ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে খেলবে আশা চন্দন, সূর্যবিকাশদের মত প্রাক্তনদের…

নিজস্ব প্রতিনিধি: ইস্টবেঙ্গলের আইএসএলে অংশগ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন প্রাক্তন ফুটবলার চন্দন দাস ও সূর্যবিকাশ চক্রবর্তী। তাঁরা এদিন এক্সট্রাটাইম বাংলা ফুটবল শো'তে এসে কী কী বললেন, জেনে নেওয়া যাক :-
আইএসএল প্রসঙ্গে
চন্দন: এই ব্যাপারে আমার বালি কণার মতো ক্ষুদ্র জ্ঞান। তবে যতদূর শুনেছি, ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলার জন্য হাজার শতাংশ চেষ্টা করছে। আশা করি লাল-হলুদ ক্লাব আইএসএল-য়ে খেলবে।
সূর্যবিকাশ: ইস্টবেঙ্গল যদি আইএসএলে খেলে তাহলে শতবর্ষে একটা দারুণ উপহার বলা যেতে পারে। আর ইস্টবেঙ্গল যদি এই বছরে না খেলতে পারে, তাহলে কিন্তু কলকাতার যে প্রতিযোগিতা সেটা সাময়িক নষ্ট হবে। আশা রাখি ইস্টবেঙ্গল আইএসএল খেলবে।
আই লিগ অধরা
চন্দন: এটা ঠিক ইস্টবেঙ্গল এখনও আই লিগ পায়নি। একটুর জন্য বহুবার মিস করেছে। কিন্তু আইএসএলে খেললে, সেটা পুষিয়ে দেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ ইস্টবেঙ্গলের সামনে থাকবে।
সূর্যবিকাশ: ইস্টবেঙ্গল যদি আইএসএল খেলে, এবং চ্যাম্পিয়ন হতে পারে, তাহলে কিন্তু আই লিগ না জেতার যন্ত্রনা মানুষ ভুলে যাবে। তখন আর কেউ পিছনের দিকে ফিরে তাকাতে চাইবে না।
সমস্যা কোথায় ছিল?
চন্দন: দেখুন ইস্টবেঙ্গল দলটার সঙ্গে শেষ সময় যুক্ত হয়েছিলাম। তখন দেখলাম স্প্যানিশ ফুটবলারদের সঙ্গে স্থানীয় ফুটবলার বা ভিন রাজ্যের ফুটবলারদের কোনও মিল ছিল না। কোথায় একটা সব ব্যাপারটা মিসিং ছিল। এই জন্য রেজাল্ট আসেনি।
সূর্যবিকাশ: পরে একটু ঠিকঠাক হলেও, আলেজান্দ্রোর দ্বিতীয়বারের কোচিংয়ে কিন্তু দলের খেলায় কোনও পরিকল্পনা ছিল না। উনি কোথায় একটা বৃহৎ অংশ লাল-হলুদ সমর্থকদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিলেন। ইস্টবেঙ্গল মাঠে দিনের পর দিন অনুশীলন না করিয়ে। এতে যে বিদেশি প্লেয়াররা এসেছিলেন, তারা তো ঐতিহ্যশালী ক্লাবটার সঙ্গে একাত্ম হতে পারলেন না। এটারও একটা এফেক্ট আছে বলে আমার মনে হয়।
আসিয়ান কাপ
চন্দন: ২০০৩ সালে সুভাষ ভৌমিকের হাত ধরে কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়া প্রথম ইস্টবেঙ্গল দেখিয়ে ছিল। এক মাস পাঁচতারা হোটেলে রেখে প্র্যাকটিস। উফ আজও যখন চোখ বন্ধ করে ফুটবল নিয়ে ভাবি, তখন আসিয়ান জিতে ফিরে বিমানবন্দরের ওই দৃশ্যটা চোখে ভাসে। লাখ লাখ সমর্থক আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এই কারণেই বার্সিলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের সাপোর্টারদের থেকেও আমার কাছে অনেক এগিয়ে ইস্টবেঙ্গলের সাপোর্টাররা।
ইস্টবেঙ্গলে আসা
চন্দন: টালিগঞ্জের হয়ে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল করলাম। মোহনবাগান আমায় যেদিন প্রস্তাব দিল, সেদিনই নীতুদা দেখলাম রাত দুটোর সময় আমাদের বাড়িতে হাজির হল। বাবা পঞ্চায়েত প্রধান ছিল। বাবাকে বুঝিয়ে রাজি করিয়ে দিল। আমি যখন ঠিক করেছি মোহনবাগানে খেলব। তখন বাবা বলল ফুটবল যদি খেলতে হয়, ইস্টবেঙ্গলেই খেলবে। ব্যাস লাল-হলুদে চলে এলাম।
সূর্যবিকাশ: আমি তখন সেল-এর হয়ে খেলি। প্রয়াত স্বপনদা প্রায় সেলের খেলা দেখতে যেত। একদিন ম্যাচ শেষে আমায় বলল নতুন মরশুমে কোথাও সই করার আগে আমার সঙ্গে একবার কথা বল। আমি আচ্ছা বলে ছেড়ে দিলাম। পোর্টে গিয়ে প্রয়াত গোলকিপার শিবাজী ব্যানার্জির সঙ্গে দেখা করলাম। উনি আমার চাকরির অফার দিয়ে পোর্টে সই করতে বললেন। আমি ওখান থেকে বেরিয়ে পরের দিন মাকে প্রণাম করে ঘর থেকে বেরোতে যাব, মা বললো কোথায় যাচ্ছিস? আমি বললাম, তোমার ছেলে আজ নতুন চাকরিতে যোগ দিতে যাচ্ছে, পোর্ট ট্রাষ্টে। মা বলল, ইস্টবেঙ্গলের ভদ্রলোককে যে বললি, কোথাও সই করলে ওনাকে বলতে বলেছেন। তাহলে তুই ওখানে যাবি এবং ইস্টবেঙ্গল ভদ্রলোকটাকে বলে আসবি, আমি আপনাদের ক্লাবেই খেলব। আমি পোর্টের চাকরিতে জয়েন না করে ইস্টবেঙ্গলে টোকেন দিয়ে চলে এলাম। আজ মাদার্স ডে। মায়ের কথা আমি কখনও ফেলি নি।