কলকাতা ময়দানের কোন তারকা ফুটবলারকে ছুঁতে চেয়েছিলেন ছোট্ট সৌরভ গাঙ্গুলি?

নিজস্ব প্রতিনিধি: সালটা ছিল ১৯৭৭ কিংবা ৭৮। মোহনবাগান মাঠে ভিন রাজ্যের একটি দলের সঙ্গে খেলা। ম্যাচ খেলে সবে উঠেছেন চিন্ময় চ্যাটার্জি। চপচপে ঘামে ভেজা জার্সি। এই সময় এক ভদ্রলোক এগিয়ে এলেন। চিন্ময় চ্যাটার্জিকে বললেন, 'এ আমার ছেলে। আপনাকে একটু ছুঁয়ে দেখতে চায়।'
সেই ভদ্রলোক কে ছিলেন জানেন? আর কেই বা ছিলেন সেই ছোট্ট মিষ্টি ছেলেটি? এক্সট্রাটাইম বাংলা ফুটবল শো'তে এসে সেটাই বলতে গিয়ে শুরুতে বেশ ইতস্তত বোধ করছিলেন সাত-আট দশকের ময়দানের তারকা ফুটবলার। তারপর বলেই ফেললেন, ওই ভদ্রলোক ছিলেন প্রয়াত ক্রিকেট প্রশাসক চন্ডী গাঙ্গুলি। আর ছোট্ট মিষ্টি ছেলেটি ছিলেন বর্তমান ভারতীয় কন্ট্রোল বোর্ডের প্রেসিডেন্ট সৌরভ গাঙ্গুলি। খেলোয়াড় জীবনে এমনই
সম্মান পেতাম আমরা। তখন ক্রিকেটে প্রয়াত গোপাল বসু, সম্বরণ ব্যানার্জিরা বড় নাম হলেও, আমাদের জনপ্রিয়তা ছিল অনেক বেশি।
দলবদলের সময়ও তাদের নিয়ে ছিল অনেক রোমহর্ষক ঘটনা। সেই ঘটনা স্মরণ করে চিন্ময় চ্যাটার্জি বলেন, ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে যেবারে আমরা মহামেডানে এলাম, সেই সময় মহামেডান কর্তা ওমর আমাদের ১০ কিংবা ১১ জনকে পার্ক সার্কাসে দেখা করতে বললেন। সেখান থেকে আমাদের মুম্বই পাঠিয়ে দিলেন। হাজি মস্তানের ডেরায়। ইস্টবেঙ্গল যাতে কারও নাগাল না পায়। মুম্বাইয়ে হাজি মস্তানের তখন এখনকার দাউদ ইব্রাহিমের স্ট্যাটাস। সেখানে সমস্ত কথা বার্তা পাকা করে রাত সাড়ে বারোটার এয়ার ইন্ডিয়া বিমানে কলকাতায় ফেরার ব্যবস্থা করা হল আমাদের। সেই এয়ার ইন্ডিয়া বিমানটি আবার কলকাতা হয়ে ব্যাংকক চলে যাবে। কলকাতায় আমাদের ইন্টারন্যাশানাল টার্মিনালে নামিয়ে। যদি কেউ আমাদের ডোমেস্টিকে ধরার চেষ্টা করে তাহলে সে ব্যর্থ হবে। এই পরিকল্পনা করেই সেই সময় এই ছক সাজিয়ে ছিলেন সেই সময়ের মহামেডান কর্তারা।
খেলোয়াড় জীবনে তাঁর ব্যাক পাসের ভুলে গোল খেতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। সেই নিয়ে এখন আর অনুশোচনা নেই তাঁর। প্রাক্তন ফুটবলার বলছিলেন, 'মানুষ মাত্রই ভুল করে। আমার ভুল হয়েছিল। ব্যাকপাস করার সময় আমার মানসকে দেখা উচিত ছিল। তাছাড়া ভুল সবাই করে। ভাস্কর, মনার দোষে কি ইস্টবেঙ্গল গোল খায়নি?'