পদ্মশ্রীর জন্য মনোনীত হলেও আই এম বিজয়নের মন খারাপ। কিন্তু কেন? জানতে পড়ুন...

নিজস্ব প্রতিনিধি: ভারতীয় ফুটবলে তিনি 'কালো হরিণ' নামে পরিচিত। এহেন আই এম বিজয়নের নাম পদ্মশ্রী'র জন্য মনোনীত করল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন। ১৯৯১ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়ে ৮৮ ম্যাচে ৩৯ গোল। এরমধ্যে আবার ১৯৯৯ সালে সাফ কাপে ভুটানের বিরুদ্ধে ১২ সেকেন্ডে করা গোল এখনও সবার হৃদয় জুড়ে রয়েছে। ২০০৩ সালে অর্জুন পেয়েছিলেন। এবার তাঁর মুকুটে যোগ হল নতুন পালক। তিনি বলছেন, "এমন একটা খবর পেয়ে দারুণ অনুভূতি হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই ফেডারেশনের সচিব কুশল দাস ফোন করে খবরটা দিয়েছেন। তাই ফেডারেশনকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।"
শুধু তো দেশ নয়। ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ছাড়াও কেরালা এফসি, জেসিটি, এফসি কোচি, চার্চিল ব্রাদার্সের মত প্রথমসারির ক্লাবের হয়ে একাধিক গোল করেছেন এই স্ট্রাইকার। তবুও পদ্মশ্রীর জন্য মনোনীত করতে এত দেরি হল কেন? ফেডারেশনের কি আরও আগে তাঁকে সম্মান জানানো উচিত ছিল না? যদিও ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক কিন্তু নেতিবাচক দিক নিয়ে ভাবতে রাজি নন। বিজয়নের প্রতিক্রিয়া, "দেখুন ফেডারেশন কেন দেরি করে পদ্মশ্রীর জন্য নাম মনোনীত করল সেটা তো কর্মকর্তারা বলতে পারবেন। তবে আমি ব্যাপারটা দেরি হিসেবে দেখতে চাই না। পুরস্কারের জন্য নাম পাঠানো হয়েছে এটা শুনে ভাল লাগছে। তবে পদ্মশ্রী না পেলেও জীবনে কোনও আক্ষেপ থাকতো না।"
দেশের হয়ে পারফর্ম করে ব্যাপক সাফল্য। ক্লাব ফুটবলেও বিপক্ষ ডিফেন্ডারদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। অর্জুন পুরস্কার আগেই তাঁর ঝুলিতে ছিল। এবার যোগ হল পদ্মশ্রী। তবুও গলায় আক্ষেপ ঝড়ে পড়ল। কারণ, এই জীবন্ত লেজেন্ডের বাবা যে ছেলের সাফল্য দেখে যেতে পারলেন না। প্রশ্নটা শুনে তিনিও কিছুক্ষণের জন্য যে থমকে গেলেন। তারপর বললেন, "বাবা'র হাতধরেই প্রথমবার ফুটবল মাঠে পা দিয়েছিলাম। অথচ সেই লোকটাই 'আই এম বিজয়ন'কে দেখে যেতে পারলেন না। এরচেয়ে বড় দুঃখ আর কি হতে পারে। এই দুঃখ কোনওদিন মিটবে না। কিন্তু এটাই অদৃষ্টের খেল। তাই মানিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।"
ছোটবেলায় ত্রিশুর মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন স্টেডিয়ামের বাইরে সোডা-বোতল বিক্রি করতেন। সেখান থেকে ভারতীয় দলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। এরপর অধিনায়কত্ব, কেরল পুলিশের ডিজিপি থেকে একাধিক মালায়লম ও তামিল ছবিতে দাপটের সঙ্গে অভিনয়। এত সাফল্যের জন্য কিন্তু ফুটবলকেই ধন্যবাদ দিচ্ছেন 'কালো হরিণ'। শেষে যোগ করলেন, "জীবনে সবকিছু ফুটবলের জন্যই পেয়েছি। ফুটবল খেলতে পেরেছি এত সম্মান পেলাম। অবশ্য আমার এই সাফল্যের জন্য কেরল পুলিশকেও ধন্যবাদ জানাব। কারণ, কেরল পুলিশ আমাকে সাহায্য না করলে এতটা রাস্তা হাঁটা একেবারেই সম্ভব হত না।"