লজ্জার দিন। ধর্মীয় সংকীর্ণতা এবার ক্রিকেটেও। পদ ছাড়লেন জাফর।

ফেব্রুয়ারি ১১: যত দিন যাচ্ছে ততই যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে ধর্মীয় ভেদভেদের পরিধি । সামাজিক বৃত্ত ছাড়িয়ে এবার ধর্মের হানাহানি ঢুকে পড়ল ক্রিকেটের বাইশ গজেও ।
ভারতীয় ক্রীড়া পরিসরে শেষ কবে এরকম ঘটনা ঘটেছে মনে করতে পারছেন না কেউ । প্রাক্তন জাতীয় দলের ক্রিকেটার ওয়াসিম জাফরকে কেন্দ্র করে যা ঘটল তাতে ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায় যোগ হলো একথা বলাই বাহুল্য । দেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড় নিযুক্ত হন উত্তরাখণ্ডের কোচ হিসেবে । কিন্তু সম্প্রতি কিছু সংবাদমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে এক মারাত্মক অভিযোগ । তিনি নাকি ধর্মের ভিত্তিতে পক্ষপাত করছেন দলে । হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন । এরকম গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরই উত্তরাখণ্ডের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান তিনি ।
দায়িত্ব ত্যাগের পরই সাংবাদিক সম্মেলন করে গোটা ব্যাপারটি নিয়ে মুখ খোলেন দেশের হয়ে দু-দুটি দ্বিশতরানের মালিক জাফর ।
ইকবাল আব্দুল্লাহ কে অধিনায়ক হিসেবে বাছার পিছনে তাঁর কোনও ভূমিকা নেই , এই কথা জানিয়ে জাফর স্পষ্ট বলেন , " আমি ইকবাল নয় , অধিনায়ক হিসেবে বেছেছিলাম জয় বিস্ত-কে , উত্তরাখণ্ড বোর্ডই আব্দুল্লাহকে বেছেছে।" পাশাপাশি তিনি এও বলেন ২২ জনের দলে মাত্র তিনজন খেলোয়াড় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ , তারাও যে সবসময় দলে সুযোগ পাচ্ছেন এরকমও নয় ।
এমনকি এও অভিযোগ ওঠে , তিনি নাকি খেলোয়াড়দের বর্তমানে বহুল ব্যবহৃত একটি ধৰ্মীয় স্লোগান দিতে নিষেধ করেন । এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে জাফর বলেন , " দল বরং একটি শিখ স্লোগান দিতো" , যার বদলে তিনি 'গো উত্তরাখণ্ড' স্লোগানটি চালু করার প্রস্তাব দেন ।
মৌলবী ডাকার অভিযোগও সরাসরি খারিজ করে এদিন জাফর জানান , তিনি যদি ধর্মীয় পক্ষপাতমূলক কোনও কাজ করতেন তাহলে তাকে ছাঁটাই করে দেওয়া হত । তিনি নিজে পদ থেকে অব্যাহতি নিতেন না । কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে তিনি পদত্যাগ করেছেন কারণ নির্বাচক ও সচিব নিজেদের পছন্দ অনুসারে অযোগ্য খেলোয়াড়দের দলে সুযোগ করে দিচ্ছেন ।
সবশেষে জাফর বলেছেন গোটা ঘটনায় তিনি মারাত্মক মর্মাহত । দীর্ঘদিন দেশের সেবা করার পর এরকম গুরুতর অভিযোগকে খুবই নিম্নরুচির বলে অভিহিত করেছেন এই প্রাক্তন খেলোয়াড় । সব মিলিয়ে যা হল তা ভারতীয় খেলাধুলার জগতকে কালিমালিপ্ত করল বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের।