Photo- X

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ শ্রীলঙ্কায় নতুন বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ইনিংস ও ৭৮ রানে পরাজয়ের পর বাংলাদেশ টেস্ট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত শনিবার ঘোষণা করলেন যে তিনি টেস্ট নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।

"আমি আর টেস্ট ফরম্যাটে অধিনায়ক থাকতে চাই না," ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন। তিনি যোগ করেন, এটি সিরিজে পরাজয়ের কোনো আবেগতাড়িত প্রতিক্রিয়া নয়।

প্রথম টেস্টে গলে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে শান্ত দুর্দান্ত পারফর্ম করে দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন, যা তাকে বাংলাদেশের মাত্র চতুর্থ অধিনায়ক হিসেবে একটি টেস্ট ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরির রেকর্ডে পৌঁছে দেয়। এছাড়াও, তিনি এশিয়ার অন্যতম ব্যাটার হিসেবে একাধিকবার টেস্টে এই কীর্তি অর্জন করলেন। দুই টেস্টে মোট ৩০০ রান করে তিনি সিরিজে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।

দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে তোলে ২৪৭ রান। জবাবে শ্রীলঙ্কা ওপেনার পাথুম নিসাঙ্কার ১৫৮ রানের ইনিংসে ভর করে ৪৫৮ রান তোলে। এরপর চতুর্থ দিনের সকালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস ১৩৩ রানে গুটিয়ে দেন বাঁহাতি স্পিনার প্রভাত জয়াসুরিয়া, যিনি পাঁচ উইকেট নেন।

শান্ত বলেন, “এটা ব্যক্তিগত কোনো ব্যাপার না। আমি এই সিদ্ধান্তটা দলের ভালোর জন্য নিয়েছি। আমার মনে হয়, এই সিদ্ধান্ত দলের উপকারে আসবে। আমি ড্রেসিংরুমের একজন সদস্য হিসেবে এটা উপলব্ধি করেছি যে তিন ফরম্যাটে তিনজন আলাদা অধিনায়ক থাকাটা দলকে বিভ্রান্ত করতে পারে। আমি জানি না বোর্ড কী সিদ্ধান্ত নেবে, তবে আমি তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করব। কিন্তু এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।”

তিনি আরও বলেন, “আমি চাই না কেউ ভাবুক এটা কোনো আবেগের প্রতিক্রিয়া বা আমি হতাশ হয়ে এমন করেছি। এটা সম্পূর্ণ দলের স্বার্থে করা সিদ্ধান্ত।”

২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে শান্ত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন ১৪টি টেস্টে। তার অধিনায়কত্বে দল চারটি ম্যাচ জেতে, যার মধ্যে পাকিস্তানে আগস্ট ২০২৪ সালে দুটি গুরুত্বপূর্ণ জয় ছিল। নয়টি ম্যাচে হার এবং একটি ড্র (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) থাকলেও, ব্যাটার হিসেবে শান্তর পারফরম্যান্স উন্নত হয়। অধিনায়ক হিসেবে তার গড় দাঁড়ায় ৩৬.২৪, যা অধিনায়কত্বের আগের ২৯.৮৩ থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। বিশেষ করে দলের চারটি জয়ের ম্যাচে শান্তর ব্যাটিং গড় ছিল ৩৭.১৬।

নাজমুল হোসেন শান্তর এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে নেতৃত্বে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে যেখানে প্রতিটি ফরম্যাটে আলাদা অধিনায়ক রাখা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এই পদত্যাগকে কীভাবে গ্রহণ করে এবং কে হবেন নতুন টেস্ট অধিনায়ক।