলেন কনওয়ে। আর এর জেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টি২০ সিরিজে অভিষেক করেছিলেন কনওয়ে।
এবং ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে নিজের অভিষেকের মূল কারণ হল প্লাঙ্কেট শিল্ডে দুর্ধর্ষ পারফর্মেন্স। পরপর তিন বছর প্লাঙ্কেট শিল্ডের সর্বোচ্চ রান স্কোরার ছিলেন কনওয়ে, যেখানে ২০১৮-১৯ মরশুমে ক্যান্টারবুরির বিরুদ্ধে রেকর্ড ৩২৭ রান করেছিলেন কনওয়ে।
আত্মত্যাগ করে আজ এই জায়গায় এসেছেন ডিভন কনওয়ে। সত্যি, ঝুঁকি না নিলে হয়ত লাভের অঙ্কটা শূন্যই থেকে যায়। আর ডিভন কনওয়ে নিজের আভিজাত্য জীবন ছেড়ে নিউজিল্যান্ডে নিজের ক্রিকেট প্রেমকে বাস্তবায়িত করেছেন, প্রমাণ করেছেন তিনি এই পর্যায়ের যোগ্য।