স্বস্তি ফিরল ইস্টবেঙ্গলে, ডার্বির আগে দৃষ্টিনন্দন ফুটবল লাল হলুদের

ইস্টবেঙ্গল এফসি- ৩ (ক্লেইটন, কিরিয়াকোউ, ডোহার্টি)
নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড-১ (ডার্বিশায়ার)
এক্সট্রা টাইম ওয়েব ডেস্কঃ আইএসএলে টানা ১০ ম্যাচ জয়হীন ছিল লাল হলুদ ব্রিগেড। এই মরশুমের প্রথম দুই ম্যাচেও আসেনি কোনো পয়েন্ট। ইস্টবেঙ্গল সদস্য সমর্থকেরাও হারাচ্ছিলেন ধৈর্য্য, কমছিল ভরসা। ডার্বি ম্যাচের আগে এই ম্যাচই ছিল প্রশিক্ষক কনস্ট্যানটাইনের কাছে দল গুছিয়ে নেওয়ার শেষ সুযোগ। কলকাতায় থাকাকালিন তিনি জানিয়েছিলেন প্রস্তুতির জন্য তার দল কঠিন অনুশীলন করেছে। গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে আজ খেলা দেখতে যাওয়া লাল হলুদ সমর্থকদের এবার আর শুণ্য হাতে ফিরতে হল না।
প্রথমার্ধে আক্রমণ প্রতিআক্রমণে দুই দলের রক্ষণ ভাগকে থাকতে হয়েছে সদা সচেতন। দুই দলের ফুটবলাররাই তাদের অর্ধে বল ধরে প্রতিআক্রমণে ওঠার চেষ্টা করে। একদিকে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ ভাগ দুই প্রান্ত থেকে বল নিয়ে দ্রুত আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের বক্সে ক্রস করার চেষ্টা করে। অন্যদিকে নর্থ ইস্ট দল উইং থেকে আক্রমণের পাশাপাশি লং বলে গোলের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে লাল হলুদ ব্রিগেডের আক্রমণগুলি অনেক বেশি ইতিবাচক হয়। বেশ কিছু গোলমুখি সুযোগও তৈরি করেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। অন্যদিকে নর্থ ইস্টের বেশির ভাগ আক্রমণই নষ্ট হয়ে যায় সঠিক লং বল এবং থ্রু পাসের অভাবে।
ম্যাচের ১১ মিনিটে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের রক্ষণ ভাগের ভুলে ইস্টবেঙ্গল ফুটবলার ক্লেইটন সিলভা বল পেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত শটে এক গোলে এগিয়ে দেয় লাল হলুদ ব্রিগেডকে। নর্থ ইস্ট গোলরক্ষক অরিন্দম প্রথম বারপোস্ট থেকে গোল হজম করেন। এরপর বেশ কিছু সুযোগ তৈরী হলেও গোল করতে ব্যর্থ হয় নর্থ ইস্ট। যদিও প্রথমার্ধের শেষ মুহুর্তে সমতায় ফেরার খুব কাছাকাছি পৌছে যায় তারা। ৪৫ মিনিটের মাথায় প্রায় ফাঁকা গোলে বল ঠেলতে ব্যর্থ হন নর্থ ইস্ট স্ট্রাইকার ডার্বিশায়ার। প্রথমার্ধের শেষে স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের দল ১-০ গোলে এগিয়ে থাকে। দল এগিয়ে থাকলেও স্টিফেন ছিলেন যথেষ্ট গম্ভীর।
যদিও দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম পাঁচ মিনিটেই হাসি ফোটে লাল হলুদ হেড স্যারের মুখে। বা প্রান্ত থেকে খেলা পরিবর্তন করে বল আসে ডান প্রান্তে অপেক্ষা করা সুহেরের কাছে। সুহেরের সাজিয়ে দেওয়া বল থেকে দুরপাল্লার শটে গোল করে যান ইস্টবেঙ্গল মিডফিল্ডার কিরিয়াকোউ। এবারেও প্রথম পোস্ট থেকেই গোল হজম করেন অরিন্দম। গোলের পর গোলদাতা কিরিয়াকোউ এবং প্রশিক্ষক কনস্ট্যানটাইনের মুখ ভরা হাসি বুঝিয়ে দেয় শেষ এক সপ্তাহের কঠিন অনুশীলন কাজে আসছে ধীরে ধীরে। স্বস্তি ফিরছে লাল হলুদ সমর্থকদের মধ্যেও। ৫৭ মিনিটে তিন গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এলেও সেম্বোইয়ের গোল অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়।
এরপর দুই দলই বেশকিছু সুযোগ তৈরী করলেও তা গোলে পরিবর্তন করতে পারেনি। ম্যাচের ৮৫ মিনিটের মাথায় ডোহার্টির শট গোলরক্ষক অরিন্দমকে পরাস্ত করে জালে বল জড়িয়ে যেতেই, বাংলা থেকে যাওয়া হাজার হাজার লাল হলুদ সমর্থক ইস্টবেঙ্গল-ইস্টবেঙ্গল নামে গর্জে ওঠে। যদিও শেষ পর্যন্ত ক্লিন শিট ধরে রাখতে পারেনি স্টিফেনের দল। ৯২ মিনিটে কর্ণার থেকে গোল করে যান নর্থইস্টের ডার্বিশায়ার। ৩-১ গোলে জিতে ম্যাচ শেষ করে ক্লেইটন, ডোহার্টির দল। তবে গোল না পেলেও আজকের খেলায় আলাদা ভাবে নজর কেড়েছেন লাল হলুদ ফুটবলার ভিপি সুহের।
নর্থইস্টের বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের এই জয় কলকাতা ডার্বির আগে লাল হলুদ দলকে তাদের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে অনেকটাই সাহায্য করবে।