সোনার গ্লাভস পেয়েও অতৃপ্ত বিশাল, খুঁজছেন নিজের সেরা ফর্ম

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ আইএসএল সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে অমিমাংসিত ফলাফলে খেলা শেষ হয়েছিল এটিকে মোহনবাগান ও হায়দ্রাবাদ এফসির মধ্যে। গত বারের আইএসএল সেমিফাইনালের বদলা নেওয়ার এমন সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না জুয়ান ফেরান্দোর দল। প্রথম লেগে হায়দ্রাবাদের মাটিতেই প্রায় তাদেরকে হারিয়ে দিয়েছিল পেত্রাতোস-হুগোদের দল। কিন্তু সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট তাদের কাঙ্ক্ষিত জয় থেকে দুড়ে সরিয়ে দেয়। দ্বিতীয় লেগে তাই জেতার জন্য অল-আউট ঝাপাতে প্রস্তুত সবুজ-মেরুণ ব্রিগেড। ঘরের মাঠে নামার আগে এই আইএসএলের সোনার গ্লাভস বিজয়ী বিশাল কাইথ এটিকে মোহনবাগান মিডিয়া দলকে আসন্ন ম্যাচে তাঁর লক্ষ্য নিয়ে বিস্তারিত জানান।
এক মরশুমে ১১ টি ক্লিনশিট রেখে রেকর্ড গড়া বিশাল জানিয়েছেন, "গোল্ডেন গ্লাভ পেয়ে ভাল লাগছে। যে কোনো গোলকিপারের কাছেই স্বপ্ন থাকে এই সম্মান পাওয়ার। বিশ্বকাপ থেকে আই এস এল বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়, সব জায়গাতেই দেখতাম যে, কোনও একজন গোলকিপার এই সম্মান পাচ্ছেন। আমারও স্বপ্ন ছিল এই সম্মান পাওয়ার। জীবনে প্রথমবার এই সম্মান পেলাম। এটা হয়তো আমাকে আরও ভাল খেলতে উদবুদ্ধ করবে। কিন্তু গোল্ডেন গ্লাভস পেয়ে আমি সন্তুষ্ট নই। আমার সামনে এখন দুটি লক্ষ্য। এক, শেষ দুটো ম্যাচ নিজে অপরাজিত থাকা। ২, দুটি ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেই লক্ষ্যেই সোমবার মাঠে নামবো। সেই লক্ষ্যেই সোমবার মাঠে নামব। মাঠে যখন নামব তখন এই সম্মানের কথা মাথায় রাখতে চাই না। ট্রফি না পেলে এই সম্মানের কোনো দাম নেই আমার কাছে।"
সোনার গ্লাভস পেয়েও নিজের সেরা ফর্ম খুঁজছেন বিশাল। এবিষয় তিনি জানিয়েছেন, "গোল্ডেন গ্লাভস পেলেও আমি এখনও আমার সেরা ফর্মে পৌঁছতে পারিনি। আমার লক্ষ্য আরও ভাল খেলা। আমি অনেক গোল সেভ করেছি বলে খুব হইচই হচ্ছে। কিন্তু মনে করি, গোলকিপারের কাজই হল গোল অক্ষত রাখা। সেটা আমি করেছি মাত্র। এবং এর জন্য আমি কৃতজ্ঞ দলের সতীর্থ সব ফুটবলার ও কোচেদের কাছে। তাদের জন্যই আমি এই সম্মান পেয়েছি। আমার পাওয়া সম্মান আমি ওদেরই উৎসর্গ করতে চাই। ফুটবল দলগত খেলা। সবাই ভাল না খেললে ম্যাচ জেতা যায় না। অনেকেই জানতে চাইছে আমি যে সেভ গুলো করেছি তার মধ্যে সেরা কোনটা? আমার মতে গত বৃহস্পতিবার হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে প্রথম সেমিফাইনালের শুরুর দিকে কিয়ানিসের যে হেডটা ডানদিকে ঝাঁপিয়ে সেভ করেছি, ওটাই এই মরশুমে আমার করা সেরা সেভ। ওই বলটা বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দিয়েছিল আমাকে।"
ওড়িশা ম্যাচে চোট এবং সেখান দিয়ে ফিরে এসে সেমিফাইনালে অনবদ্য পারফরম্যান্স। বিশাল এই বিষয় বলেছেন, "হিমাচল প্রদেশের মতো জায়গা থেকে উঠে এসে আমি আইএসএলের মতো প্রতিযোগিতায় সবুজ মেরুন জার্সি পরে খেলার নিয়মিত সুযোগ পাব এবং লিগের ২১ টা ম্যাচেই গোলের নিচে শুরু করব কখনও ভাবিনি। এটা সম্ভব হয়েছে সবুজ মেরুন সমর্থকদের ভালবাসা ও সমর্থনের জন্য। সেটা আরও বেশি করে অনুভব করলাম যুবভারতীতে ওড়িশার বিরুদ্ধে প্লে অফ ম্যাচ মাথায় ও কাঁধে চোট পাওয়ার পর। জীবনে কখনও ওরকম চোট পাইনি। পরে শুনলাম মাঠে পড়ে গিয়ে আমি মিনিট দুয়েই অজ্ঞানও না কি ছিলাম। মাৎে অ্যাম্বুলেন্সও ঢুকেছিল। এই অবস্থায় সবাই যেভাবে আমাকে সাহায্য করার জন্য দৌড়ে এসেছিল তা দেখে আমি আপ্লুত। বিশেষ করে আমি উঠে দাঁড়ানোর পর যেভাবে সবুজ-মেরুন সমর্থক আমাকে হাততালি দিয়ে এবং স্লোগান দিয়ে উদবুদ্ধ করেছিল, তা কোনওদিন ভুলব না। আমি হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম কিছু পরীক্ষার জন্য। হোটেলে ফিরে ফোন খুলে দেখি, কত মানুষ আমার সুস্থতা কামনা করে বার্তা পাঠিয়েছেন। শুভ কামনা জানিয়েছেন। গোল্ডেন গ্লাভের চেয়েও এই সমর্থন ও সম্মান আমার কাছে অনেক বেশি পাওয়া। সবাইকে অনুরোধ করব, সোমবার সবাই মাঠে আসুন। আমাদের সমর্থন করুন। শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য নিজের সেরাটা দিতে আমরা সবাই প্রস্তুত। গোল্ডেন গ্লাভে আমি সন্তুষ্ট নই, সমর্থকদের হাতে আমি ট্রফি তুলে দিতে পারলে সবথেকে তৃপ্ত হব।"