এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ ২০২৪ সালে ভারতের টি২০ বিশ্বকাপ জয়ে রোহিত শর্মা চিরদিনের জন্য ঢুকে পড়লেন ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে। গোটা টুর্নামেন্টে ভারতের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন রোহিত, এবং ভারতকে শিরোপা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফাইনালে তিনি মাত্র ৯ রানেই আউট হয়ে যান এবং ভারত দ্রুত ৩৪/৩ স্কোরে পৌঁছে যায়। সেই সময় ড্রেসিংরুমে রোহিত চরমভাবে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন, এবং তখনই বিরাট কোহলির ভূমিকা দলের ভেতরের মানসিকতা সামাল দিতে সাহায্য করে।

"আমি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। একেবারেই স্বস্তিতে ছিলাম না। মনে হচ্ছিল আমরা ওদের (দক্ষিণ আফ্রিকাকে) ম্যাচে ফিরিয়ে দিচ্ছি," জিও সিনেমায় সাক্ষাৎকারে বলেন রোহিত।

রোহিত বলেন, কোহলির অভিজ্ঞতা এবং ওই ইনিংসটাই ড্রেসিংরুমে সবাইকে শান্ত করে তোলে। যদিও গোটা টুর্নামেন্টে ভালো ফর্মে ছিলেন না, ফাইনালে কোহলি ৫৯ বলে ৭৬ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

"ভারতের হয়ে এত বছর খেলার অভিজ্ঞতা কাজে দেয়। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়, চিন্তাভাবনা স্থির রাখা যায়, মুহূর্তে টিকে থাকা যায়। আমি নিশ্চিত, ওর (কোহলির) মাথায় সেটাই ছিল — 'আজ আমাকে পুরো মনোযোগ দিতে হবে।' অতীত নিয়ে ভাবার দরকার নেই। ও অসাধারণ খেলেছে। তিনটি দ্রুত উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ড্রেসিংরুমে প্রবল টেনশন ছিল," জানান রোহিত।

কোহলি এরপর অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে ৭২ রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। অক্ষর ৩১ বলে ৪৭ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলেন। রোহিত বলেন, এই ইনিংসটাই বদলে দেয় ম্যাচের গতি।

রোহিত আরও বলেন, "অনেকেই অক্ষরের ইনিংস নিয়ে কথা বলেন না, কিন্তু ওটাই গেম-চেঞ্জার ছিল। ওই সময়ে ৪৭ রান খুবই মূল্যবান ছিল। আর একজন ব্যাটার দরকার ছিল যিনি গোটা ইনিংস ধরে খেলবেন — বিরাট সেটা অসাধারণভাবে করেছে।"

শেষ পর্যন্ত ভারত এক অবিশ্বাস্য জয় তুলে নেয়। শেষ ৩০ বলে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল মাত্র ৩০ রান, কিন্তু বুমরাহ, অর্শদীপ সিং এবং হার্দিক পান্ডিয়ার দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভারত জয় ছিনিয়ে আনে।

"এই জয় আমাদের সবার জন্য ভীষণ আবেগের ছিল। আমরা আগেও বারবার হেরে গিয়ে হতাশ হয়েছি। তাই এবার এটা স্পেশাল ছিল। আমরা প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম করেছি, প্রতিটি পরিকল্পনা নিখুঁতভাবে করেছি — শুধুমাত্র বিশ্বকাপ জেতার জন্য," বলেন ভারত অধিনায়ক।

এই ম্যাচটাই ছিল রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির টি২০ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। কোহলি ‘প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ’ হয়ে মাঠ ছাড়েন — এক কিংবদন্তির শেষটা, আরেক কিংবদন্তিকে জয়ে পৌঁছে দিয়ে।