মা রাস্তায় সবজি বেঁচছেন, মেয়ে মুমতাজ হকি বিশ্বকাপে ভারতকে জিতিয়েই চলেছেন

এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্ক : ভারতীয় ক্রীড়ায় এমন অনেক কাহিনী থাকে, যা আমাদের প্রতিদিন অনুপ্রাণিত করে। এমনই এক কাহিনী হল তরুণী হকি খেলোয়াড় মুমতাজ খানের। চলতি জুনিয়র হকি বিশ্বকাপে শেষ চারে পৌঁছেছে ভারতীয় মহিলা দল। আর এই জায়গায় পৌঁছনোতে বড় অবদান রয়েছে ১৯ বছরের মুমতাজের।
চলতি বিশ্বকাপে ছয় গোল করেছেন মুমতাজ, কোয়ার্টার ফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে গোল করে ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনি। অথচ মেয়ের এই দুর্দান্ত খেলা দেখতেই পারেননি মা কাইসার জাহান।
কিন্তু কেন? লখনউয়ের তোপখানা বাজারের ভিড় রাস্তার এক গলিতে সবজি গাড়ি নিয়ে বসেন কাইসার। শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রুমে মেয়ে মুমতাজ যখন দুর্দান্ত খেলছিল, সেই সময় শুক্রবারের নামাজের ভিড়ে প্রচন্ড ব্যস্ত ছিলেন মা সবজি বেঁচতে গিয়ে।
এই নিয়ে এক সর্বভারতীয় পত্রিকায় মা কাইসার বলেন, "সেই সময়টা আমার জন্য প্রচন্ড ব্যস্ততার ছিল। আমার খুব ভালো লাগত ওকে গোল করতে দেখতে, কিন্তু আমারও তো অন্নসংস্থান করতে হবে। আমি নিশ্চিত অদূর ভবিষ্যতে আরও অনেক সুযোগ আসবে ওকে দেখার জন্য।"
শুক্রবার যখন মা কাজ করছিল, তখন মুমতাজের পাঁচ বোনেরা মোবাইল স্ক্রিনে ম্যাচের উপর নজর রাখছিল। আর বাবা হাফিজ তখন মসজিদে প্রার্থনা করছিলেন।
মেয়ের এই দুর্দান্ত খেলা নিয়ে গর্বিত দিদি ফারাহ বলেছেন, "আমাদের অনুভূতিটা খুব কঠিন ব্যাখ্যা করা। এমন সময় ছিল যখন আমাদের কিছুই ছিল না, যখন কিছু মানুষ আমার পরিবারকে দুষত এক মেয়েকে খেলায় পাঠানোর জন্য।" এদিকে কাইসার যোগ করেন, "আমরা সেই সকল মন্তব্যকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু আজ, মনে হচ্ছে যেন মুমতাজ তাদের সকলকে যোগ্য জবাব দিয়েছে।"
সব মিলিয়ে, লখনউয়ের ছোট্ট গলি থেকে আজ বিশ্বমঞ্চের রাজপথে এসে উঠেছেন মুমতাজ, আর এই সাফল্যের পিছনে পরিবারের আত্মত্যাগ ও ধৈর্য্য অবশ্যই রয়েছে।